তাকে নিয়ে মানে, তার উইকেটকিপিং নিয়ে কিছু প্রশ্ন, গুঞ্জণ আর কানাঘুষা আছে আগে থেকেই। কিপার মুশফিকুর রহীমের সামর্থ্য ও সক্ষমতা নিয়ে ফিসফাস কয়েক বছর ধরেই; কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ঢাকা পড়ে গেছে তার ব্যাটিং কার্যকরিতায়।গ্লাভস ফস্কে দু’একটি ক্যাচ বের হওয়া কিংবা এক-আধটি স্ট্যাস্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেও শেষ অবধি ব্যাট হাতে রান করে আলোচনায় থাকেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক; কিন্তু এবার হয়দরাবাদে ভারতের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করে রীতিমত ভিলেন বনে গেছেন মুশফিক। তারপর তার কিপিং ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক কথা। রাজ্যের সমালোচনা। অনেকের মত, কিপিং ছেড়ে ব্যাটিংয়ে মনোযোগী হলে মুশফিকের ব্যাট আরও দ্যুতি ছড়াবে। কারো কারো ধারণা ছিল, শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই হয়ত টেস্টে কিপিং ছেড়ে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে চাইবেন মুশফিক; কিন্তু সম্ভবত তা হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না? তার কারণ, মুশফিক মন থেকেই কিপিং করতে চান। ব্যাটিংয়ের পাশপাশি কিপিংটাও তার অনেক বড় ভাল লাগার জায়গা। কিপিং তার আবেগ। তার ভালোবাসা। বলা যায় কিপিং আর মুশফিক দুয়ে মিলে মিশে একাকার। তার প্রমাণ মিলল আজ শেরেবাংলায়। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে দুপুরে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল, আপনি কি উইকেটকিপিংটা চালিয়ে যেতে চান? কিপিংয়ের জন্য আপনার ব্যাটিং প্রভাবিত কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয় কী? এ প্রশ্ন ওঠা মাত্র মুশফিকের চোখ-মুখ অন্যরকম হয়ে গেল। খানিকটা আবেগতাড়িত মনে হলো। জবাব দিতে গিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। যার সারমর্ম হল, তিনি অবশ্যই ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেট কিপিংও উপভোগ করেন। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কিপিংটা চালিয়েও যেতে চান। তবে মূল কথা, শুধু আমি চাইলেই তো আর হবে না। টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা চায়, সেটাই হবে। মোদ্দা কথা, মুশফিকের অনুভব- উপভোগ করা আর কিপিং চালিয়ে যাওয়াই শেষ কথা নয়। আসল কথা হলো টিম ম্যানেজমেন্ট কি চায়! টিম ম্যানেজমেন্ট না চাইলে নিজের ইচ্ছে-আগ্রহ থাকলেও কিছু হয় না। একথা বোঝাতে গিয়ে মুশফিক বলে ওঠেন, ‘আমি তো ব্যাটিং-কিপিং দুটোই উপভোগ করি। আমার ইচ্ছেও করে।’ সেই ইচ্ছেটাই যে শেষ কথা নয়, তা বোঝাতে গিয়ে টাইগার অধিনায়ক একটা উদাহরণও টানেন। বলেন, ‘আমার তো বোলিংও করতে ইচ্ছে করে। এতে যদি দলের উপকার হয়! কিন্তু আমি ইচ্ছে করলেই তো সব কিছু হবে না। আসল ব্যপার হলো- কোচ, ম্যানেজমেন্ট এবং বোর্ডের ইচ্ছে এবং আগ্রহ। তারা সিদ্ধান্ত নেবেন আমি কী করবো।’ ম্যানেজমেন্টের ইচ্ছেতে তাকে গত এশিয়া কাপে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে হয়েছে। তা জানিয়ে মুশফিক বলেন, ‘এশিয়া কাপে আমি কিপিং করিনি, শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই তিনটা ম্যাচ খেলেছি। সেট ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিলো। এখনো ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেবেন।’তার ওপর ছেড়ে দিলে কী সিদ্ধান্ত নেবেন? ‘যদি ব্যক্তিগতভাবে বলতে বলা হয়, এখনো আমার মনে হয় যে কিপার এবং ব্যাটসম্যান হিসেবেই আমি দলের জন্য সবচেয়ে ভালো অবদান রাখতে পারি। এখন আমাকে যে দায়িত্ব দেয়া হবে, সেটাই পালন করবো। বাকিটা টিম ম্যানেজমেন্টের উপর নির্ভর করছে।’ এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement