ভাষা শহীদদের স্মরণের আবেগ ঘনীভূত হয়েছে একুশের প্রথম প্রহর। দেশত্ববোধের চেতনায় বাঙালির মেজাজ যে শাণিত হচ্ছে, তার নজির মিললো শহীদ দিবসে অমর একুশে বইমেলাতেও। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আর বইমেলায় আজ একই সুতোঁয় গাঁথা। প্রভাতফেরির দীর্ঘ লাইন এসে মিলেছে প্রাণের মেলাতে। পায়ে পায়ে মিলছে পা, হাতের মুঠোয় স্বজনের হাত। বাংলা একাডেমি আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিল ধরার ঠাঁই নেই। জনস্রোতে রূপ নিয়েছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বইমেলার দ্বার খোলে সকাল আটটায়। সেই থেকেই মেলায় জনস্রোত মিলতে থাকে। দুপুরের পর থেকেই চিত্র পাল্টে যায়। রাজধানীর সমস্ত পথ এসে মিশে যায় বইমেলায়। মহান ভাষা দিবসের ভাব ফুটে উঠে মেলা আঙ্গিনায়। মেলায় আগতদের পরিহিত পোশাকেও ছিল একুশের ছাপ। সাদা-কালোয় ফুটে উঠে শ্রদ্ধা-ভক্তির ভাবগাম্ভীর্য।শাহবাগ থেকেই জনতার ঢল। টিএসসি মোড়ে আসতেই পায়ের গতি স্লোথ হতে থাকে। একই চিত্র দোয়েল চত্বরেও। দীর্ঘ লাইন। সময় গড়াতে লাইন আরও দীর্ঘতর হয়।আয়োজকরা বলছেন, মেলা শুরুর ইতিহাসে এমন দীর্ঘ লাইন আর কখনও লক্ষ্য করা যায়নি। সেই বিবেচনায় দর্শনার্থী আগমনের রেকর্ড গড়বে এবারের শহীদ দিবসে।বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, সকাল থেকেই একাডেমিতে অবস্থান করছি। এত ভীড় আগে কখনও লক্ষ্য করিনি। মানুষের আবেগ দেখে সত্যিই অভিভূত হচ্ছি। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে মানুষ যেমন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, তেমনি সাহিত্য প্রেমেও আসক্ত হচ্ছে। এটি আমাদের শিল্প-সাহিত্যের জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করি।মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. সচিব জালাল আহমেদ বলেন, জনতার ঢল নেমেছে। এবারে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ এসেছে, তা বলা যেতেই পারে। অন্য ছুটির দিনেও দর্শনার্থী আসে। কিন্তু এত মানুষ আগে দেখেনি। আমরা এ দিনটির জন্য বিশেষ প্রস্তুতিও নিয়েছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।এ দিন বইও বিক্রি হয়েছে বেশ -তা জানালেন সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদ। বলেন, এ দিনটির অপেক্ষায় থাকি। যা ধারণা করেছিলাম তার চেয়ে অধিক মানুষ এসেছে মেলায়। বই বিক্রি হচ্ছে বেশ। তবে সবাই একটি করে বই কিনলেই মেলা আয়োজনের সার্থকতা বলে মনে করি।এএসএস/আরএস/আরআইপি
Advertisement