খেলাধুলা

বাদাম বিক্রেতা রোলবল খেলোয়াড় এখন লাখোপতি

সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটি গ্রহণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করলো দ্বীন হাসান হৃদয়। বঙ্গবন্ধু কন্যার আদরমাখা হাত তখন হৃদয়ের মাথায়। কিছুদিন আগে পিতৃহীন যে কিশোরটি সংসার চালাতো বাদাম বিক্রি করে, ক্ষণিকের জন্য তাকে মনে হলো দেশের সবচেয়ে সুখী মানুষ। প্রধানমন্ত্রীকে সালাম করে সোজা হয়ে দাঁড়াতেই হৃদয়ের সামনে ১ লাখ টাকার চেক, সঙ্গে চেকের বড় এক রেপ্লিকা। ১৩ বছরের হৃদয়ের মুখের হাসি তখন যেন আলো ছড়াচ্ছিল নবনির্মিত শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে। দেশের রোলবলের নতুন তারকা হৃদয়ের জীবনের গল্পটা জেনে গেছেন অনেকেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়া, তার হাত থেকে কোনো পুরস্কার গ্রহণ- এ সবই ছিল হৃদয়ের স্বপ্নের সীমানারও বাইরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে না দেখা সে স্বপ্নই ধরা দিল হৃদয়কে। দেশের সবচেয়ে বড় অভিভাবকের হাত থেকে নিল রোলবল বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার এবং অর্থের চেক।বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের ক্রেস্টের মর্ম বোঝার মতো পরিপক্বতা হয়তো এখনো আসেনি হৃদয়ের; কিন্তু সংসার জীবনে টাকার প্রয়োজনীয়তা এ বয়সে ঠিকই বুঝেছে সে। যার কাছে ১০ টাকার একটি নোটের ওজনই ছিল বিশাল, একটি সপ্তাহ কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে না যেতেই সেই হৃদয়ের হাতে লাখ টাকার চেক। রাতারাতি লাখোপতি হয়ে যাওয়াটাও যে তার কল্পনার বাইরে! রাতারাতি কোটিপতি বনে যান অনেকে। তবে হৃদয় লাখোপতি হয়েছে মানুষের হৃদয় জয় করেই। দেশের অপ্রচলিত খেলা রোলবলের বিজ্ঞাপন এখন হৃদয়। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেছে। বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তোলার নায়ক যে হৃদয়ই! ৮ ম্যাচে গোল করেছে ২৯টি, যা দেশের মোট গোলের ৪০ ভাগেরও বেশি। তার হাতেই যে মানিয়েছে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার! হৃদয় যে দর্শকের চোখেও ছিল সেরা খেলোয়াড় তার প্রমাণ মিলেছে পুরস্কার নিতে তার মঞ্চে ওঠার পরই। রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্স যে তখনই বেশি আওয়াজ তুলেছিল। করতালি আর হৃদয় হৃদয় স্লোগানের কাছে সব কিছুই হয়েছিল ম্লান।শুধু গোল করতেই দক্ষ নয় হৃদয়, সমান দক্ষ গোল করাতেও। প্রতি আক্রমণ থেকে ছোটখাটো গড়নের হৃদয়ের কাছে পরাস্ত হয়েছে অনেক দীর্ঘদেহী খেলোয়াড়ও। সে এখন বাংলাদেশেরই নয়, বিশ্বের সেরা রোলবল খেলোয়াড়। অনেকের মতে, দেশের রোলবলকে বদলে দিয়েছে হৃদয়। এখন রোলবল হয়তো বদলে দেবে তার জীবন। আরআই/আইএইচএস/জেআইএম

Advertisement