প্রায় সাড়ে ৫শ বছর আগে হযরত খানজাহানের নিজ হাতে ছাড়া কুমির কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়ের শেষ বংশধর কুমিরটি মারা যাওয়ার পর ভারতের মাদ্রাজ থেকে আনা ভিন দেশি কুমির এবার ২২টি ডিম দিয়েছে। কয়েক বছর এ কুমিরটি ডিম দিলেও ডিম থেকে বাচ্চা বেরোনোর ঘটনা ঘটেনি। তাই এবার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাতে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃত্রিম পদ্ধতি।ইতোমধ্যে ভারতীয় এই কুমিরের ২২টি ডিমের মধ্যে ১২টি গত সোমবার প্রাণী সম্পাদক বিভাগের একটি দল বাচ্চা ফুটানোর জন্য নিয়ে গেছে। ২০০৪ সালের ২৬ জুন ভারতের মাদ্রাজ থেকে মার্শ প্রজাতির মিঠাপানির ৬টি কুমির খানজাহান আলীর দিঘীতে ছাড়া হয়। পরে একটি কুমিরের মৃত্যু ঘটে। এরপর অপর ৩টি কুমির সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে বেঁচে আছে দুটি।এদের মা কুমিরটি প্রতি বছর ডিম দিয়ে থাকলেও তা থেকে বাচ্চা হতো না। কিন্তু, এবার কুমিরের বাচ্চার আশায় বুক বেধেছে মাজারের ভক্ত-মুরিদ ও খাদেমরা।তারা বলেন, হযরত পীর খানজাহান আলী (রাঃ) এর মাজারের দিঘীতে বাস করতো কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় কুমির জুটির বংশধররা। আর তাদের ঘিরে মাজার এলাকায় আগত ভক্ত ও সাধারণ দর্শনার্থীরা তাদের মানত দিতেন। কিন্তু, কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় কুমির জুটির শেষ বংশধর ধলাপাহাড় কুমিরটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যায় আর ধলাপাহাড় কুমিরটির মৃত্যু মধ্য দিয়ে শেষ হয় পীর খানজাহান আলী (রাঃ) এর মাজারের দিঘীতে বাস করা কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় অধ্যায়।খানজাহান আলী মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির জানান, মাজারে এখন যে কুমিরটি রয়েছে তা প্রতি বছর ডিম দিলেও তা থেকে বাচ্চা হচ্ছিলনা। এবার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়। এরপর গত সোমবার মাজারের মা কুমিরটির দেওয়া ২২টি ডিমের মধ্যে ১২টি ডিম বাচ্চা ফুটানোর জন্য প্রাণী সম্পাদক বিভাগের একটি দল নিয়ে গেছে।বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও মাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাজারের মা কুমিরটি প্রতি বছর ডিম পারলেও মাজার এলাকায় নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ডিম থেকে বাচ্চা হচ্ছিলনা। কুমিরের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য সর্বদা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্র নিশ্চিত করতে হয়, কিন্তু মাজার এলাকায় আগত দর্শনার্থীদের কারণে তা সম্ভব হচ্ছিলনা। এবার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য প্রাণী সম্পদ বিভাগের সহায়তা নেয়া হয়েছে।জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় প্রাণী সম্পদ বিভাগের একটি দল মাজারের কুমিরটির ১২টি ডিম নিয়ে এসেছে যা কৃত্রিমভাবে ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ফুটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।এমএএস/আরআইপি
Advertisement