একুশে বইমেলা

লেখাটা যেন একবার পাঠেই ফুরিয়ে না যায় : মাসউদ আহমাদ

মাসউদ আহমাদের জন্ম রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানায়। জীবনের প্রয়োজন ও প্রণোদনায় এই অনাত্মীয় ঢাকা শহরে এসেছেন। মূলত ছোটগল্প লেখেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন ছোটগল্পের বইও করেছিলেন। লেখালেখিতে গল্পই তার প্রিয়তম মাধ্যম। কিন্তু ঢাকায় আসার পর, পত্রপত্রিকায় ছোটগল্প প্রকাশিত হলেও গল্পের বই আর করেননি। পরে দুটো উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। গতবারের বইমেলায় বের হয় প্রথম উপন্যাস ‘নিজের সঙ্গে একা’। প্রকাশ করেছে সময় প্রকাশন। এবারও সময় প্রকাশন থেকে ‘রূপচানের আর্শ্চয কান্না’ নামে একটি উপন্যাস এসেছে। এছাড়া তিনি গল্পের একটি ছোটকাগজ সম্পাদনা করেন ‘গল্পপত্র’ নামে। যার মোট ৯টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। সর্বশেষ সংখ্যাটি বেরিয়েছে ‘কথাসাহিত্যের সৈয়দ শামসুল হক’ শিরোনামে। তারও আগে বেরিয়েছে ‘কথাসাহিত্যের জীবনানন্দ’ সংখ্যা।সম্প্রতি সমকালীন সাহিত্যচর্চা ও বইমেলা সম্পর্কে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কথাশিল্পী সালাহ উদ্দিন মাহমুদ।জাগো নিউজ : এবারের বইমেলায় আসা ‘রূপচানের আর্শ্চয কান্না’ সম্পর্কে কিছু বলুন-মাসউদ আহমাদ : প্রথমে গল্প হিসেবেই লিখেছিলাম ‘রূপচানের আশ্চর্য কান্না’। এটি প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক সমকালের কালের খেয়ায়, ৮ জানুয়ারি ২০১৬। গল্পটি প্রকাশের পর, সাক্ষাতে, ফোনে ও ফেসবুকে আমি দুই ধরনের পাঠকের সাড়া পাই। পাঠক তো নানারকমের হয়। সরল কোনো গল্প পড়েই মুগ্ধ হয়ে যান, এমন নয়; বরং সিরিয়াস কয়েকজন পাঠক বলেন যে, গল্পটি তাদের বেশ ভালো লেগেছে। বিশেষ করে লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, শেখর ইমতিয়াজ, গল্পকার হামীম কামরুল হক, মনি হায়দার, আরমানউজ্জামান, এহসান ইসলাম, ইলিয়াস বাবর প্রমুখ। আমার প্রকাশিত গল্পের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কিন্তু তারা একপ্রকার প্রতিতুলনামূলক মন্তব্য জানান। আমি দারুণভাবে উদ্দীপ্ত হই। এই উপন্যাসের পটভূমি-চরিত্র-পরিপার্শ্ব আমার অনেকদিনের চেনা ও দেখা। গল্পটি লিখে ফেলার কিছুদিন পরই এটাকে নিয়ে উপন্যাস লেখার জন্য প্রেরণা পাই। ভাবতে থাকি। পরে, রূপচানের জীবন-পরিবার ও সমাজের ভেতর দিয়ে একটি জনপদের গল্প বলার জন্য হোমওয়ার্ক ও ফিল্ডওয়ার্ক করি এবং লিখে ফেলি উপন্যাসটি।জাগো নিউজ : সাহিত্যের কাছে আপনার প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির পার্থক্য কেমন?মাসউদ আহমাদ : সাহিত্যের কাছে আমার প্রথম প্রত্যাশা পাঠানন্দ। মুগ্ধ ও আচ্ছন্ন হওয়া। যখন একা লাগে, সময় থমকে থাকে জীবনের- রবীন্দ্রনাথের গান আমাকে দারুণ সঙ্গ দেয়। আচ্ছন্ন করে। মুগ্ধ ও বিস্মিত করে। সাহিত্যও মানুষের মনে নানাভাবে প্রভাব ফেলে। কখনো ভাষা দিয়ে, বিষয় ও ঘটনার বিভা দিয়ে। কাজেই একটা লেখা যখন পড়তে ধরি কোনো লেখকের, আমি কোনো-না-কোনোভাবে আলোড়িত হব, পাশ ফিরে নিজের জীবনকেই দেখে উঠবো, ভাষার সৌন্দর্যে বিমোহিত হবো- এমন প্রত্যাশা কাজ করে চলে। নিজের লেখা নিয়ে বলার মতো সামর্থ এখনও গড়ে ওঠেনি। তবু আমার প্রত্যাশা এই যে, লেখাটা যেন একবার পাঠেই ফুরিয়ে না যায়। ভাষা দিয়ে, বিষয় ও উপস্থাপনের গুণে, বয়নকৌশলে যেন পাঠক অনেকদিন পরেও কিছু একটা খুঁজে পান। আর প্রাপ্তি বলতে, সাহিত্য কিন্তু প্রডাক্টিভিটির বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জিনিস নয়। একটা ভালো লেখা লিখতে পারার আনন্দ ও সাধনাটুকুই আমার কাছে বড়। সাহিত্য দিয়ে কোনো কিছু অর্জনের প্রত্যাশা নিয়ে লেখালেখি নয়। কিন্তু লেখার বদৌলতে যদি কোনো প্রাপ্তি এসে পড়ে, সেটি নিশ্চয়ই ভালোলাগার।জাগো নিউজ : সমকালীন কথাসাহিত্য নিয়ে আপনার ভাবনা কেমন?মাসউদ আহমাদ : সমকালীন সাহিত্য বলে আলাদা কিছু নেই। কারণ ‘সমকালীন সাহিত্য’ ব্যাপারটিই অস্পষ্ট। সমকালে যারা লিখছেন, নাকি সমকালীন বিষয় নিয়ে লেখার কথা বলা হচ্ছে? আমার কথা হচ্ছে, বহুকাল ধরে সাহিত্যচর্চা চলে আসছে। যুগে যুগে নানাধরনের লেখক লিখে যাচ্ছেন। কবিতা ও গল্প বা অন্য কোনো লেখা- যার লেখার সৌরভ-সৌন্দর্য ও শিল্পমান সময়ের ঘা সয়ে টিকে থাকবে কুড়ি বছর পরেও, সেটাই মনে হয় সমকালীন সাহিত্য। প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা ও কাহিনি বা সম্পর্কের আলো-অন্ধকার আর হাওয়া থেকেই গল্প তৈরি হয়। কিন্তু একজন সৃজনশীল লেখকের গল্পে কী এমন থাকে, যা আলাদা মাত্রা পায়, পাঠকমনে সৌরভ ছড়ায়? গল্পকারকে সাংবাদিকের সঙ্গে তুলনা করা চলে। সাংবাদিক প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া মুহূর্তের ছবি তোলেন আর ক্যাপশন লেখেন; কখনো ঘটনার বিশদ বিবরণও লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু একজন গল্পকার তার গল্পে প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে এমনকিছু জুড়ে দেন, যা আদৌতে বাস্তবে ঘটেনি। গল্পকারের হাতে থাকে কলম-কল্পনা-হৃদয় ও রংতুলি। সাংবাদিকের হাতে শুধু কলম ও ক্যামেরা। ঘটেনি, কিন্তু ঘটতে পারতো, গল্পকার তার গল্পে সেই স্বাধীনতা নেন; ভাবনা ও কল্পনা দিয়ে, মানবিক বোধ ও শুভ্র চেতনার আলো বা সৌরভ মিশিয়ে দেন গল্পে। সাংবাদিকের সেই এখতিয়ার নেই। এভাবেও প্রতিদিনের গল্প থেকে মৌলিক লেখকের গল্প আলাদা হয়ে যায়।জাগো নিউজ : সম্প্রতি কলকাতার বিখ্যাত ‘দেশ’ পত্রিকায় আপনার গল্প প্রকাশিত হয়েছে। দেশ-এ গল্প প্রকাশের অনুভূতি কেমন? মাসউদ আহমাদ : ‘দেশ’ পত্রিকায় গল্প প্রকাশিত হয়েছে, এই খবরটি আমাকে প্রথমে দেন চাঁদপুরের কবি ও কথাশিল্পী মুহম্মদ ফরিদ হাসান। সত্যি বলতে, আমার বিশ্বাসই হয়নি প্রথমে। আমি না-শোনার ভান করে বললাম, কী বললেন? তিনি আবারও বললেন, কলকাতার ‘দেশ’ পত্রিকায় আপনার গল্প বেরিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার সঙ্গে দেখা হয়। কারণ সেদিনই তিনি বইমেলায় এসেছেন। তিনি সেটি দেখান আমাকে। ‘দেশ’ এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনও বেরিয়েছে। তখন আমি অত্যন্ত আনন্দময় অনুভূতি লাভ করি। একটা গল্পপ্রকাশও কী বিপুল উচ্ছ্বাস ও খুশীর ব্যাপর হতে পারে, আমি টের পাই। ফেসবুকে খবরটি শেয়ার করার পর, বহু লেখক কবি এবং গুণীজন আমাকে শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাগজেও আমার একাধিক গল্প প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এমন বিস্ময়কর প্রতিক্রিয়া দেখিনি। আর একটা ব্যাপার আমাকে খুব আলোড়িত করেছে। আমার বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষী-পরিচিতজন প্রত্যেকেই এমনভাবে বিষয়টি নিলেন যেন গল্পটি তার নিজেরই। প্রত্যেকেই পরস্পরকে জানাচ্ছেন, এই জানো, মাসউদের গল্প বেরিয়েছে দেশ-এ। আমি সত্যি দারুণভাবে উদ্দীপ্ত হয়েছি। গল্প প্রকাশের পর, শুভেচ্ছা জানানোর জন্য একটি শীর্ষ দৈনিকের ফিচার সম্পাদক আমাকে দুপুরে লাঞ্চ করিয়েছেন। লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক আমাকে স্নেহ করেন; তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে আমাকেসহ কয়েকজনকে মিষ্টি খাইয়েছেন। আমাকে অন্য লেখকের ভালো একটি বই কিনে উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। লেখক-সম্পাদক মোহিত কামাল বইমেলায় আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন। এভাবে নানাজনের কাছে অগণন শুভাশিস আমি লাভ করেছি। ফলে অনুভূতি কেবল আমার একার নয়, আমার বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও। আমার মনের ফ্রেমে এই সুন্দর মুহূর্তগুলো সযত্নে তোলা থাকবে।জাগো নিউজ : সাহিত্য নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?মাসউদ আহমাদ : পরিকল্পনা করে লেখা সহজ নয়। তবুও আমার চেষ্টা ও আকাঙ্ক্ষা যে লেখা দিয়ে পাঠকের হৃদয়টা ছুঁয়ে দেওয়া। সেটি হালকা কোনো বিষয় বা গল্প দিয়ে নয়। প্রতিদিনের জীবনের বালুকাবেলায় উঁকি দেওয়া সামান্যতর কোনো অনুভূতির প্রকাশ ও বিবরণ পত্রস্থ করার অভিপ্রায় কেবল নয়, ছোটগল্প আমার অন্তর্গত বেদনা বা প্রতিবাদও। সংবাদপত্রে এবং আমার চারপাশে প্রতিদিন অজস্র ঘটনা আর গল্প দেখে উঠি, সেসবের প্রতিটিই যে গল্প হয়ে ধরা দেয়, এমন নয়। কিন্তু তবুও, দেখে ওঠা এসব গল্প বা গল্পের ভেতরের টুকরো ভাবনা বা অধরা আলো-অন্ধকারের রেণু বা দীর্ঘশ্বাসটুকু গল্প হিসেবে রূপ পায়। গল্পের বিভা ও সারল্যটুকু প্রতিনিধিত্ব করে শিল্পীর মানসলোক, কিংবা আমার নিজেরই বর্ণিল বা বিবর্ণ পরিপার্শ্ব; সমাজ ও সময়। গল্প মানেই যে নিছক একটা কাহিনি নয়, সেটা বলাই বাহুল্য। একজন কবিকে নিয়ে দীর্ঘ ক্যানভাসে আমি একটি উপন্যাস লেখার চেষ্টায় আছি বছর দুয়েক ধরে। আগামী বইমেলায় হয়তো সেটি বেরুবে। এই কাজটি দিয়ে আমি আমার বন্ধু ও সমালোচকের মুখ উজ্জ্বল করতে পারব বলে মনে করি। দেখা যাক, কী হয়।জাগো নিউজ : শিল্প-সাহিত্যের এ কণ্টকাকীর্ণ পথচলায় আপনার অনুপ্রেরণা…মাসউদ আহমাদ : কোনো লেখকই অনুপ্রেরণার জন্য অপেক্ষা করেন না। সংবেদনশীল মানুষেরা নিজেই নিজের অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত গড়ে নেন। খুঁজে পান, প্রতিদিন। দুঃসহ সমাজব্যবস্থার ভেতর দিয়ে নিজের জীবনকে এগিয়ে নিতে হয়। লেখকও কবিতা বা গল্প লেখার প্রেরণা সৃষ্টি করেন, আপন কৌশলে। গল্প লেখার এই যে টুকরো-দীর্ঘ-নীরব প্রয়াস ও আরাধনা, আমার ধারণা, এরসঙ্গে অলৌকিক কোনো