জাতীয়

ইসিতে পদোন্নতির জট খুলছে

নির্বাচন কমিশন (ইসি) দীর্ঘদিন পর তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের গ্রেডেশন তালিকারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ।ইসিতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় আলোচনার পর গ্রেডেশন তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। ফলে দীর্ঘদিন আটকে থাকা ইসি কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জট শিগগির খুলছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা কমিশনের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী পদোন্নতি দিতে গ্রেডেশন তালিকা প্রণয়ন করেছি। এটা ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতামত নেয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের মতামত পেলে আগামীতে গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী ইসি সচিবালয় এবং মাঠ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হবে।ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানায়, ইসির সিনিয়র ও জুনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রণয়নে গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। এখন থেকে এ তালিকা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হবে। এতে সরকারের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারি (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি) বিধিমালা, ২০১১ অনুসরন করা হয়েছে।ইসির কর্মকর্তারা আরো জানান, অতীতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি না হওয়ায় অনেক জুনিয়র অফিসার সিনিয়র হয়ে গেছেন। এমনকি চাকরিতে সিনিয়র হওয়ার পরও পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রাপ্ত জুনিয়রের অধীনে চাকরি করতে হয়েছে অনেককে। এমনকি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতামত উপেক্ষা করে জ্যেষ্ঠতার বিষয়ে কমিশন নীতিমালা প্রণয়ন করে পছন্দের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়েছে বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রথম শ্রেণির নন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদানে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করার নজির রয়েছে।নিয়ম বহির্ভূতভাবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারি (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি) বিধিমালা, ২০১২ এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠালে তা ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নাকচ হয়ে যায়। একই সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কমিশনকে জানিয়ে দেয়া হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারি (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি) বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি ১(২)মতে জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য ব্যতিত সকল শ্রেণির নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য উক্ত বিধিমালার বিধান প্রযোজ্য। সেহেতু এই বিধিমালার বাইরে পৃথক কোন বিধিমালা প্রণয়নের প্রয়োজন নেই।পরবর্তীতে কমিশনের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী তালিকা প্রণয়নে কমিশনের যুগ্ন-সচিব আইনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি আইনের নানাদিক পর্যালোচনা করে গত বছরের ডিসেম্বরে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেয়। এ নিয়ে কমিশন সচিবালয় ও মাঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে একটা দ্বন্দ দেখা দেয়। দীর্ঘদিন প্রতিবেদনটি আটকে থাকার পর বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদানে কমিটি তিনটি সুপারিশও করেন। এগুলো হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং এর অধীনস্ত মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহে কর্মরত প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য প্রস্তুতকৃত সমন্বিত জ্যেষ্ঠতা তালিকার বিষয়ে কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া, জ্যেষ্ঠতার তালিকা প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে সকল আপত্তি পাওয়া যাবে তার পর্যালোচনা ও শুনানীঅন্তে নিস্পত্তি করা এবং জ্যেষ্ঠতা তালিকার কোন আপত্তি নিষ্পত্তি করা না গেলে সেই আপত্তির বিষয়ে মতামত দেয়ার জন্য পিএসসিকে অনুরোধ জানানো।এইচএস/এআরএস/এমএস

Advertisement