খেলাধুলা

লিটন কিপিং করলে একাদশে জায়গা হারাবেন সাব্বির!

শুধু আস্থার কথা বলা কেন? ক্রিকেটীয় যুক্তি ও ব্যাখায়ও কিপার মুশফিককে ড্রপ দেয়া কঠিন। ধরা যাক, মুশফিক নন লিটন দাস কীপিং করবেন। তাহলে দলের গঠন শৈলি কী হবে? মুশফিকের বদলে লিটন দাস কিপিং করলেই ল্যাঠা চুকে যাবে। যারা এমন ভেবে বসে আছেন, তারা একটু খুঁটিয়ে দেখলেই বুঝবেন, মুশফিকের বদলে অন্য কাউকে কিপিং করানোয় আছে নানা ঝক্কি ঝামেলা। যার প্রভাব পড়বে পুরো টিম কম্বিনেশনে। সেই নিউজিল্যান্ডে সাত ব্যাটসম্যান, তিন পেসার আর দুই স্পিনার (সাকিব আল হাসানকে স্পেশালিস্ট স্পিনার ধরে) খেলানো হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদেও সাত ব্যাটসম্যান ফর্মুলা অব্যাহত ছিল।  সাকিব-মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে বাড়তি একজন স্পিনার মানে তাইজুলকে খেলানো হয়েছে। আর তিন পেসারের বদলে পেস বোলারের কোটায় খেলেছেন দুজন। উইকেটে ঘাস না থাকলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও অমন লাইনআপ থাকার সম্ভাবনাই বেশি। মানে সাত ব্যাটসম্যান, সাকিব-মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে তাইজুল- তিন স্পেশালিস্ট স্পিনার এবং দুই পেসার। যে মুহুর্তে লিটন দাস কিপিং করবেন, সে মুহূর্তে তার ১১জনে থাকা শতভাগ নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে টিম কম্বিনেশন ভাঙ্গা ছাড়া পথ নেই। লিটস দাস খেললে সৌম্য সরকার কিংবা সাব্বির রহমান রুম্মনের একজনের বাদ পড়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, একাদশে কোনোভাবেই সাত জনের বেশি ব্যাটসম্যান খেলানোর অবকাশ নেই। অথচ ১৬ জনের দলে আছেন নয় ব্যাটসম্যান (তামিম, সৌম্য, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, সাকিব, সাব্বির রহমান, লিটন দাস ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত)। তার মানে যে কোন দুজনকে বাইরে থাকতেই হবে। এখন লিটন দাস খেললে সাব্বির রহমান রুম্মনের জায়গা অনিশ্চিত হয়ে যাবে। যদিও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ, নিউজিল্যান্ড সিরিজ এবং ভারতের বিপক্ষেও সাত নম্বরে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের কোটায় খেলেছেন সাব্বির। ওই ৫ টেস্টে ১০ইনিংস ব্যাট করে তিনটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩০.৮৭ গড়ে ২৪৭ রানও করেছেন রাজশাহীর এ ২৫ বছরের যুবা। সেক্ষেত্রে তাকে বাইরে থাকতে হবে। কারণ যেহেতু ইমরুল আনফিট। তার বদলে নিউজিল্যান্ডে দ্বিতীয় টেস্টে এবং ভারতের সাথে হায়দরাবাদে ওপেন করেছেন সৌম্য। শ্রীলঙ্কায়ও এ বাঁ-হাতির ইনিংস শুরুর সম্ভাবনা অনেক বেশি। ওয়েলিংটন ও হায়দরাবাদ টেস্টের চার ইনিংসে ৮৬, ৩৬, ১৫ ও ৪২ রান করা সৌম্যও শ্রীলঙ্কায় প্রথম একাদশের বাইরে থাকার সম্ভাবনা শূন্যের কোঠায়। ওই চার ইনিংসের তিনটিতে ওপেনার সৌম্য ছিলেন আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিমূর্তি। নতুন বলের বিরুদ্ধে তার সাবলীল ব্যাট চালনার সামর্থ্য প্রমাণিত। ইমরুল কায়েস যেহেতু নেই, তাই সৌম্যর খেলা এবং তামিম ইকবালের সাথে ওপেন করা একরকম নিশ্চিত।

Advertisement

সে ক্ষেত্রে মুশফিক কীপিং না করলে লিটন দাসকে সাব্বিরের জায়গায়ই খেলানো ছাড়া জায়গা নেই। আর সাব্বির, লিটন দু’জন এক সঙ্গে খেললে ব্যাটসম্যান বেড়ে সাত থেকে হয়ে যাবে আটজন। তখন স্বাভাবিকভাবে পাঁচ বোলারের বদলে সাকিবের সাথে আর তিন স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে মাঠে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।   এখন সাকিব স্পিনার। বাকি তিন বোলারের মধ্যে অবশ্যই অন্তত দুজন পেসার থাকবেন। তাহলে থাকবে সাকিবকে ধরে স্পিনার হবেন দু’জন। সেই জায়গাটা স্পিনার দিয়ে ভরাট করলে একজন বোলার কমে যাবে। নিশ্চয়ই চার স্পেশালিস্ট বোলার দিয়ে সাজানো দূর্বল-কমজোরি ও সীমিত বোলিং শক্তি নিয়ে লঙ্কানদের মোকাবিলা করবে না বাংলাদেশ।

যেহেতু শ্রীলঙ্কায় টিম বাংলাদেশের লক্ষ্য টেস্ট সিরিজ জয়, তাই শুধু ব্যাটিং শক্তি অটুট রাখাই শেষ কথা নয়। বোলিং শক্তিটাও তেমন সমৃদ্ধ আর ধারালো দরকার। এখন লিটন দাস আর সাব্বির একাদশে থাকলে আপনা আপনি একজন বোলার কমে যাবে। খুব স্বাভাবিকভাবে বোলিং শক্তিও দূর্বল হয়ে যাবে।

তার মানে পরিষ্কার, মুশফিকের বদলে লিটন দাস কিপিং করার অর্থ, সাব্বিরের বাদ পড়া। সাব্বিরের জায়গায় লিটন দাস সাত নম্বরে খেললেই জায়গা বেরিয়ে আসবে। তখন আট নম্বরে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, নাম্বার নাইনে তাইজুল ইসলাম , দশ এবং এগার নম্বরে দু’জন পেসার খেলতে পারবেন।এআরবি/আইএইচএস/বিএ

Advertisement