প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে।’তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আসুন আমরা সকলে মিলে কর্মক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় উন্নয়নের মূল ধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৭ উপলক্ষে মঙ্গলবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।”তিনি বলেন, ‘আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের অগ্রদূতদের, যাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠায় নারীর সমঅধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হয়েছে। আরো শ্রদ্ধা জানাই মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোনকে। যাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মহান স্বাধীনতা।’শেখ হাসিনা বলেন, “এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষের সমতায় উন্নয়নের যাত্রা, বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা’- যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারীকে উন্নয়নের সক্রিয় অংশীদার করা হলে আমরা একটি সমতাভিত্তিক বিশ্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হব।”তিনি বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সকল কর্মকাণ্ডে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি সকল পেশায় নারীরা নিয়োগে সমান সুযোগ পাচ্ছেন।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে বিগত আট বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি- ২০১১ প্রণয়ন করে এর বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন-১৯২৯’ এর স্থলে ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ পাশ করা হয়েছে। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০’ পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩’ ডিএনএ আইন ২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করেছি। মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করেছি। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা-তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কাঠামোতে প্রত্যক্ষ ভোটে নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোতে জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করছি।”তিনি আরো বলেন, “জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। আমরা জাতিসংঘের এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড, প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, এজেন্ট অব চেঞ্জ, শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ’সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছি। Global Gender Gap Report অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সকল দেশের ওপরে।”পরিশেষে তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৭ উদ্যাপনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।এমইউএইচ/এমএআর/এমএস
Advertisement