মিথস্ক্রিয়া থাকতেও পারে। এটা অযৌক্তিক বা অমূলক নয়। এই পথ ধরেই গল্পের নিজস্ব একটা মানচিত্র তৈরি হয়। তখন সাধারণ গল্পটুকুই সময়কে উৎরে দাঁড়িয়ে যায়। একজন গল্পকার কী করেন তার গল্পে? কী করতে চান তিনি কাহিনি কিংবা চরিত্রের সংঘবদ্ধতা থেকে সরে গিয়ে? গল্প এখন আর এই নয় যে, জীবনের কোনো একটি খণ্ডাংশ দাঁড় করিয়ে, গল্পের শেষে গিয়ে প্রবলতর একটা ঝাঁকুনি; সঙ্গে নানারকম চেতনা ও সমাজমনষ্কতা, শিল্পবোধ। গল্প আরও এগিয়েছে। ব্যক্তিমানুষটি, যিনি গল্প লিখছেন, কখনো কখনো তাঁর নিজস্ব শক্তি ও সামর্থ আর পেরে ওঠা- গল্পের চরিত্র সেসব ছাড়িয়ে একটি নূতন কিছুর সন্ধান ও উৎসমুখ দাঁড় করায়। গল্পকার মূলত ঘটনা ও মুহূর্তবর্ণনার পাশাপাশি গল্প বলার ছলে চরিত্র ও পরিপার্শ্বের কথা বলেন। ছবি আঁকেন। মন নিয়ে কাজ করেন। পাঠকের ভাবনাকে সরিয়ে নেন। মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ জুড়ে দেন। মনস্তত্ব থেকে নিয়তির দিকে যান। নিয়তি তখন জীবনের দিকে ফেরে, নতুন কোনো বাস্তবতা নিয়ে। কাজেই প্রেরণার জন্য কোনো মৌলিক লেখক অপেক্ষা করেন না। সেই অবকাশও নেই তার।জাগো নিউজ : প্রচারবিমুখ থেকে সাহিত্যচর্চার সার্থকতা কতটুকু?মাসউদ আহমাদ : চরিত্রগত ভিন্নতা, ভাবনা ও রুচির কারণে মানুষ আলাদা হয়ে ধরা দেন জগতসংসারে। শেষ পর্যন্ত লেখকের লেখাটিই প্রধান, বাকি সব মিথ্যে। লেখার শক্তি ও সৌরভ না থাকলে প্রচারবিমুখ বা প্রচারকামী হয়েও লাভ হয় না। প্রণব ভট্ট নামের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ছিলেন, বছর কয়েক আগে। কাস্টমসে চাকরি করতেন। জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় তার উপন্যাসের বিজ্ঞাপন ছাপা হতে দেখেছি। তিনি বই বিক্রি করতেন স্টলে দাঁড়িয়ে। অটোগ্রাফ দিতেন। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পরদিন থেকেই নিভে গেলেন চিরতরে। তার বইয়ের কেউ খবরও রাখেন না। ভালো লিখতে পারলে প্রচারবিমুখ থাকলেও তিনি সামনে চলে আসেন। এটাই নিয়তি বা বাস্তবতা। ভালো লেখা কোনটি? ভালো গল্প বা উ

Advertisement

পন্যাসের কাঠামো, বিভা ও উৎরে ওঠা নির্ভর করে গল্পকারের মানসরাজ্যের সৌরভ-সংবেদনশীলতা আর কব্জির শক্তিমত্তার দ্যুতিতে। এটাই শেষাবধি গল্পের বাঁচামরার গর্ব বা ব্যর্থতা নিরূপণ করে। হয়তো নয়। প্রচার দিয়ে কিছুই হয় না।জাগো নিউজ : আপনার লেখালেখির সাফল্যে অন্যের ঈর্ষা আপনাকে বিব্রত করে কি?মাসউদ আহমাদ : কেউ ঈর্ষা করলে বিব্রত হওয়ার কিছু নেই। এটা সৃষ্টিগতভাবে গড়ে ওঠে মানুষের মনের ভেতর। কিন্তু এখানে তো কাউকে ঈর্ষা করতে দেখি না। বরং জিঘাংসু মনোভাবের মানুষ দেখি। ঈর্ষা হচ্ছে কারো সুন্দর ও সাফল্য দেখে নিজের ভেতর তা কামনা করা। আমাদের এখানে হয় কী- কেউ ভালো কিছু করলে তাকে কিভাবে ধ্বংস বা অপমানিত করা যায়, সেসবের প্রতিযোগিতা চলে। ব্যক্তিকে নিয়ে মিথ্যা গল্প তৈরি হয়। সেসব বেশ অস্বস্তিকর। কিন্তু শেষাবধি ভুল মানুষের এসব চেষ্টা ও বিবেচনা টেকে না। তারা পেরে ওঠে না। সত্য ও সুন্দরের জয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। ভালো লেখাটাই টিকে থাকে। আর কিছুই থাকে না।এসইউ/এমএস