হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন উলফাত। সে কারণে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাবর্তনের মাধ্যমে সম্মাননা পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু এ আনন্দের দিনে বাবা-মা পাশে নেই। তাই বুক ভরা কষ্ট নিয়ে জীবনের বড় আনন্দের দিনটি পার করছেন তিনি। ঢাবির ৫০তম সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী উলফাত এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন জাগো নিউজের কাছে। তিনি বলেন, ‘আজ আমার জীবনে বড় অর্জনের একটি দিন। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস, আজ বাবা-মা বা পরিবারের কেউই কাছে নেই। তবে এ জন্য আমার আক্ষেপ নেই। এ সম্মান বাবা-মায়ের।’বাড়ি ফিরে সমাবর্তনের গাউন ও কালো টুপি বাবার মাথায় পরিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখছেন উলফাত। তিনি আরও বলেন, ‘আমার এ অর্জনের পেছনে বিজ্ঞান বিভাগের আলমগীর স্যার, সালাত স্যার, চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম স্যার ও মমতাজ স্যারের অনেক অবদান রয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে বেশি আড্ডা দেওয়ায় মাঝপথে সেমিস্টার পরীক্ষায় খারাপ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রঙিন জীবনে বুঝি ইতি টানতে হবে- এ ভাবনায় তখন অনেক হতাশায় পড়েছিলাম। তখন বিভাগের প্রিয় শিক্ষকরা, বড় ভাই ও সহপাঠীদের সহযোগিতায় আবারও ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হই। আজ তারই সম্মাননা দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’‘ফ্যাকাল্টিতে না গেলে আমার দিনই শুরু হয় না। অথচ সেই স্বপ্নের ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই মন কিছুটা খারাপ’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক মিস করব প্রিয় এই ক্যাম্পাস, শিক্ষক, বড় ভাই আর সহপাঠীদের। সকলে মিলে আমরা একটি পরিবারের মতো দিন পার করতাম। সেই পরিবার থাকবে শুধু আমি থাকব না- এটা ভাবতে পারছি না।’ ঢাবিতে প্রথম পা রাখার অনুভূতির কথা স্মরণ আর জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনের মুহূর্তে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন উলফাত। তিনি বলেন, ‘জীবনে যেখানে, যেভাবেই থাকি প্রাণের এ বিদ্যাপীঠকে কোন দিন ভুলতে পারব না।’প্রসঙ্গত, ঢাবির ৫০তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সুপারিশে ৬১ জনকে পিএইচডি, ৪৩ জনকে এমফিল এবং ১৭ হাজার ৮৭৫ জনকে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এছাড়া স্বর্ণপদক দেয়া হয় ৯৪ জনকে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে সভাপতির বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ।এমএইচএম/এসএইচএস/জেআইএম
Advertisement