গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।তবে রফতানিমুখী শিল্প এবং অভ্যন্তরীণ যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান গ্যাস ব্যবহার করে তারা সমস্যায় পড়বে। যার চূড়ান্ত ভুক্তভোগী হবে সাধারণ মানুষ এমনটাই মনে করেন তিনি। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) দুই ধাপে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর জাগো নিউজকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, আমরা গ্যাসের দাম বাড়ানোর পক্ষে নই। তবে গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে। তাই গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। এজন্য আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম গ্যাসের দাম দেরি করে বাড়াতে। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা বেসরকারি খাতের ওপর ছেড়ে দেয়ার।‘কিন্তু এখন সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। এতে যেসব শিল্প রফতানি করেন তারা সমস্যায় পড়বে। তাদের খরচ বেড়ে যাবে। তাই এ ধরনের শিল্পের ক্ষেত্রে বাড়তি দাম না নেয়াই উচিত’ বলেন মাতলুব আহমাদ।এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে রফতানিমুখী শিল্পের পাশাপাশি যেসব অভ্যন্তরীণ শিল্প প্রতিষ্ঠান গ্যাস ব্যবহার করে তাদের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে জিনিসপত্রের দামও বেড়ে যাবে। যার চূড়ান্ত ভুক্তভোগী হবে সাধারণ মানুষ। তাই গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষদেরই বেশি ভুগতে হবে।বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে মাতলুব আহমাদ বলেন, এখন বাংলাদেশে বিদেশিরা বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিছুদিন আগে চীনের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল ঘুরে গেছে। তারা বলেছেন, এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ সব থেকে ভালো।এ পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বাড়ানো বিনিয়োগে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। কারণ বাংলাদেশে গ্যাসের দাম বিদেশের থেকে এখনো অনেক কম। সুতরাং গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে না বলে মরে করেন তিনি। গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম জানান, আগামী ১ মার্চ থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। বাড়তি দাম দুই ধাপে কার্যকর হবে। সে অনুযায়ী, ১ মার্চ থেকে আবাসিক খাতে দুই চুলার জন্য ৮০০ এবং এক চুলার জন্য ৭৫০ টাকা গুণতে হবে।দ্বিতীয় ধাপে জুন থেকে দুই চুলার জন্য ৯৫০ এবং এক চুলার জন্য ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।এছাড়া বাণিজ্যিক খাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম মার্চে ১৪.২০ টাকা এবং জুনে ১৭.০৪ টাকা হবে। আর সিএনজির দাম মার্চে প্রতি ঘনমিটার ৩৮ ও জুনে ৪০ টাকা করা হয়েছে। আর বিদ্যুৎ খাতে ১ মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম হবে ২ টাকা ৯৯ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৮ টাকা ৯৮ পয়সা, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ১৪ টাকা ২০ পয়সা, ৭ টাকা ২৪ পয়সা এবং সিএনজিতে ৩৮ টাকা করা হয়েছে।দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে বিদ্যুৎ খাতে ৩ টাকা ১৬ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ার ৯ টাকা ২২ পয়সা, শিল্প খাতে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা, বাণিজ্যিকে ১৭ টাকা ৪ পয়সা, সিএনজিতে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।এমএএস/এএইচ/পিআর
Advertisement