আন্তর্জাতিক

সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে হেনস্তার শিকার রোহিঙ্গা নারী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবরে বেশ কিছু গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়েছে সেনারা। খবর বিবিসির। রাখাইনে ধর্ষণের শিকার এক নারী ধর্ষণের অভিযোগ করার পর দেশটির নেত্রী অং সান সুচির দপ্তর থেকে বলা হয়েছিল তিনি মিথ্যা বলছেন। শুধু তাই নয় প্রতিশোধপরায়ণ সেনারা তাকে হেনস্থা করেছে।উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারের পিয়াউং পায়েক গ্রামে জামালিদা নামের ওই নারীর স্বামীকে সৈন্যরা গুলি করে হত্যা করে। জামালিদা তার দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান এবং দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন সেনাবাহিনী গ্রামের বহু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। পাঁচদিন পরে কয়েকজন প্রতিবেশীকে নিয়ে তিনি ফিরে আসেন এবং দেখেন তার বাড়ি ও জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। যে অল্প কয়েকটি বাড়ি অক্ষত ছিল সেখানে তারা একসঙ্গে আশ্রয় নেন। কিন্তু পরের দিন ভোরে সৈন্যরা ফিরে আসে। সেনারা ৩০ জন নারীকে বেছে নেন। এদের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ১২ থেকে ১৫য়ের মধ্যে।তিনজন সৈন্য প্রায় এক ঘন্টা ধরে জামালিদার ওপর ধর্ষণ ও অত্যাচার চালায়। মিয়ানমারে মানবাধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালিয়ে আসা নেত্রী অং সান সুচি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন সৈন্যরা আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করছে। একই সঙ্গে নিরপেক্ষ সাংবাদিক বা পর্যবেক্ষকদেরও সেখানে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক এবং তদন্তকারীদের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পর তাকে হেনস্তা করা হয়েছে। অং সান সুচির ফেসবুক পেজে বড় ছবির ব্যানারে জামালিদার কাহিনীকে মিথ্যাচারের বড় উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরে হয়। ওই ঘটনার পর সৈন্যরা আবারো জামালিদাকে খুঁজতে এসেছিল। ভয়ে সে অন্য গ্রামে পালিয়ে গিয়েছিল। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর জামালিদা বুঝতে পারে সেখানেও সে নিরাপদ নয়।তিনি বলেন, ‘সৈন্যরা সব নারীদের উঠোনে জড়ো করেছিল আমাকে খুঁজে বের করার জন্য। আমার ছবি দেখাচ্ছিল সবাইকে। ভয়ে আমি জঙ্গলে লুকিয়েছিলাম।’ দিনের পর দিন পালিয়ে বেড়ানো সহ্য করতে না পেরে জামালিদা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যান।টিটিএন/এমএস

Advertisement