‘মুশফিক নন, লিটন দাস কিপিং করবেন। তাহলে টিম কম্বিনেশনটা কেমন হবে? নিউজিল্যান্ড ও ভারত সফরের মতো সাত ব্যাটসম্যানই খেলবেন? না কি একজন বাড়ানো বা কমানো হবে? মূলত ব্যাটসম্যান কমানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ লিটন দাসকে ধরলে ব্যাটসম্যানের সংখ্যা সাত-ই থাকবে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিশ্চয়ই তিন পেসার খেলবেন না। সে ক্ষেত্রে বাকি চারজনের জায়গা ভরাট হবে দুজন করে পেসার ও দুই স্পিনার দিয়ে। বলার অপেক্ষা রাখে না সাকিব আল হাসান শুধু জেনুইন অলরাউন্ডার নন। ‘টু ইন ওয়ান; ব্যাটসম্যান স্পেশালিস্ট স্পিনার। সাকিব-মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে হায়দরাবাদে বাড়তি একজন স্পিনার মানে তাইজুলকে খেলানো হয়েছে। আর তিন পেসারের বদলে পেস বোলারের কোটায় খেলেছেন দুজন। উইকেটে ঘাস না থাকলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও তেমন লাইনআপ থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তার মানে সাত ব্যাটসম্যান, সাকিব-মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে তাইজুল। তিন স্পেশালিস্ট স্পিনার এবং সঙ্গে দুই পেসার।মুশফিকুর রহীম কিপিং ছেড়ে দেয়ায় ভাগ্য খুললো লিটন দাসের। এ ব্যাটসম্যান কাম কিপার এখন অটো চয়েজ বনে গেলেন। যেহেতু তার হাতেই থাকবে উইকেটকিপিং গ্লাভস। তাই তার একাদশে থাকা শতভাগ নিশ্চিত।এখন প্রশ্ন হলো লিটন দাস খেললেও কি হায়দরাবাদের কম্বিনেশন অটুট থাকবে? না কি লিটন খেলার কারণে টিম কম্বিনেশন ভেঙ্গে যাবে? যেহেতু ইমরুল কায়েস দলেই নেই, তাই তামিম ইকবালের সাথে অবশ্যই সৌম্য সরকার ইনিংস ওপেন করবেন। সে ক্ষেত্রে সাব্বির রহমান রুম্মনের দলে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। তার বাদ পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, বোলিং শক্তি ঠিক রাখতে একাদশে কোনোভাবেই সাত জনের বেশি ব্যাটসম্যান খেলানোর সুযোগই নেই। অথচ ১৬ জনের দলে আছেন ৯ ব্যাটসম্যান (তামিম, সৌম্য, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, সাকিব, সাব্বির রহমান, লিটন দাস ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত)। তার মানে যে কোন দুজনকে বাইরে থাকতেই হবে। এখন লিটন দাস খেললে সাব্বির রহমান রুম্মনের জায়গা অনিশ্চিত হয়ে যাবে। যদিও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজ এবং ভারতের সাথেও সাত নম্বরে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের কোটায় খেলেছেন সাব্বির।ওই ৫ টেস্টে ১০ ইনিংস ব্যাট করে তিনটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩০.৮৭ গড়ে ২৪৭ রানও করেছেন রাজশাহীর ২৫ বছরের এ যুবা; কিন্তু কঠিন সত্য হলো ওয়েলিংটন ও হায়দরাবাদ টেস্টের চার ইনিংসে ৮৬, ৩৬, ১৫ ও ৪২ রান করা সৌম্য ছিলেন আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিমূর্তি। নতুন বলের বিরুদ্ধে তার সাবলীল ব্যাট চালনার সামর্থ্য প্রমাণিত। সাব্বির-লিটন দু’জন এক সঙ্গে খেললে ব্যাটসম্যান বেড়ে সাত থেকে হয়ে যাবে আটজন। তখন সাকিব ছাড়া একজন স্পেশালিষ্ট বোলার কমে পাঁচ থেকে চারে নেমে আসবে। তখন সাকিবের সাথে আর তিন স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে মাঠে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সেই রমরমা দিন এখন নেই। বিগত দিনে যারা টাইগারদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছেন, সেই কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, চামিন্দা ভাস, মুরালিধরন এমনকি লাসিথ মালিঙ্গা-অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজও নেই। কাজেই এবার আর ভাল খেলা নয়, নিশ্চিতভাবেই টেস্ট জয়ের টার্গেট টাইগারদের। আর টেস্ট জিততে হলে লঙ্কানদের দুই বার অলআউট করতে হবে। তাই যদি হয়, তাহলে নিশ্চয়ই চার স্পেশালিস্ট বোলারে সাজানো দূর্বল ও কমজোরি বোলিং দিয়ে হবে না। এখন লিটন দাস আর সাব্বির একাদশে থাকলে আপনাআপনি একজন বোলার কমে যাবে। খুব স্বাভাবিকভাবে বোলিং শক্তিও দূর্বল হয়ে যাবে। তার মানে পরিষ্কার, মুশফিকের বদলে লিটন দাস কিপিং করার অর্থ, সাব্বিরের একাদশ থেকে বাদ পড়া। এআরবি/আইএইচএস/পিআর
Advertisement