বাসা মালিকের অনেক টাকার লোভ সামলাতে পারেননি কর্মচারি রাকিবুল হাসান টুটুল। তাই ফন্দি করেন কিভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়া যায়। কয়েকজন সঙ্গিকে নিয়ে পরিকল্পনা করে হোসনে আরা বেগমকে(৬৫) শ্বাসরোধে হত্যা করে নগদ টাকা লুট পালিয়ে যান। ওই হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনকে মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানায় আটককৃতরা। সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতাররা হলেন- কর্মচারি মো. রাকিবুল হাসান টুটুল (২৪) ও মো. আলমগীর হোসেন হৃদয় (১৮)। ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের এ ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাড়ির ৭ম তলার বাসা থেকে হোসনে আরার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো বাসা তছনছ। জামা-কাপড়ের মধ্যেই খাটের ওপর বৃদ্ধা হোসনে আরা বেগমের নিথর দেহ। গলায় সাদা ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো, পা দু’টি পুরনো লুঙ্গি দিয়ে বাঁধা থাকলেও হাত দু’টি বুকের ওপর। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃদ্ধাকে খুন করে বাসা থেকে দুই লাখ টাকা লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এব্যাপারে সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী বলেন, ওই খুনে বাসার কর্মচারিসহ তিনজন অংশ নেয়। টাকার লোভেই তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা খুনের দায় স্বীকার করেছে। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার রাকিবুল নিহতের বাসার কর্মচারি ছিলেন। হোসনে আরার কাছে অনেক টাকা জমা আছে মনে করে তারা তাকে হত্যা করে। হত্যার আগে নিহত হোসনে আরাকে চা ও মুড়ির সাথে নেশার দ্রব্য খাইয়ে দুর্বল করা হয়। এরপর ওড়না দিয়ে হাত পা বেঁধে ও শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। নিহতের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি তিন ছেলে নিয়ে মিরপুরের ওই বাসায় থাকতেন। কিন্তু ঘটনার সময় তিনি বাসায় একা ছিলেন। হত্যাকান্ডের পর নিহতের ছোট দুই ছেলে পান্না মিয়া ও লিটন জানান, তার বড় ভাবিসহ সবাই একই ফ্ল্যাটে থাকেন। কয়েক দিন আগে ভাবি এক স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যান। তারা তিন ভাই ছিলেন গুদারাঘাটের দোকানে। তারা আরও জানান, বাসার আলমারিতে বড় ভাই দেলোয়ারের ব্যবসার দুই লাখ টাকা ছিল। ওই টাকা লুটের সময় মা বাধা দেওয়ায় খুন করা হতে পারে। হত্যাকান্ডের পর নিহতের ছেলে দেলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা অপরাধীদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা (মামলা নং-২৭, ৩৯২/৩০২ দ.বি.) করেন। সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান জাগোনিউজকে বলেন, ঘটনার পর তদন্ত শুরু করে সিআইডি পুলিশ। পরিবারের বক্তব্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে গ্রেফতারকৃতদের সম্পৃক্ততার খোঁজ মেলে। তিনি বলেন, রাকিবুলকে গাজীপুর ও আলমগীরকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়। খুনের আরেকজন অপরাধী পলাতক, তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জেইউ/এসআরজে
Advertisement