বিনোদন

প্রযোজকদের ইতিবাচক নেতৃত্বের শুরু করতে চাই : আরশাদ আদনান

একটা সময় সবাই সাধারণত ক্যামেরার সামনের মানুষদেরকেই চিনতেন। তাদেরকেই তারকা হিসেবে ভাবা হতো। সময়ের আধুনিকতায় আজকাল ক্যামেরার পেছনের মানুষ- যেমন পরিচালক, ক্যামেরাম্যান, মেকআপম্যানরাও উঠে আসছেন আলোচনায়। তবে এখনও সেই ছোঁয়াটা খুব করে রাঙিয়ে যেতে পারেনি কোনো নির্মাণের সঙ্গে জড়িত অন্যতম একটি মাধ্যমকে। সেটি হলো ছবির প্রযোজক বা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। সবার থেকে আড়ালে থাকায় বরাবরই প্রযোজকরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আলোচনার বাইরে থাকেন। অথচ তাদের ইচ্ছে বা বিনিয়োগেই সমৃদ্ধ হয় নাটক-চলচ্চিত্রের আঙিনা। তবে সবকিছু বদলে যাওয়ার এই প্রচারণার যুগে গেল কয়েক বছরে বেশ ক’জন মানুষ প্রযোজক হিসেবে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম নাম আরশাদ আদনান। একজন প্রযোজক নেতা হিসেবেও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার। আগামী ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে যাচ্ছেন তিনি। তারুণ্যকে প্রাধান্য দেয়া, সৃষ্টিশীলতার বিকাশ ও ইতিবাচক ভাবনাকে পূঁজি করে পথচলা এই প্রযোজক নিজের নামটির পাশাপাশি তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ভার্সেটাইল মিডিয়া’কেও বেশ আলোচিত নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এদেশীয় শোবিজে। কয়েক বছর ধরেই নাটক-টেলিছবি ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রতিষ্ঠানটি সাফল্যের ছাপ রেখে চলেছে।আগামী ২৪ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে আরশাদ আদনানের ভার্সেটাইল মিডিয়ার ব্যানারে নির্মিত ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ ছবিটি। হিমেল আশরাফ পরিচালিত ও আঁচল-বাপ্পী অভিনীত এই ছবিটি নিয়ে এবং ১৯ মার্চের নির্বাচন নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন আরশাদ আদনান জাগো নিউজ : অনেকদিন পর আপনার প্রযোজনায় ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। বাপ্পী-আঁচল জুটির মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?আ. আদনান : সবার মতো আমারও অনেক প্রত্যাশা। বিশেষ করে এই ছবিটি নিয়ে আমার অনেক আশা। এর গল্প, সংলাপ, নির্মাণের মুন্সিয়ানা, লোকেশন, গান, নৃত্য, শিল্পীদের অভিনয় মুগ্ধ করে যাবে দর্শকের মন। এই ছবিটি আমার একটা আন্দোলনও বলতে পারেন। আজকাল বেশিরভাগই নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই নকল গল্পের দিকে ঝুঁকেছে। মৌলিকত্ব বলে কিছুই পাচ্ছেন না দর্শক। কিন্তু আমাদের ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ সম্পূর্ণ মৌলিক একটি গল্প। প্রয়াত চিত্রনাট্যকার ফারুক হোসেন এটি লিখেছেন। আমরা ছবিটির স্লোগান ঠিক করেছি- আমাদের গল্পে আমাদের সিনেমা। আশা করছি মৌলিক গল্পের ছবিটি ভালো ব্যবসা করবে। জাগো নিউজ : প্রাথমিকভাবে কয়টি হলে মুক্তি পাবে ছবিটি?