“পুরুষকে আমি ভালবাসি আমার সমকক্ষ সঙ্গী হিসাবে; তবে তার রাজদণ্ড, সত্য বা আরোপিত, যেনো আমার দিকে প্রসারিত না হয়, যদি না কোনো ব্যক্তির যুক্তিবুদ্ধি দাবি করে আমার শ্রদ্ধানুগত্য; এমনকি তখনো আমার আনুগত্য হবে তার বুদ্ধির কাছে, পুরুষটির কাছে নয়।” - মেরি ওলস্টোনক্র্যাফটবিশ শতকের অন্যতম সেরা নারীবাদী লেখক সিমোন দ্য বোভেয়ার তাঁর ‘দ্য দাজিয়েম অব সেক্স’ বইতে উল্লেখ করেছিলেন যে, ‘স্ত্রী লিঙ্গ তার প্রজাতির শিকার।’ পুরুষ যেখানে অতিক্রম করে গেছে তার শরীর, সেখানে নারী বন্দি হয়েছে নিজের শরীরের কাছে। পশুর মতো শুধু সন্তান জন্ম দেওয়াই হয়ে গেছে তার একমাত্র কর্তব্য। নারীর এই প্রকৃতিগতভাবে দুর্বল শরীরই তাকে পরাজিত করেছে পুরুষের কাছে। ঋতুস্রাব, গর্ভধারণ, প্রসবের মতো প্রকৃতিপ্রদত্ত জৈব শিকলে আটকা পড়ে নারী হারিয়েছে তার আত্মনির্ভরতা এবং সৃষ্টিশীলতা। অন্ন এবং আশ্রয়ের জন্য তাদের নির্ভর করতে হয়েছে পুরুষের উপর। অন্যদিকে এইসব জৈব পর্যায়কে অতিক্রম করে সে হয়ে উঠেছে সৃষ্টিশীল এক ঈশ্বর। ক্রমান্বয়ে দখল করে নিয়েছে সমাজকে। সৃষ্টি করেছে সামাজিক নিয়ম কানুনের। স্বাভাবিকভাবেই যা গিয়েছে তার অনুকূলে। এই অনুকূল সামাজিক নিয়ম কানুনের কারণে সে হয়েছে আরো শক্তিশালী, আরো শক্তভাবে সে পরিয়ে দিয়েছে দাসত্বের শৃঙ্খল নারীর কোমল পায়ে। পুরুষের জন্য যৌনতা বিলানো, তার মনোরঞ্জন করা এবং নরের ঔরসজাত সন্তানকে গর্ভে ধারণ এবং লালন করা ছাড়া নারীর আর অন্য কোনো ভূমিকা থাকবে না পুরুষ সৃষ্ট এবং পুরুষ নিয়ন্ত্রিত পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায়। পুরুষতন্ত্র তার নিজের টিকে থাকার স্বার্থে তৈরি করেছে বিপুল পরিমাণ আইন-কানুন এবং বিধিবিধান। পলেন দ্য লা বারে যেমন বলেছেন, ‘পুরুষেরাই প্রণয়ন করেছে সমস্ত আইন, তাই তারা পক্ষপাত দেখিয়েছে নিজেদের লিঙ্গের প্রতি, আর বিচারকেরা ওই সমস্ত বিধিবিধানকে উন্নীত করেছে নীতির স্তরে। এই বিধিবিধানের বিরুদ্ধে নারী যাতে কখনো বিদ্রোহ না করে, সে কারণে পুরুষতন্ত্র এই সব বিধিবিধানে পরিয়েছে ধর্মের আবরণ। ঈশ্বর সৃষ্ট আইন বলে যুগে যুগে পুরুষ তার নিজের আইনকেই সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে সমাজে, ফায়দা তুলে নিয়েছে সমাজের সব স্তর থেকে। বেগম রোকেয়া পরিষ্কার করেই এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বলেছেন এভাবে, “আমাদের যথাসম্ভব অধঃপতন হওয়ার পর দাসত্বের বিরুদ্ধে কখনও মাথা তুলিতে পারিনাই। যখনই কোনো ভগ্নী মস্তক উত্তোলনের চেষ্টা করিয়াছেন, অমনই ধর্মের দোহাই বা শাস্ত্রের বচনরূপ অস্ত্রাঘাতে তাঁহার মস্তক চূর্ণ হইয়াছে। আমরা প্রথমতঃ যাহা সহজে মানি নাই, তাহা পরে ধর্মের আদেশ ভাবিয়া শিরোধার্য করিয়াছি।”২. পিতৃতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোর বিরুদ্ধে বিংশ শতাব্দীতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলো পাশ্চাত্যের নারীবাদী নারীরা। পুরুষতন্ত্র নারীকে যে রূপে দেখতে পছন্দ করে, সেটাকে প্রত্যাখান করে শুরু হয় নারী, পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় নারীবাদী ঢেউ অতিক্রম করে সেই লড়াই এখন এসে পৌঁছেছে নারীবাদ-পরবর্তী পর্যায়ে। বাংলাদেশে নারীবাদের নিস্তরঙ্গ সমুদ্রে প্রথম ভয় জাগানো বড় ঢেউ, বিপুল আলোড়ন তোলেন তসলিমা নাসরিন। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম র্যা ডিক্যাল নারীবাদী। পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে গুঁড়িয়ে দিয়ে নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন তিনিই প্রথম। আজ তাঁকে অনুসরণ করে বাংলাদেশে অসংখ্য নারীই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ দান করেছেন। সাদিয়া নাসরিন তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন। সাদিয়া নাসরিনের নারীবাদী হয়ে ওঠাটা এক ধরনের অনিবার্যই ছিলো। যে পরিবেশের মধ্য দিয়ে তিনি গিয়েছেন, সেখানে সমাজই তাঁকে ধাক্কা দিয়ে নারীবাদীতে পরিণত করেছে। আমাদের সমাজ পুরুষতান্ত্রিক, নারীর জন্য অবান্ধব এবং শত্রুভাবাপন্ন, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু, এর ভয়াবহতা কতোটুকু, একজন নারীকে ঠিক কোন পর্যায়ের বৈষম্য সহ্য করতে হয়, কোন স্তরের অপমান এবং অনিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত যেতে হয়, সেটা আমাদের পুরুষদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। এরকম অবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়া যে কোনো সচেতন নারীরই নারীবাদে দীক্ষা নেওয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর থাকে না। সাদিয়া নাসরিনকেও এমন এক অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, যেটা তাঁকে করে তুলেছে প্রতিবাদী এক নারীতে, পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি নেমে গেছেন নিজের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যাবার পরে। তাঁর নিজের ভাষাতেই শুনি, কোন পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছে।“সাত বছরের আর পাঁচ বছরের দুটো কন্যা শিশুকে দু’পাশে নিয়ে নামাজ পড়ছে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক মা। শিশু দুটো নামাজ পড়তে জানে না। তাই মা যখন সুরা পড়ে তখন তারা পড়ে, “আল্লাহ একটা ভাই দাও”। মা রুকুতে গেলে তারাও রুকুতে গিয়ে বলে “আল্লাহ একটা ভাই দাও। পরমেশ্বরের কাছে সিজদা দিয়ে ভিক্ষা চায়, “আল্লাহ একটা ভাই দাও”।সাত বছরের সেই শিশু কন্যাটি আমি। যে দেখেছে পরপর দুটো কন্যা জন্ম দেওয়ার অপরাধে বাবা মাকে বিশাল একটা বাড়ির তলানিতে পড়ে থাকতে। “তোর কী আছে, দুটো মেয়ে ছাড়া। সকাল-বিকাল এই একটি প্রশ্ন কীভাবে তার লম্বা-চওড়া আব্বাকে সিংহ থেকে বেড়াল বানাতে থাকে তা দেখেছে ওই মেয়েটি খুব কাছে থেকে। দেখতে দেখতে বুঝেছে এই সমাজে মেয়ে জন্ম নিয়তি মাত্র, মেয়ে শিশুর জন্য কেউ মালা চন্দন নিয়ে অপেক্ষা করে না, শুধু মেনে নেয়।