খেলাধুলা

জয় অধরাই থেকে গেল বাংলাদেশের

জয়ের সুযোগ ছিল। ছিল চেষ্টাও। ছিল না শুধু ভাগ্য। আর ভাগ্য সঙ্গে না থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটিতে জয়ের স্বাদ পেল না বাংলাদেশ। গ্রেনেডায় মেঘলা আবহাওয়ায় লো স্কোরিং ম্যাচটি ৩ উইকেটে জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরাজয়ের গ্লানি সঙ্গী হলো মুশফিকুর রহিমদের। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ২১৮ রানের টার্গেট ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৯.৪ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিক দল।ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের নায়ক কাইরন পোলার্ড ও দিনেশ রামদিন।  ২১৮ রানের জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে আসেন দুই ক্যারিবিয়ান। দিনেশ রামদিন ও কাইরন পোলার্ড ১৩১ বলে ১৪৫ রানের জুটি গড়েন। এ জুটিতেই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।জয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকে দিনেশ রামদিন ৭৪ ও পোলার্ড ৮৯ রানে বিদায় নিলেও জয় পেতে সমস্যা হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৭৬ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭৪ রান করেন রামদিন। মারকুটে পোলার্ড ৭০ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৯ রান করেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে।তবে ইনিংসের শুরুতে আধিপত্য বজায় রাখে বাংলাদেশ। দলীয় ৯ ও ব্যক্তিগত ৩ রানে পেসার মাশরাফির বলে আল-আমিনের তালুবন্দি হন ক্রিস গেইল। এরপর আল-আমিনের করা দশম ওভারের শেষ বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন ড্যারেন ব্রাভো (৭)।পরের ওভারে মাহমুদল্লাহর ঘুর্ণিতে পরাস্ত হন ক্রিক এডওয়ার্ডস (১০)। এরপর ১২তম ওভারে  সিমন্সকে (০) ও ১৪তম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভোকে (৫) সাজঘরে ফেরত পাঠান আল-আমিন।বল হাতে বাংলাদেশের সেরা বোলার আল-আমিন হোসেন। ৫১ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। ১টি করে উইকেট নেন মাহমুদুল্লাহ  রিয়াদ. সোহাগ গাজী ও মাশরাফি বিন মর্তুজা।এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আনামুল হক বিজয়ের শতকে ২১৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৩৮ বলে ১০৯ রান করেন আনামুল। ইনিংসের শেষ বলে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে এলবিডাব্লিউর শিকার হন তিনি। এটি তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক।প্রথম শতকটি হাঁকিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। খুলনার শেখ  আবু নাসের স্টেডিয়ামে ১২০ রান করেন ডানহাতি এই ওপেনার। এছাড়া এশিয়া কাপে পাকিস্তানের  বিপক্ষে মিরপুর স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় শতকের দেখা পান।ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারের প্রথম বলে শর্ট মিড উইকেটে পোলার্ডের তালুবন্দি হন তামিম  ইকবাল (২৬)। তার উইকেটটি নেন হোল্ডার। অবশ্য একই জায়গায় ব্যক্তিগত ২০ রানে পোলার্ডের হাতে জীবন পান ড্যাশিং এই ওপেনার।   ক্রিজে আসা ইমরুল দ্রুত ৯ রান তুলে নিয়ে রান আউটের শিকার হন। চারে নামা শামসুর রহসান আট রান করে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক মুশফিককে সঙ্গী করে রানের চাকা সচল রাখেন আনামুল হক বিজয়। ৩৭ রান যোগ করে এই জুটি। এ সময়ে অর্ধশতক তুলে নেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।কিন্তু ২৮তম ওভারের শেষ বলে ক্রিস গেইলের বলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক (১২)। মুশফিকের বিদায়ের পর দ্রুত বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রস্তুতি ম্যাচে রান  পাওয়া রিয়াদ ডোয়াইন ব্রাভোর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১১ রান করেন।ষষ্ঠ উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি পায় বাংলাদেশ। নাসির হোসেন ও বিজয় ৫৩ রান যোগ করেন। অনেক দিন পর স্বরূপে ফেরা নাসির দলীয় ১৯৪ রানে সাজঘরে ফিরেন।৩৮ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৬ রান করেন মিস্টার ফিনিশার খ্যাত নাসির। এ ইনিংসের মধ্য দিয়ে একদিনের ক্রিকেটে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন নাসির। এরপর বাংলাদেশের ইনিংসকে একাই টেনে নেন বিজয়। চার-ছক্কায় শতক তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন। শেষ দিকে সোহাগ গাজী ২ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩ রান করেন।বল হাতে একাই বাংলাদেশের ইনিংসে ধস নামান ডোয়াইন ব্রাভো। ৩২ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। ১টি করে উইকেট নেন রবি রামপল, জেসন হোল্ডার ও ক্রিস গেইল।

Advertisement