বিশেষ প্রতিবেদন

নতুন ভবন দেখতে ভালো, ভেতরটা এলোমেলো

প্রায় দেড় মাস আগে পুরাতন ভবন ছেড়ে নির্বাচন কমিশন আধুনিক নয়নাভিরাম ভবনে গেলেও সরকারি গুরুত্বপর্ণ কাগজপত্র রাখার জায়গা পায়নি। অযত্নে-অবহেলা পড়ে আছে যেখানে-সেখানে। এখনও বসতে পারেননি অনেক কর্মকর্তা। আর কেউ কেউ প্রয়োজনের তুলনায় বড় বড় কক্ষ দখলে করে বসে আছেন।সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন ওই ভবনটির প্রতিটি ফ্লোরে টয়লেট রাখার কথা থাকলেও তা হয়নি। এছাড়া মাত্র কয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া অন্যদের কক্ষে ইসির কোনো ব্যবস্থা নেই। ইসির কয়েকটি শাখা এখনও বসার নির্দিষ্ট কোনো স্থান পায়নি। নেই সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট মিডিয়া সেন্টার। আর ভবনের ভেতরটা ময়লায় ঠাসা। দরকারি কাগজপত্র টয়লেটের পানিতে ভাসছে। জনসংযোগ পরিচালকের কক্ষ প্রয়োজনের তুলনায় ছোট। নেই কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। যা পুরাতন ভবনে ছিল।এসব বিষয়ে ইসির সচিব মুহাম্মদ আবদুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ইসির এই ভবনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে দ্রুত তা শেষ করার জন্য তাগিদে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ইসির ডেস্ককে নিচের ফ্লোরে দেয়ার পরিকল্পনা করছি, কাজ শেষ হলে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে দেয়া হবে। আর প্রয়োজন অনুযায়ী অনেকেই কক্ষ পাননি। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।জানা যায়, আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাশে নির্বাচন কমিশনের নতুন ভবনটি ২২ জানুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু করলেও এখনও অফিস করার জন্য উপযুক্ত নয়। কমিশন পরিবর্তন হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ভোগ শেষ হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ডেস্ক এখন খোলা জায়গায় ও মেঝেতে রয়েছে। সরকারি কাগজপত্র ও চিঠি মেঝের পানিতে ভাসছে, অবার কখনও বাতাসে উড়ছে।ইসি সচিবালয়ের কর্মচারী মোহসিন হোসেন জানান, নতুন ভবনে ওঠার পর দেড়মাস পার হলেও ইসির ডেস্কের কোনো নির্দিষ্ট জায়গা করা হয়নি। অথচ সবার আগে এ শাখায় ইসির সব কাগজ আসে।তিনি বলেন, আমাদের এখানে কাগজ রাখার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। সব কাগজ মেঝেতে পড়ে থাকে। পাশে ওয়াশরুম হওয়ায় পানি বাইরে এসে কাগজ ভিজে যায়। খোলা জায়গায় কাগজ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় অনেক কাগজ হারিয়ে যায়। অথচ ইসির সব কাগজ এই শাখায় আসে।ইসির সহকারী সচিব রাজীব অাহসান জানান, উপ-সচিবের নিচের পর্যায় থেকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য বাথরুম ও এসির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। প্রতিটি ফ্লোরের দুই পাশে কেবল দু’টি করে টয়লেট। যা তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণি থেকে শুরু করে সিনিয়র সহকারী সচিবদের ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের কক্ষে কোনো ওয়াশরুম নেই। ভাত খেয়ে হাত ধুব- সে ব্যবস্থাও নেই। জানালা দিয়ে বাইরে পানি ফেলা ছাড়া উপায় থাকে না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের শুরুতে এ ভবনের ডিজাইন এমন ছিল না। সেন্ট্রাল এসি লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু রকীব কমিশন তা বাদ দিয়েছে। অথচ বাতাস ঢোকারও কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। আবার দেয়ালে দেয়া হয়েছে অ্যালুমিনিয়ামের স্তর। ফলে প্রতিটি ফ্লোর এতো গরম হচ্ছে যে, কাজ করাই দুরূহ হচ্ছে।রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাশে ২১৩ কোটি তিন লাখ টাকা ব্যয়ে ইসির এই নিজস্ব ভবন নির্মিত হয়েছে।এইচএস/বিএ/জেআইএম

Advertisement