জাতীয়

পরিবহন ধর্মঘটে বাড়ি যাওয়া হলো না দগ্ধ সুমনের

নিজ বাড়িতে বাতির আগুনে পুড়ে দীর্ঘ আট মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল ৭ বছর বয়সী শিশু সুমন। কিন্তু হঠাৎ করে সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে তার আর বাড়ি যাওয়া হলো না। আজ সকালে সিলেটের দুর্গাপুরের উদ্দেশে বাবা ধীরেন্দ্র নাথকে নিয়ে সায়েদাবাদ পৌঁছে ছিল শিশু সুমন। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রাজধানী থেকে দেশের কোনো প্রান্তে গণপরিবহন ছেড়ে যাচ্ছে না। শুধু শিশু সুমন আর ধীরেন্দ্রনাথ নন, এমন হাজারো যাত্রী সায়েদাবাদ এসে সীমাহীন বিড়ম্বনায় পড়েছেন হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে।সুমনের বাবা ধীরেন্দ্র নাথ বলেন, ৮ মাস ধরে সন্তানকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে আজ যখন ছাড়পত্র পেয়েছি, তখনই বাড়ি যাওয়ার জন্য সকালে সায়েদাবাদ ছুটে আসি। কিন্তু এসে দেখি সব পরিবহন বন্ধ। তিনি আরও বলেন, আমার এই ছোট ছেলে কতদিন বাড়ি যায় না। শুধু বাড়ি যাওয়ার জন্য জেদ করে, সকালে এসেছি সায়েদাবাদ কিন্তু বিকেল পার হয়ে যাচ্ছে তবুও গাড়ি ছাড়ছে না। ঢাকায় কোথাও আমাদের থাকার জায়গা নেই, যদি পরিবহন ধর্মঘট শেষ না হয় তাহলে কোথায় থাকবো কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। অন্যদিকে ৭ বছর বয়সী শিশু সুমন বার বার বলছে, বাবা বাড়ি যাবো, বাবা বাড়ি যাবো। সেই সঙ্গে তার বাবা ধীরেন্দ্রনাথ বার বার সন্তানকে বুঝিয়ে বলছেন, আর একটু পরই বাড়ি যাবো বাবা...।এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে পরিবহন শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম এবং মোহাম্মাদ বাবুল বলেন, এক বাস চালকের যাবজ্জীবন সাজার রায় আসার পর শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছিল। পরে আবার আরেক সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় এক ট্রাকচালকের ফাঁসির রায় হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এখন অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে আছে। নেতারা এর সমাধানের চেষ্টা করছেন। শ্রমিক নেতারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা সে অনুযায়ীই চলবো।সায়েদাবাদ ছাড়াও ঢাকার গাবতলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছাড়ছে না। শহরতলির বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী অন্য গণপরিবহনও কম দেখা যাচ্ছে।এ বিষয়ে পরিবহন নেতা তাজুল ইসলাম বলেন, বাসচালক জামির হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পূরণ না হলে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে না। কোনো চালক গাড়ি চালাতে গিয়ে মানুষ মারতে চান না। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় একজন চালকের এমন শাস্তি অগ্রহণযোগ্য।এএস/জেএইচ/পিআর

Advertisement