জামাআতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক জোড় তাগিদ দিয়েছেন। কেননা জামাআতে নামাজ আদায়ে রয়েছে অনেকগুলো ফায়েদা। যার কিছু তুলে ধরা হলো- >> আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁট বার একত্রিত হওয়ার বিশেষ সুযোগ ও সুব্যবস্থা করেছেন জামাআতে নামাজ প্রবর্তনের মাধ্যমে। যাতে তারা পারস্পরের কুশলাদি বা খবরাখবর নিতে পারে।দুনিয়ার প্রয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে। পাশাপাশি পরস্পরের কথা ও কাজে আল্লাহ তাআলার বিধানের দিকে আহ্বান করার প্রচুর সুযোগ পায়।এ সুযোগগুলো প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায়ের মাধ্যমে হতে পারে। আবার সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন শুক্রবার জুমআর নামাজ আদায়ের সময়ও হতে পারে। যেখানে মানুষ একত্রে জামাআতে নামাজ আদায় করে।আবার কখনো এ সুযোগ বাৎসরিক দুই ঈদ ও আঞ্চলিক ইসলামি মজলিসে হতে পারে। আবার বাৎসরিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এ সুযোগ হতে পারে। আর তা হলো সারা বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো থেকে সচ্ছল মুসলিমদের হজ্জ পালনের জন্য পবিত্র নগরী মক্কা ও ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়ার মাধ্যমেও হতে পারে। এ সব জায়গায়ও নামাজের সময় মানুষ জামাআতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে।>> তাছাড়া জামাআতে নামাজ আদায় করা একাকি নামাজ পড়ার চেয়ে অনেক বেশি ছাওয়াবের কাজ।>> জামাআতে নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে উপস্থিত হলে সব মুসলিমদের পরস্পর অবস্থা ভালোভাবে জানা যায়। এর ফলে রুগ্ন ব্যক্তিদের খবর পাওয়ার পর তার সেবা করা, সমাজের গরীব-দুঃখীদের প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা এবং মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন করার সুযোগ লাভ করা যায়।>> জামাআতে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে গেলে আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ খবরে নেয়া, এলাকায় নবাগত যে কোন মুসাফির ব্যাক্তিকেও সহজে জানা-শুনা এবং ধর্মীয় প্রচার-প্রচারণার কাজে সহযোগিতা লাভের সুযোগ তৈরি হয়।>> নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে আসলে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলামের একটি বিশেষ নিদর্শন ও নির্দেশ ‘জামাআত’ প্রতিষ্ঠিত হয়।>> নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষীদের সামনে মুসলমানদের একতা ও একনিষ্ঠতা, দাপট, শক্তি ও পরাক্রমশালীতা বিশেষভাবে ফুটে উঠে। আর মুনাফিক ও আল্লাহদ্রোহী শক্তি দুর্বল ও পর্যদুস্ত হয়।>> নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে আসলে বিজ্ঞ আলেম-ওলামাদের কাছ থেকে নামাজের বিধি-বিধানসহ ধর্মীয় বিধানাবলী সম্পর্কে অনেক কিছুই জানার সুযোগ তৈরি হয়।>> মসজিদে পরস্পর একত্রিত হলে সমাজে যারা মসজিদে অনুপস্থিত থাকে তাদেরকে চিহ্নিত করে জামাআতে আসার ব্যাপারে সহযোগিতা করা ও উপদেশ দেয়া যায়।>> মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের বিশেষ সুযোগ তৈরির একমাত্র অন্যতম মাধ্যম হলো জামাআতে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে।>> মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সুযোগ লাভ হয়।>> মসজিদে একত্রিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ইসলামের জন্য সীসাঢালা প্রাচীরের মতো সারিবদ্ধভাবে জিহাদ (ধর্মীয় কাজে প্রানন্তকর চেষ্টা) করার বিশেষ প্রশিক্ষণ লাভ হয়।>> মসজিদে জামাআতে নামাজ পড়তে আসার মাধ্যমেই সমাজের ধনী-গরিব, জনপ্রতিনিধি ও জন সাধারণের মাধ্যে পরস্পরিক সাক্ষাত লাভের সুযোগ হয়। যাতে নিজেদের মধ্যে সামাজিক সব ব্যাপারে পরামর্শের উত্তম সুযোগও পাওয়া যায়।>> মসজিদে আসলে সমাজের ধর্ম বিমুখদের ধর্মের পথ দেখানোর সুযোগ হয়।>> জামাআতে নামাজ পড়ার মাধ্যমে সাহাবায়ে কিরামের যুগের শিক্ষা পদ্ধতির অনুসরণ ও অনুকরণ হয়। যা দ্বীনি শিক্ষার অন্যতম একটি মূলনীতি।>> একান্ত সাওয়াবের আশায় জামাআতে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়া মুসলিম উম্মাহর উপর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে রহমত ও বরকত নাজিল হওয়ার একটি বিরাট মাধ্যমও বটে।>> মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে সমাজের নিরলস ইবাদতকারীদের ইবাদাতের অদম্য উৎসাহ্- উদ্দীপনা দেখে অলসদের মাঝেও ইবাদতের ইচ্ছা ও স্পৃহা জন্ম নেয়।>> নির্ধারিত সময়ে মসজিদে এসে জামাআতে নামাজ আদায়ে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাআতে নামাজ পড়ার বিশেষ ফায়েদা লাভে যথা সময়ে মসজিদে এসে জামাআতে নামাজ আদায়ের প্রতি একনিষ্ঠ ও মনোযোগী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস
Advertisement