আচ্ছা এখন যদি সনাথ জয়সুরিয়া টি-টোয়েন্টি যুগে খেলতেন, তাহলে কেমন হতো? এখন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যাদের জয় জয়কার- সেই ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, এ বি ডিভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি কক আর ক্রিস গেইলদের টপকে হয়ত জয়সুরিয়া হতেন ফাস্ট চয়েজ। তাকে ভাবা হতো সবচেয়ে বিপজ্জনক উইলোবাজ। ‘মাস্টার্স ব্লাস্টার্স’- বিশেষণটা তার নামের পাশেই মানাতো বেশি। একটুও বাড়িয়ে বলা নয়। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে যিনি, সেই ১৯৯৬ সালে প্রায় ৩০০ স্ট্রাইকরেটে মাত্র ১৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেন, তিনি ক্যারিয়ারের স্বর্ণ সময়ে ২০ ওভারের ফরম্যাটে নিয়মিত খেলার সুযোগ পেলে নির্ঘাত বাজিমাত করতেন। হয়ত তিনিই হতেন সেরাদের সেরা; কিন্তু নির্মম সত্য হলো, সেই জয়সুরিয়া ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে নিয়মিত টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পেয়েছেন কম। ২০১১ সালের ২৫ জুন ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের সাথে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার দিয়ে ইতি টানেন। ক্রিকেটের যে ফরম্যাটটি হয়ত হতে পারতো তার নিজের সেরা ফরম্যাট, যে ২০ ওভারের ক্রিকেটে তিনি হয়ত মাঠ মাতাতেন সবচেয়ে বেশি। এই আইপিএল তার ক্যারিয়ারের সূর্য্য যখন মধ্য আকাশে তখন আইপিএলের বাজার এমন জমাজমাট থাকলে নির্ঘাত আইপিএল আর বিগ ব্যাশে জয়সুরিয়া প্রতিবার নিলামে চড়া মূল্যে বিক্রি হতেন। যার ব্যাট হয়ত টি টুয়েন্টিতে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটাতো গন্ডায় গন্ডায়। সেই জয়সুরিয়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন মোটে ৩১টি। তাও ক্যারিয়ারের শেষ বেলায়। তাই তো পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে অন্য জয়সুরিয়াকে : ৩১ ম্যাচ, ৩০ বার ব্যাট করে মাত্র চারটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৩.২৯ গড় আর ১২৯.১৫ স্ট্রাইক রেটে ৬২৯ রান মাত্র। তার জায়গায় যে কেউ আফসোসে পুড়তেন। অনুশোচনায় দগ্ধ হতেন; কিন্তু অবাক করা সত্য, জয়সুরিয়ার? আজ যখন প্রশ্ন করা হলো, আপনি তো দারুন মেরে খেলতে পারতেন। দীর্ঘ দিন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সবচেয়ে মারকুটে ও বিপজ্জনক উইলোবাজ ছিলেন; কিন্তু টি টুয়েন্টি যখন ফুলে ফেঁপে উঠলো, ঠিক ওই সময় আপনার ক্যারিয়ারের ইতি ঘটলো। এই যে টি টুয়েন্টি ফরম্যাটে খেলার সুযোগ কম পাওয়া? এ নিয়ে কোন আক্ষেপ-অনুশোচনা জয়সুরিয়ার এ নিয়ে বিকার নেই। তিনি নির্বিকার। পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘আমার কোনই আক্ষেপ নেই। আমি আসলে ওভাবে চিন্তাও করিনি কখনো। তিনটি তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট। টি-টোয়েন্টি। ওয়ানডে আর টেস্ট। হ্যাঁ এটা সত্য যে, আজকাল সবাই টি-টোয়েন্টি দেখে মজা পান। উপভোগ করেন। আমিও মজা পাই। তারপরও টেস্ট ক্রিকেটই আমার প্রথম পছন্দ। আমার ভাল লাগা। আমার কাছে সেটাই আসল ক্রিকেট। আমার স্থির বিশ্বাস, ক্রিকেটের সত্যিকার চিরায়ত ধারাই হলো টেস্ট। এবং এটা বহাল থাকবে।’এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement