দেশজুড়ে

কলেজেছাত্রীকে চড় মেরে পালালেন ছাত্রলীগ কর্মী

রাজশাহীতে এক কলেজছাত্রীকে প্রকাশ্যে চড় মেরে পালিয়েছেন এজাজ আহমেদ রিক নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী। রোববার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজে এ ঘটনা ঘটে।লাঞ্ছনার শিকার ওই ছাত্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির ‘ক’ শাখায় অধ্যয়নরত। তার বাড়ি নগরীর উপকণ্ঠ কাপাশিয়ায়। লাঞ্ছনাকারী ছাত্রলীগ কর্মী এজাজ আহমেদ রিক (রোল-১১২৭) নগরীর মেহেরচন্ডি এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় দুপুরে শিক্ষক-কর্মচারীদের সম্মিলিত জরুরি সভায় অভিযুক্ত ওই ছাত্রকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিভাকদের আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ও সরকারি সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিলুফার পারভীন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজের ক্লাস-পরীক্ষা সাসপেন্ড করা হয়েছে। এরপর জরুরি সভায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী এজাজকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিভাকদের আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, হামলার শিকার ওই ছাত্রী তার দপ্তরেই রয়েছে। ছাত্রীর অভিভাবক এসেছেন। হামলাকারী ওই ছাত্রের অভিভাবকেও খবর দেয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোফিজুদ্দিন মোল্লা দাফতরিক কাজে ঢাকায় রয়েছেন।  তাকেও ফোনে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রী উত্ত্যক্ত ও শিক্ষকদের বিরক্ত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিলুফার পারভীন বলেন, এতোদিন বিচ্ছিন্নভাবে অভিযোগ এসেছে। তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিও দেয়া হয়েছে। এবার তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিটে অর্থনীতি বিষয়ের ক্লাস শেষ হয়। ক্লাস নেন অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বায়েজীদ বোস্তামী। ছাত্রলীগ কর্মী ক্লাস শুরুর ২০ মিনিট পর ক্লাসে হাজির হন। মাঝখানে বসে তিনি তার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এরপর মোবাইলে কথা বলা শুরু করেন। বিষয়টি নজরে আসে শ্রেণি শিক্ষকের। পরে ওই শিক্ষক তাকে পরের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এনিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে বকাবকি করেন শিক্ষক। কথা ওঠে তার বেপরোয়া আচরণ নিয়ে। ওই ছাত্রলীগ কর্মী সব ক্লাসে এমন বিরক্ত করেন বলে এক পর্যায়ে জানান ওই শ্রেণিরই ছাত্রী নাজনীন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ছাত্রলীগ কর্মী এজাজ। ক্লাস শেষ হওয়ার পর শ্রেণি শিক্ষক বের হতেই তিনি চড়াও হন ওই ছাত্রীর ওপর। এরই এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর গালে সজোরে থাপ্পড় দেন বখাটে এজাজ। পরে অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে দিতে পালিয়ে যান। লাঞ্ছনার শিকার ওই ছাত্রী জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই ছাত্রীদের উত্যক্ত করে আসছিল এজাজ। ক্লাসে শিক্ষকদেরও বিরক্ত করতো সে। বিষয়টি কম বেশি সব শিক্ষকই জানেন। কিন্তু রাজনীতিক কর্মী হওয়ায় তার ভয়ে এতোদিন কেউ মুখ খোলেনি। হামলার পর সহপাঠীরা তাকে শ্রেণি শিক্ষকের কাছে নিয়ে যান। পরে ওই শিক্ষকই বিষয়টি  কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানান। এ বিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, এ ধরনের ঘটনা জানা নেই তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/জেআইএম

Advertisement