‘নারী-পুরুষ সমতায় উন্নয়নের যাত্রা, বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা।’ এই প্রতিপাদ্যের মধ্য দিয়ে সারাবিশ্বের সঙ্গে আজ বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বস্তুত বর্তমান বিশ্বে নারী-পুরুষ- এভাবে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। কবির ভাষায় `বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,/অর্ধেক তার নর’- এই কবিতার মর্মার্থ বর্তমান বাস্তবতায় আরো প্রাসঙ্গিক।আজকের দিনে নারীর জন্য একটি সুষ্ঠু বিশ্ব গড়ে তুলতে অঙ্গীকার করতে হবে। যেখানে নারীরা মর্যাদার সঙ্গে এবং সকল প্রকার ভয়-ভীতি থেকে মুক্ত হয়ে বসবাস করতে পারবে। সমাজ পরিবর্তনের প্রতিনিধি হিসেবে নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি, শিক্ষাসহ দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং তাদের ক্ষমতায়নে একসঙ্গে কাজ করাই হবে বিশ্বনেতৃবৃন্দের কর্তব্য। পাশাপাশি এক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে আন্তরিক অঙ্গীকার এবং শক্তিশালী নেতৃত্ব থাকতে হবে। এধরনের অঙ্গীকারই পারে নারী-পুরুষের একটি সমতার বিশ্ব তৈরি করতে। বাংলাদেশ নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনেকটাই এগিয়ে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেত্রী নারী সে দেশে নারীর অবস্থান কী তা সহজেই অনুমেয়। এ ছাড়া সমাজের সকল পেশার ক্ষেত্রেই নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সশ্রস্ত্রবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিভিন্ন কারিগরি ক্ষেত্রেও নারীরা উচ্চপদে আসীন রয়েছে। প্রতিটি উপজেলা পরিষদে ১ জন নির্বাচিত মহিলা ভাইস- চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তৃণমূল পর্যায়ে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে ৩৩ শতাংশ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এছাড়া সংসদেও সংরক্ষিত আসনে নারীরা নির্বাচিত হচ্ছে। নারীর স্বাস্থ্য রক্ষায়ও নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নতুন করে আইন করা হয়েছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার অনেক কমে এসেছে। নিঃসন্দেহে এটি এক স্তস্তিদায়ক অবস্থা। তবে বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্বব্যাপী এখনো নারীর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই রয়েছে নানা বৈষম্য। এ বৈষম্য কমিয়ে এনে নারী-পুরুষের সমতার বিশ্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন নারী-পুরুষের সমতার বিশ্ব ছাড়া কাঙ্খিত উন্নয়ন,শান্তি, সমৃদ্ধি অসম্ভব। এছাড়া বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়াও অলীক স্বপ্ন থেকে যাবে। এ জন্য সবার আগে পরিবর্তন আনতে হবে মানসিকতায়। এইচআর/আরআইপি
Advertisement