খেলাধুলা

ওই শটটা খেলা উচিত হয়নি : সৌম্য

আগের দিনই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ভুল পথে হেঁটেছিলেন। লঙ্কান বাঁহাতি চায়নাম্যান লক্ষণ সান্দাকানের লেগস্ট্যাম্পের বাইরে পিচ পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বলকে অযথা তাড়া করলেন। এখানেই শেষ নয়। রান নেয়ার জন্যও দৌড়াতে শুরু করলেন। তামিম বুঝতে পারলেন না যে, উইকেটরক্ষক নিরোশান সান্দাকানের হাতেই ছিল বল। আর তাতে কী হলো? রান আউটে কাটা পড়ে তামিম (৫৭) ফিরে গেলেন সাজঘরে। তামিমের পর মুমিনুল হকও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ৭ রানেই থামলেন মুমিনুল।প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১৩৩ রান। লিড নেয়া তো দূরের কথা। ফলোঅন এড়ানোরও তো তখন অনেক দূরের পথ। সৌম্য সরকার প্রথম দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ৬৬ রানে। তার সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম (১)। দ্বিতীয় দিন সৌম্য-মুশফিকের ওপর অনেক দায়িত্বই ছিল। তারা যদি দিনের শুরুটা ভালো করতে পারতেন; দলও থাকতো আরও ভালো অবস্থানে। মুশফিক খেললেন অধিনায়কের মতোই। বাংলাদেশের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৮৫ রানের মূল্যবান এক ইনিংস খেলেছেন টাইগার দলনেতা। এতে বাংলাদেশও ফলোঅন এড়ায়। শেষ পর্যন্ত ৩১২ রানে অলআউট সফরকারীরা।কিন্তু সৌম্যর বিদায় তো দিনের শুরুর দিকেই (দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় ওভারের (৪৯তম) শেষ বলে)। লঙ্কান পেসার সুরাঙ্গা লাকমল বাউন্সার ছুড়লেন সৌম্যকে। লেগ-মিডল স্ট্যাম্পে পিচ পড়া ওই ডেলিভারি খানিকটা কৌণিকভাবে সৌম্যের ডান পাজরের সামান্য বাইরে দিয়ে যাচ্ছিল। ওয়ানডে নয় যে রান করার তাড়া আছে। টেস্টে সাধারণত এসব ডেলিভারি সবাই ছেড়ে দেন। কারণ ওই একটি ডেলিভারি ছেড়ে দিলে কোনোই সমস্যা হবে না। আউট হওয়ার সামান্যতম সম্ভাবনাও থাকবে না। কিন্তু অত চিন্তা-ভাবনা না করে সৌম্য ব্যাট চালিয়ে দিলেন। পাজর ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে পুল খেলতে গেলে শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখা কঠিন। তার অর্থ- ওই ধরনের পুল শটের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা কষ্ট। কিন্তু তাতে কী? সৌম্যর যে নিজের সামর্থ্যর প্রতি অনেক বেশি আস্থা! সে অতি আত্মবিশ্বাস ও আস্থা যে বিপদের কারণ হতে পারে, তা না বুঝে চালিয়ে দিলেন। পরিণতি যা হওয়ার হলো ঠিক তা-ই। ফাইন লেগে ক্যাচ আউট। সৌম্য থামেন ৭১ রানে। বাংলাদেশের আরেকটি উইকেট পতন। দ্বিতীয় দিনে টাইগারদের বিপদের শুরু তখনই!দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন সৌম্য সরকার। সেখানে ভুল স্বীকার করলেন। জানালেন, যে শটটি খেলে আউট হলেন; তা খেলা ঠিক হয়নি। সৌম্যর ভাষায়, ‘পেস বলে আজকে আমার দিনের প্রথম বল ছিল। আমার জন্য ওই শটটা খেলা উচিত হয়নি। আমি যদি আরেকটু সময় নিয়ে এই শট খেলতাম, তাহলে হয়তো কানেক্ট হতো। প্রথম বল এজন্যই হয়তো কানেক্ট হয়নি। এটা আমার ভুল ছিল। অবশ্যই ওই শট না খেললে আমার জন্য তো ভালো হতোই; দলের জন্য আরও বেশি ভালো হতো।’এর আগে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও তা আদায় করে নিতে পারেননি। ৮৬ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। গল টেস্টেও সুযোগ এসেছিল। এ যাত্রায় তা কাজে লাগাতে পারেননি। তাই তো সৌম্যর আক্ষেপ, ‘অবশ্যই তিন ম্যাচের মধ্যে দুইটা সুযোগ আসছে। চেষ্টা করছি বড় ইনিংস খেলার জন্য। আজকের (বৃহস্পতিবার) দিনটা নতুন করে শুরু করতে হয়েছে। এজন্য হয়তো মনোযোগটা প্রথম দিকে গতকাল যেমন ছিল তেমন ছিল না। এজন্য আমি পুরোটা শেষ করে আসতে পারিনি। পরবর্তীতে কোনো সময় যদি ৭০/৮০ পর্যন্ত যেতে পারি অবশ্যই শেষ করে আসবো।’এনইউ/পিআর

Advertisement