টানা দরপতন প্রবণতা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) টানা চতুর্থ দিনের মতো দরপতন ঘটেছে। সেই সঙ্গে কমছে লেনদেনের পরিমাণও। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৮৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বুধবার সূচকটি ১৫ পয়েন্ট, মঙ্গলবার ৭ পয়েন্ট এবং সোমবার ১৪ পয়েন্ট কমে।শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতার কারণেই এই দরপতন দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীর সংকট দেখা দিয়েছে। আগে যারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতেন তারাও এখন ডেট্রেডারের ভূমিকায় চলে এসেছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এই মুহূর্তে বাজারে দরতন হওয়ার কোন কারণ নেই। এরপরও দরপতন ঘটছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে বাজারে এখন দীর্ঘমেয়াদের বিনিয়োগকারী নেই। সকলেই ডেট্রেডারের ভূমিকায় রয়েছে। তিনি বলেন, আগে যারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতেন তারও এখন দ্রুত মুনাফা তুলে নেয়ার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। ফলে সকল ধরনের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতার কারণেই দরপতন দেখা দিয়েছে। তবে এ দরপতনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারে সূচক বাড়বে আবার কমবে এটাই স্বাভাবিক। কয়েকদিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার কারণেই এখন কিছুটা কমছে। তবে দরপতন ঘটলেও তা খুবই সীমিত আকারের। মূলত বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতার কারণেই এ দরতন হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত মাসে ৫ হাজার ৬৩৫ পয়েন্টে উপনীত হয়েছে। এখন তা কিছুটা কমে ৫ হাজার ৫৫০ পয়েন্টের ওপরে আছে। মূলত সূচক ৫ হাজার ৫৫০ থেকে ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের ঘরে ঘোরাঘুরি করছে। বাজারে বড় উত্থান বা পতন নেই। এটা পজেটিভ দিক। বৃহস্পতবিার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৩০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের দিন বুধবার বাজারটিতে লেনদেন হয় ৯৬১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৩১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানেরই শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় কমেছে। অপরদিকে দাম বেড়েছে ৯৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৪টির দাম। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের শেয়ার। এদিন কোম্পানির ৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আরএসআরএম স্টিলের ৩৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বারাকা পাওয়ার। লেনদেনে এরপর রয়েছে, বেক্সিমকো, ইফাদ অটোস, অ্যাকটিভ ফাইন, ইসলামী ব্যাংক, প্যাসেফিক ডেনিমস, কেয়া কসমেটিকস এবং শাশা ডেনিম।অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক ৩৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪৯২ পয়েন্টে। বাজারটিতে ৪২ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া ২৫৭টি ইস্যুর মধ্যে দাম বেড়েছে ৮১টির, কমেছে ১৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির দাম।এমএএস/ওআর/জেআইএম
Advertisement