ভারতের বিতর্কিত বিজেপি নেতা সাক্ষী মহারাজ প্রস্তাব দিয়েছেন, দেশে কৃষিজমি বাঁচাতে কবরস্থান পুরোপুরি উঠিয়ে দেয়া দরকার এবং মুসলিমদেরও এখন থেকে দাহ করা উচিত। খবর বিবিসির।উত্তরপ্রদেশের উন্নাও থেকে নির্বাচিত এমপি সাক্ষী মহারাজ আরও যুক্তি দিয়েছেন, জঙ্গীদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হলে ইসলামী সন্ত্রাসবাদেরও মোকাবেলা করা যাবে। কারণ তখন জান্নাতে গিয়ে তাদের সুখভোগের কোনো আকর্ষণও আর থাকবে না।তার এই প্রস্তাবকে তীব্র আক্রমণ করে বিরোধী দলগুলো বলছে, উত্তরপ্রদেশে যখন ভোট চলছে তখন সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করতেই এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে। বিজেপির তরফ থেকেও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।উত্তরপ্রদেশে শ্মশান-কবরস্থান নিয়ে রাজনীতি সরগরম হয়ে আছে গত এক সপ্তাহ ধরেই। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে সে রাজ্যে ভোটের প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন এগুলো নিয়ে রাজ্য সরকারের কখনোই বৈষম্য করা উচিত নয়।প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, গ্রামে একটা কবরস্থান বানানো হলে একটা শ্মশানও বানানো দরকার। রোজার সময় টানা বিদ্যুৎ দেওয়া হলে দিওয়ালি বা হোলিতেও একই জিনিস করা দরকার। ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ কিছুতেই কাম্য নয়।বিরোধী দলগুলো তখন থেকেই বলে আসছে, ভোটের সময় শ্মশান-কবরস্থানের তুলনা না টানলেই প্রধানমন্ত্রী ভালো করতেন।কিন্তু এখন তার দলেরই বিতর্কিত সাংসদ সাক্ষী মহারাজ সেই প্রসঙ্গের রেশ টেনে আরও মারাত্মক প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কৃষি বা শিল্পের জন্য জমি বাঁচাতে দেশে কবরস্থানই তুলে দেয়া উচিত। হিন্দু, মুসলিম বা শিখ সবারই দেহ দাহ করা হোক।সাক্ষী মহারাজের যুক্তি, হিন্দু-মুসলিম সবাইকে একসঙ্গে দাহ করা হলে দেশে জমির অপচয় কমবে। তা ছাড়া সন্ত্রাসবাদেও রাশ টানা যাবে, কারণ মৃত্যুর পর জান্নাতে যে সব হুর-পরী মিলবে বলে জঙ্গীদের এ পথে টেনে আনা হয়, দেহ জ্বলেপুড়ে কাঠ হলে সে সব ল্যাঠাও চুকে যাবে।তিনি বলেন, আমার প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হলো জমি বাঁচানো। জনসংখ্যা এত বাড়ছে, তারপর কবরস্থানেই যদি দেশের এতো জমি লেগে যায় তাহলে কৃষি কোথায় হবে আর শিল্পই বা কোথায় হবে?এ ধরনের ধর্মীয় উসকানিমূলক কথাবার্তা তিনি আগেও বহুবার বলেছেন। কিন্তু মুখে মৃদু সতর্ক করা ছাড়া বিজেপি কখনোই তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।বিরোধী দলগুলো মনে করছে, এবারেও উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন চলাকালীন সে রাজ্যে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণ করতেই তাকে দিয়ে কৌশলে এ কথা বলানো হয়েছে।কংগ্রেস মুখপাত্র সন্দীপ দীক্ষিত বলেছেন, এই প্রস্তাবের পেছনে একটাই উদ্দেশ্য। উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করে ভোটে তার ফায়দা লুট করা। টিটিএন/আরআইপি
Advertisement