দেশজুড়ে

বিরল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করলো ভারতীয় ট্রেন

প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় পাথরবাহী একটি ট্রেন দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত, নেপাল, ভুটান এবং মায়ানমারে রেলপথে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের চুক্তি অনুযায়ী ট্রেনটি প্রবেশ করে।ডুয়েলগেজ রেল পথে পণ্য আমদানি-রফতানি করা গেলে একদিকে যেমন ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে অন্যদিকে কর্মসংস্থানসহ সুযোগ-সুবিধা পাবে এলাকাবাসী। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিরল সীমান্ত দিয়ে ৪২টি পাথরবোঝাই ওয়াগন নিয়ে পণ্যবাহী ট্রেনটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ৪২টি ওয়াগনে ২ হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন পাথর ছিল। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পণ্যবোঝাই ওয়াগনগুলোকে নিয়ে আসতে বাংলাদেশ থেকে একটি ইঞ্জিন ভারতে প্রবেশ করে। জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারত এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথে নেপাল, ভারত এবং মিয়ানমায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে মধ্যে সীমিত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রেন চলতো বিরল রেলপথ দিয়ে। ২০০৬ সালে ভারত রাধিকাপুর পযর্ন্ত ব্রডগেজ রেলপথ স্থাপন করায় রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে ওই রুটে। দীর্ঘ ১১ বছর পর বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ভারতের উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর স্টেশন পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ সম্প্রসারণ করে। দিনাজপুর রেলওয়ে বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, গত বছরে বাংলাদেশের পার্বতীপুর থেকে ভারতের রাধিকাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত মিটার গেজকে ডুয়েল গেজে রুপান্তরিত করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে এই কাজ সম্পন্ন করা হয়। বুধবার দুপুরে ওই রুট দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, সকাল ১১টায় দিনাজপুর থেকে একটি ইঞ্জিন ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। পরে দুপুর আড়াইটার  দিকে ওই ইঞ্জিনটি ভারতীয় পাথরবাহী ৪২টি ওয়াগন নিয়ে রাধিকাপুর সীমান্ত অতিক্রম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পণ্যবাহী ট্রেনের গার্ড আফজাল হোসেন জানান, ৪২টি ওয়াগনে ২ হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন পাথর রয়েছে। এগুলো সিরাজগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে। সকালে ইঞ্জিন নিয়ে ভারতে প্রবেশ করলেও কাষ্টমস ও বিএসএফের যাবতীয় নিয়ম-কানুন সম্পন্ন করে দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়। এদিকে, পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি স্থানীয় ও ব্যবসায়ী। তারা বলছেন, এতে করে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি তাদের দাবি অতিদ্রুত বিরল স্থলবন্দর চালু করা ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করা। দিনাজপুর রেলওয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক লুৎফর রহমান ও বিরল স্টেশন মাস্টার মাসুদ পারভেজ জানান, দীর্ঘদিন পর মিটার গেজ থেকে রূপান্তরিত ডুয়েল গেজ দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ভারত-বাংলাদেশের ট্রেনের এই রুটটি দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি শুরু হলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারও অনেক লাভবান হবে। এমদাদুল হক মিলন/এআরএ/জেআইএম

Advertisement