দেশজুড়ে

ঝড়ে বিবর্ণ বগুড়া, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০

ঝড়ের কারণে বগুড়ার সর্বত্র এখন বিবর্ণ অবস্থা। বাড়িঘরের ক্ষতির পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফসলের ক্ষেত আর গাছ-পালা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলার প্রায় ৯২ হাজার পরিবার নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার আরও দু`জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসন। এই নিয়ে বগুড়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।গত শনিবার সন্ধ্যার আগ মূহুর্তে বগুড়া শহরসহ ৮টি উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবল বেগে ঘুর্ণিঝড় বয়ে যায়। এর ফলে বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়। বগুড়া জেলা প্রশাসনের হিসেবেই ২৮ হাজার ৬৬৭টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭০ হাজার ৩০১টি বাড়ি। একই সময়ে জেলার ২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে এবং ২২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। তিনি জানান, গত রোববার রাতে তারা আরও দু`জনের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন। তারা হলেন বগুড়া সদর উপজেলার গোকুলের আকালু মিয়া(৫০) ও পালশা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান(৬০)। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চণ্ডিদাস কুণ্ডু জানান, সোমবার তারা জেলার ৮টি উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির যে হিসাব নিরূপণ করেছেন, তাতে শুধুমাত্র ফসলেরই ক্ষতি হয়েছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার। এরমধ্যে রয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমির ভূট্টার ক্ষেত, ৫০০ হেক্টর জমির শাক-সবজি এবং ১০০ হেক্টর জমির কলা। তিনি বলেন, ফসলি জমির এই ক্ষতি ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ের আম-লিচু ও কাঁঠালেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, শনিবার ঝড়ের সময় গ্রীড স্টেশনের ১০ কেভি ট্রান্সমিটার বিকল এবং বনানীতে ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের খুঁটি উপড়ে পড়ে। একই সময় শহরসহ কয়েকটি উপজেলায় বেশ কিছু বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে ও তার ছিড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শনিবার রাত থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ গতকাল বিকেলের মধ্যে সম্পন্ন হলেও অন্যান্য এলাকায় স্বাভাবিক করতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন।এমজেড/আরআইপি

Advertisement