এবার সচিবের গাড়ি পরিচয় দেয়া সরকারি মালিকানাধীন পাজেরো জিপ থেকে ইয়াবা জব্দ করেছে কক্সবাজার জেলা ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি)। দুই দরজার পার্টসে বিশেষ কৌশলে রাখা ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ গাড়িটিও জব্দ করেছে তারা। এসময় গাড়িতে থাকা দুই যুবককে আটক করা হয়। মঙ্গলবার রাত ৪টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টের পূর্বের মোড় এলাকা থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।আটক যুবকরা হলেন টেকনাফ পৌর এলাকার কুলালপাড়ার মুহাম্মদ তৈয়বের ছেলে তৌহিদুর রহমান তুহিন (২২) ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার বৈরাগ এলাকার মৃত আবদু সাত্তারের ছেলে সালেহ জাহাঙ্গীর (৩১)। তবে এসব ইয়াবার মালিক টেকনাফের নাজিরপাড়ার মুহাম্মদ ছিদ্দিকের ছেলে রবিউল বলে দাবি করেছেন তুহিন। তার কথায় তিনি চট্টগ্রাম পর্যন্ত যেতে গাড়িতে ওঠেন বলে জানিয়েছেন তিনি। কক্সবাজার জেলা ডিবি পুলিশের ওসি এএস থোয়াই বলেন, একটি সরকারি পাজেরোতে ইয়াবা পাচারের খবর পেয়ে এসআই মহসীন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ দল কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টের পূর্বের মোড় এলাকায় অবস্থান নেয়। ভিআইপি গাড়ির সাইরেন বাজিয়ে আসা কক্সবাজারমুখী ঢাকা-মেট্রো-ঘ-১৪-০০৯৪ নাম্বারের পাজেরোটি থামানো হয়। গাড়িতে থাকা যুবকরা পাজেরোটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের এবং তারা বেড়াতে এসেছিলেন বলে দাবি করে। সন্দেহ হওয়ায় গাড়িটি ব্যাপক তল্লাশি চালানোর পর দরজার মাঝখানে পার্টস খুলে বিশেষ কায়দায় রাখা ৬ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করার পর তাদেরসহ গাড়িটি ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। আটক চট্টগ্রামের আনোয়ারার সালেহ জাহাঙ্গীর জানান, এক বন্ধুর অনুরোধে তিনি সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম শহরের মুরাদপুর এলাকা থেকে গাড়িটিতে চালক হিসেবে ওঠেন। রাত ৮টার দিকে পৌঁছান টেকনাফ। সেখানে রবিউলের লোকজন তার সঙ্গে দেখা করেন এবং তুহিনসহ তারা রাতেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।জাহাঙ্গীর আরও বলেন, সাইরেন বাজিয়ে আসায় সরকারি গাড়ি হিসেবে কোনো চেকপোস্টই তাদের থামার নির্দেশ দেয়নি। কিন্তু ইয়াবার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তবে গাড়িটি মাসে দু-একবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আনা হয় বলে জানান তিনি। তুহিন বলেন, পার্শ্ববর্তী এলাকার রবিউলের কথায় তিনি গাড়িতে ওঠেন। ইয়াবাগুলো রবিউলের।বিআরটিএ কক্সবাজার অফিসের মাধ্যমে জানা যায়, পাজেরোটি বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংক লিমিটেডের, ১৫ পুরানা পল্টন, ঢাকার নামে নিবন্ধনকৃত। এটি জানার পর থেকে পুলিশ গাড়ির মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে সন্ধ্যায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ভাড়ায় কিংবা কমিশনে গাড়িটি ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহার হয়। এর মূল হোতাকে খুঁজতে কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে কয়েকদিন আগে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি নেজাম উদ্দিন ঢাকায় এক লাখ পিস ইয়াবাসহ আটকের পর নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে কক্সবাজারে। এ রেশ না কাটতেই ইয়াবা পরিবহনে সরকারি গাড়ি ব্যবহারের ঘটনা মানুষকে হতবাক করেছে। তুঙ্গে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/এমএস
Advertisement