খেলাধুলা

কে এই ও’কেফি!

বয়স তার ৩২ পার হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের ক্যাপ তার মাথায় উঠেছে ২০১৪ সালে। ২৮ বছর বয়সে এসে প্রথম অভিষেক ঘটেছিল এই স্পিনারের। দুবাইতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে। দুই ইনিংসে ২টি উইকেট পেলেও তার দল অস্ট্রেলিয়া হেরে গিয়েছিল ২২১ রানের বিশাল ব্যবধানে। ও’কেফির দুর্ভাগ্য, পরের টেস্টেই বাদ পড়লেন তিনি।প্রায় দেড় বছর বাইরে থাকার পর ও’কেফি আবারও ফিরলেন দলে, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। সিডনিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নেমে ৩ উইকেট নিলেও জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ ড্র হয়েছিল।এরপর আরও ৬ মাস দলের বাইরে ছিলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে আবারও ভালো পারফরম্যান্স করে ফিরে আসেন জাতীয় দলে। শ্রীলংকার বিপক্ষে তাদেরই হোম সিরিজে খেলতে পাঠানো হয় ও’কেফিকে। ৩ উইকেট পেলেও নিজ দলের পরাজয় ঠেকাতে পারেননি তিনি। এরপর আবারও মাঠের বাইরে ও’কেফি। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে ছিটকে যান তিনি। সর্বশেষ তিনি ফিরেছেন নিজ দেশে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে। সিডনিতে খেলেছেন এক টেস্ট। ৪ উইকেট পেয়েছেন তিনি। এই প্রথম জয়ও পেলো তার দল অস্ট্রেলিয়া। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের কোমর ভেঙে দেন তিনি।ওই সময় অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচকদের বিশেষ দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হন ও’কেফি। তাকে বলে দেয়া হয়, ভারতের বিপক্ষে সফরে তিনি থাকছেন বিশেষ পরিকল্পনায়। এ কারণে ও’কেফি বিগব্যাশ লিগের মাঝ পথ থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ভারত সিরিজের প্রস্তুতির জন্য। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু করে ভারত সিরিজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হচ্ছিলেন স্টিভেন ও’কেফি।ভারতের বিপক্ষে সিরিজকে সামনে রেখে দুবাইতে অস্ট্রেলিয়া যে অনুশীলন ক্যাম্প করেছিল সেখানে বিশেষভাবে উপমহাদেশের স্পিন সম্পর্কে ধারণা নিয়েছেন শ্রীলংকার স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ, ইংল্যান্ডের সাবেক স্পিনার মন্টি পানেসার এবং নিউজিল্যান্ডের সাবেক স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরির কাছ থেকে। নিজের সতীর্থ নাথান লিওন তো ছিলেন’ই।মাত্র চার টেস্টের অভিজ্ঞতা নিয়ে ৩২ বছর বয়সী স্টিভেন ও’কেফি উড়ে এলেন ভারতে। ভারতীয়রা নাথান লিওন আর অসি পেসাদের নিয়েই ম্যাচ পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছিল; কিন্তু স্টিভেন ও’কেফি ছিল স্টিভেন স্মিথের তুরুপের তাস। পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে সেই তুরুপের তাসই খেলে দিলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক।বাম হাতি অর্থোডক্স স্পিনার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছেন ৬৬ ম্যাচ। উইকেট নিয়েছেন ২২৫টি। তবে মাত্র ৪ ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে এসে বাজিমাতটা করে দেখিয়েছেন তিনি। দুই ইনিংসে ৬টি করে নিলেন ১২ উইকেট। ভারতের মাটিতে কোনো বিদেশি স্পিনার হিসেবে এটাই ছিল রেকর্ড। ২৮.১ ওভার বল করে ৭০ রান দিয়ে নিলেন ১২ উইকেট। অশ্বিন আর জাদেজা- দু’জন মিলে নিয়েছেন ১২ উইকেট।তবে ইয়ান বোথামকে ছাড়িয়ে যেতে পারতেন, তিনি যদি আর একটি উইকেট পেতেন। তাহলে ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথামের ১০৬ রানে ১৩ উইকেটের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে নিঃসন্দেহে ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে সেরা ও’কেফি। ১৯৫৯-৬০ সালে অ্যালান ডেভিসন কানপুরে নিয়েছেন ১২৪ রানে ১২ উইকেট।আইএইচএস/জেআইএম

Advertisement