নারীবাদী হয়ে কেউ জন্মগ্রহণ করে না, ক্রমশ নারীবাদী হয়ে উঠে। আমিও তাই হয়েছি। নারীর প্রতি বৈষম্য, নিগ্রহ আর পীড়ন পোড়নের বিরুদ্ধে যখন থেকে বলতে শুরু করেছি, ঘাড় শক্ত করে হাঁটতে শুরু করেছি, যখন থেকে নারীকে ‘পরোক্ষ’ করে রাখার সব নিয়ম কানুন নিয়ে প্রশ্ন করেছি, সমান অধিকারের জন্য লড়াই করেছি, তখন থেকেই লোকে আমাকে‘নারীবাদী’বলতে শুরু করেছে।”সাদিয়ার যে অভিজ্ঞতা আমাদের সমাজ থেকে প্রাপ্ত, সেটা আলাদা কিছু নয়। প্রায় প্রতিটা মেয়েকেই প্রতি মুহূর্তে একই রকমের তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই সমাজে তার জন্ম, তার আগমন প্রার্থিত কিছু নয়, নয় স্বাগত জানানোর মতো আনন্দময় কিছু। বৈরী সমাজ বিরূপ এক মনোভাব নিয়ে অনিচ্ছায় বরণ করে কন্যা শিশুকে। আমার শ্বশুরের প্রথম চার সন্তানই কন্যা ছিলো। পঞ্চম সন্তানও যখন কন্যা হিসাবে মর্তে এলো, সেই খবর শুনে আমার দাদি শাশুড়ি আতুর ঘরের দরজায় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন সুবিশাল শোক সহ্য করতে না পেরে।৩. তো এই নারীবাদী সাদিয়া নাসরিন এ বছর একটা বই প্রকাশ করেছেন। তাঁর বইয়ের নাম ‘দাস জীবনের মালিক নারী?’এটা ছকে বাঁধা কোনো গ্রন্থ নয়। লেখক নানা সময়ে নারীর অধিকার আদায়ের জন্য নানা ধরনের প্রবন্ধ লিখেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। এরকম বেশ কিছু প্রবন্ধকে এক সাথে সংকলিত করে জন্ম নিয়েছে এই বই। প্রবন্ধগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক কোনো ক্রমসংযোগ নেই, বিচ্ছিন্নভাবেই সেগুলো এসেছে বইতে। কিন্তু, বিচ্ছিন্নভাবে এলেও এরা আলাদা কিছু না। প্রতিটা প্রবন্ধের যে মূল বক্তব্য সেটাই এই আপাত বিচ্ছিন্ন প্রবন্ধগুলোর কেন্দ্রভূমি। একে আবর্তন করেই সেগুলো জড়ো হয়েছে, একটা সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দাঁড় করিয়েছে একত্রীভূত হবার শক্তি থেকে। নারীবাদ কী, নারীর প্রতিবাদের ভাষা কী, কার বিরুদ্ধে নারীর লড়াই, নারীর শৃঙ্খলিত দশা, নারী নির্যাতন, নারী্র নিজস্ব ঠিকানা, তার নিজস্ব অস্তিত্ব ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে সাবলীলভাবে লিখে গিয়েছেন তিনি। এইসব লেখা বই আকারে কখনো বের হবে সেই চিন্তা থেকে লেখা হয়নি খুব সম্ভবত। যখন যে অভিজ্ঞতা লেখকের সামনে এসেছে, যখন যে ভাবনা তাকে আবেগী কিংবা কাতর করেছে কিংবা দ্রোহ এবং বিদ্রোহে পুড়িয়েছে, তাই কালো অক্ষরে প্রবন্ধের রূপ নিয়েছে। বই প্রকাশের সময় আপাত বিচ্ছিন্ন এই মুক্তোগুলোকে একটা সুতো দিয়ে মালার মতো গেঁথে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই তৈরি হয়ে গিয়েছে এমন এক বই, যা অবশ্যপাঠ্য বাংলাদেশের সকল নারীর জন্য।