আ. আদনান : আমাদের দেশে প্রায় তিন শ’র মতো হল আছে। তারমধ্যে চলচ্চিত্রের জন্য আশির্বাদস্বরুপ ৪০টির মতো হল আছে। যেখানে সবসময়ই ভালো ব্যবসা হয়। সেগুলোসহ শতাধিক হলে ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা চলছে। মানুষ এখন মৌলিক গল্প চায়। জীবনের কথা শুনতে চায়। সেই দিক থেকে ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ বিনোদনের খোরাক দেবে।জাগো নিউজ : আপনার প্রযোজিত নতুন ছবি ‘ময়না’র শুটিংয়ের কী খবর?আ. আদনান : বাংলাদেশের মাহিয়া মাহি ও কলকাতার সোহমকে নিয়ে এটি হবে ধামাক্কা একটি চলচ্চিত্র। বিগ বাজেটে, দুই দেশের শিল্পীদের নিয়ে নির্মিত হবে। স্বাভাবিকভাবেই কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। সেগুলো গুছিয়ে নিচ্ছেন পরিচালক অনন্য মামুন। সামনে আমার একটি নির্বাচন আছে। এরপর সবাইকে আনুষ্ঠানকিভাবে জানিয়ে শুরু হবে ‘ময়না’র শুটিং।  জাগো নিউজ : টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। কোন প্রত্যাশা নিয়ে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন?আ. আদনান : আমি পুরোদস্তুর একজন প্রফেশনাল প্রযোজক। আমাদের এই সংগঠন নানা কারণে আজ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। নিজেদের এই প্রিয় সংগঠনকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্যই সাধারণ প্রযোজকদের অনুরোধ এবং আহ্বানে আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আমি চাই প্রযোজকদের স্বার্থ রক্ষা করতে। নির্বাচিত হলে সেটাই হবে আমার প্রথম কাজ। আশা করি সাধারণ প্রযোজকরা বিষয়টি বোঝেন এবং সেই কারণেই তারা আমাকে নির্বাচনে জয়ী করবেন। জাগো নিউজ : নির্বাচিত হলে সংগঠন নিয়ে আপনার পরিকল্পনা ও ভাবনার কথা জানতে চাই....আ. আদনান : আমাদের এই এসোসিয়েশনের কোন নিবন্ধন নেই। জয়ী হলে আমি এসোসিয়েশনকে এফবিসিসিআইয়ের আওতাধীন একটি বাণিজ্যিক সংগঠন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করব। পাশাপাশি টিভি চ্যানেল মালিকদের সঙ্গে শিল্পী সংঘ, ডিরেক্টর গিল্ড ও প্রডিউসারস এসোসিয়েশনকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করব। যে চুক্তি অনুযায়ী টিভি চ্যানেলেগুলোর সাথে চুক্তি হবে, শুধু এ তিন সংগঠনের অন্তর্ভুক্তদের নাটক, অনুষ্ঠান টিভিতে জমা হবে। এর বাইরে কেউ কিছু নির্মাণ করলে সেটা টিভি কর্তৃপক্ষ জমা নেবেন না। তাহলেই আমরা মানসম্মত কিছু কাজ দর্শকদের উপহার দিতে পারব। পাশাপাশি দর্শকরাও তাদের চাহিদা অনুযায়ী মানসম্মত অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন বলেই আমার বিশ্বাস। তরুণদের মূল্যায়ণ করতে হবে। পাশাপাশি সিনিয়রদের জায়গাটিকেও সম্মানের চোখে রাখতে হবে। নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, রেষারেষিতে টেলিভিশন মিডিয়ার এখন করুণ অবস্থা। এর উত্তরণের চেষ্টা করতে চাই। ছোট পর্দার নির্মাণের বাজেট বাড়ানোর জন্য নানা পরিকল্পনাও আছে আমার। আমি বিশ্বাস করি, ভালো নির্মাণই এই শিল্পকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এর জন্য চাই সঠিক নেতৃত্ব। সবার সহযোগিতা, সমর্থন ও ভালোবাসায় সেই ইতিবাচক নেতৃত্বের শুরুটা আমি করতে চাই।এলএ

Advertisement