জাতীয়

নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে সরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে কাজ করে যাছে। ২০১১ সালে যে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে তা এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বুধবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের (ঢাকা-১৫) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এরআগে বিকেল ৩টা ২২ মিনিটে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩, ডিএনএ আইন ২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করা হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়গুলোতে জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে।’ ‘নারীর উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ গভীর উপলব্ধি থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর নারী সমাজের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেন। তিনি আমাদের উপহার দেন ‘৭২’ এর অনন্য সংবিধান। যা কেবল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির কথাই বলেনি, অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে নারী-পুরুষের সমতাও সমুন্নত করেছে। জাতীয় সংসদে সর্বপ্রথম জাতির জনক নারীদের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষিত করেন। এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। যার ফলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের প্রথম সংসদেই নারীরা প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়।’তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখনই সরকার গঠন করেছে দেশের নারী সমাজের উন্নয়নে কাজ করেছে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পঞ্চম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নারী উন্নয়নকে যুক্ত করা হয়। ১৯৯৭ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩টি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের ২৮ মে ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৯৮ সালে নারী উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সন্তানের পরিচিতির সঙ্গে বাবার নামের পাশে মায়ের নাম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার সর্বপ্রথম সামরিক বাহিনীতে অফিসার পদে নারীদের নিয়োগ দেয়া শুরু করে। এসময় বাংলাদেশ প্রথম মহিলা সচিব নিয়োগ নেয়া হয়।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সিনিয়র সচিব, ব্যাংকিং সেক্টরে উচ্চপদ, রাষ্ট্রদূত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমরা নারীদের নিয়োগ দিয়েছি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ মোট বাজেটের ২৭.২৪ শতাংশ এবং মোট জিডিপির ৪.৭৩ শতাংশ। সব মন্ত্রণালয়ে নারী উন্নয়ন সংক্রান্ত ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।’ নারীর ক্ষমতায়নে ও জেন্ডার সমতা নির্ধারণে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৪টি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, নারীর সামর্থ্য উন্নীতকরণ, নারীর অর্থনৈতিক প্রাপ্তি বৃদ্ধিকরণ, নারীর মত প্রকাশের মাধ্যম সম্প্রসারণ এবং নারীর উন্নয়নে একটি সক্রিয় পরিবেশ সৃষ্টিকরণই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। তিনি বলেন, ‘জাতীসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নারী উন্নয়নে আমাদের ভূয়সী প্রশংসা করছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৬’ অনুযায়ী ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭২তম, যা দক্ষিণ এশিয়ায় যে কোনো দেশের চাইতে ভাল অবস্থান নির্দেশ করছে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী অংশগ্রহণের মান হিসেবে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ স্থানে।’এইচএস/জেএইচ/পিআর

Advertisement