শৃঙ্খলিত জীবন থেকে মুক্তির ইচ্ছা সবারই থাকে, থাকে না শুধু সাহস। এই বই বাংলাদেশের নারীদের মনে কিছুটা হলেও সাহস সঞ্চারিত করবে, সেটা নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়। পুরুষের জন্যও এই লেখা আবশ্যিক পাঠ্য। বিজয়ী লিঙ্গ হিসাবে, সমাজ পুরুষবান্ধব হবার কারণে পুরুষ কখনোই নারীর কষ্ট, তার বৈষম্যের জায়গাটাকে উপলব্ধি করতে পারে না, দেখতে পায়না কাঁটার আঘাতে নারীর ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত অবস্থা। এই বই পাঠে কিছুটা হলেও চোখ খুলতে পারে তাদের। নারীর অধিকার আন্দোলনের সংগ্রাম শুধুমাত্র নারীর একার নয়, এটা পুরুষেরও সংগ্রাম। কারণ, নারী-পুরুষ, এই দুই লিঙ্গ মিলেই গড়ে ওঠে মানুষ নামের প্রজাতিটি। এখানে একজনকে পিছনে ফেলে আরেকজন এগিয়ে গেলে এক লিঙ্গের জয় হবে ঠিকই, কিন্তু আসল পরাজয় ঘটবে মানুষের। সেরকম অবস্থা কখনো হোক, এটা নিশ্চয়ই আমরা কেউ চাই না।আমরা না চাইলেও বাংলাদেশ প্রতি মুহূর্তে পিছিয়ে যাচ্ছে মধ্যযুগে। আধুনিক ধ্যান ধারণা খুব দ্রুত লোপ পেয়ে পিছনের দিকে ধেয়ে চলেছি আমরা। ষাট এবং সত্তরের দশকে আমাদের নারীরা যতোখানি অগ্রসর ছিলো, চিন্তা-চেতনায় উন্নত ছিলো, শৃঙ্খলবিহীন ছিলো, আজকের যুগে এসে সেটা আর দেখতে পাওয়া যায় না। শিক্ষিত নারীরাও আজকাল যেসব বিশ্বাস পোষণ করেন, সেগুলো সমাজ প্রগতির জন্য শুধুমাত্র অন্তরায়ই নয়, প্রচণ্ড রকমের ক্ষতিকর বলা চলে। এই পরিস্থিতিতে সাদিয়া নাসরিনের দ্যর্থহীন উচ্চকণ্ঠ উচ্চারণ, তাঁর চিন্তার প্রাগসরতা, তাঁর সাহস এবং আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশের অগণিত নারীর জন্য হয়ে উঠতে পারে জেগে ওঠার প্রেরণা। ভয়কে জয়করে সামনের দিকে পা ফেলতে গেলে আলোকবর্তিকা হাতের কাউকে সামনে থাকতে হয়। সাদিয়া নাসরিন আর তাঁর দাস জীবনের মালিক নারী? সেই ভূমিকা নেবে বলেই আমার বিশ্বাস।৪. ‘দাস জীবনের মালিক নারী?’গ্রন্থের লেখকের লেখার হাত দারুণ। ঝরঝরে গদ্যে সাবলীলভাবে বক্তব্য পেশ করার ব্যাপারে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। বেশিরভাগ লেখাই তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাজাত হবার কারণে এবং এই বিষয়ে তাঁর নিজস্ব প্রবল আবেগ জড়িত থাকায়, পাঠকের কাছে তা খুব জোরালো এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। বিষয়বস্তুর উপর লেখকের দুর্দান্ত দখল থাকার কারণে প্রতিটা লেখাই হয়ে উঠেছে বলিষ্ঠ এবং বস্তুনিষ্ঠ। এটা পাঠকের কাছে বইটার গ্রহণযোগ্যতা তৈরিতে সাহায্য করবে। সুখপাঠ্য এই বইটাতে বেশ কিছু বানান ভুল এবং মুদ্রণ বিভ্রাট আছে। একটু সচেতন হলেই এগুলোকে নিশ্চয়ই এড়ানো যেতো। আগামী সংকলনে ভুলগুলোকে প্রকাশক শুদ্ধ করে নেবেন, সেই আশাবাদ রইলো।বইটার বহুল প্রচার এবং সেই সাথে লেখকের সাফল্য কামনা করছি। প্রতিনিয়ত সোনা ফলুক তাঁর কলম থেকে। সেই সাথে অশ্রুধারা মোচন করে বাংলাদেশের মেয়েরা একেকজন বহ্নিশিখা হয়ে উঠুক, এই বাসনার কথাও জানিয়ে গেলাম। নারী হওয়া নয় কিংবা নারী হয়ে থাকা নয়, নয় সম্ভোগের সামগ্রী হয়ে নীরব থাকা, তার বদলে প্রবল আক্রমণে পিতৃতন্ত্রকে সমূলে উচ্ছেদ করে মানুষ হবার ব্রত নিয়ে অগ্রসর হোক আজকের নারীরা।লেখক: ক্যানাডা প্রবাসী লেখক ও ব্লগার।এইচআর/পিআর
Advertisement