উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে লালমনিরহাটে তিস্তা, সানিয়াজান, ধরলা, বুড়ি তিস্তা ও সতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতি’র আরও অবনতি ঘটেছে। এতে দেশের সর্ববৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ হুমকির সম্মখীন দেখা দেয়ায় ওই ব্যারাজের ৪৪টি গেটই খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম ছিটমহলসহ গোটা জেলার ৬০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি লোকজনের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা দোয়ানী-ডালিয়া শাখা’র সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে প্রচন্ড গতিতে কাদা যুক্ত পানি বাংলাদেশের দিকে ধুয়ে আসছে। এতে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে পানি বিপদ সীমার ৪৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ব্যারাজের উজান ও ভাটিতে অসংখ্য গ্রামের মানুষজন গত ৩ দিন পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। আরও কি পরিমান পানি আসবে তা ধারনা করা যাচ্ছে না।তিনি আরও জানান, ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। পানির গতি বেড়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে তিস্তা ব্যারাজ। ব্যরাজ এলাকায় রেড এলার্ট জারী করা হয়েছে। মাইকিং করে লোকজনদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হচ্ছে। আতংকিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের লোকজন।জেলার পাটগ্রাম উপজেলার আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম ছিটমহল, বাউরা, ঠংঝাড়া, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্চ উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডার, কাকিনা, মদাতী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছা ও গোকুন্ড ইউনিয়নের ৬০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা তিস্তা ব্যরাজের ভাটিতে হাতীবান্ধা উপজেলা ৬ টি ইউনিয়নের। হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু জানান, ওই উপজেলার ৬ ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি লোকজনদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। একই সাথে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ জরুরী হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে সকল স্কুল-মাদ্রাসা।লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তিনি বন্যা পরিস্থিতি’র খোজঁ খবর নিচ্ছেন।
Advertisement