দেশজুড়ে

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রীর নির্দেশ

চিকিৎসকদের হাতে মার খেয়েও বাবাকে সুস্থ করে বাসায় নিতে পারলেন না রউফ। অবশেষে মারা গেলেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ বাবা আলাউদ্দিন সরকার। মঙ্গলবার সকালে তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় মারা যান। আব্দুর রউফ সরকার অভিযোগ করে বলেছেন চিকিৎসকদের অবহেলায় তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন চিকিৎসার তার কোনো ত্রুটি করা হয়নি।এর আগে রোববার সকালে ওই হাসপাতালে আব্দুর রউফ সরকার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন। মারধর ও কান ধরিয়ে উঠ বস করানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসকদের নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।ওই ঘটনার পর উল্টো শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল। পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়।কর্মকর্মবিরতি চলাকালে মানববন্ধনে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের হাতে থাকা একাধিক প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমালোচনা ওঠে। তাতে লেখা ছিল- ‘তুমি যদি মানুষ হতে, হতাম ডাক্তার মশাই। তুমি যে ভাই পশু বনের, আমি যে তাই কসাই’। হবু চিকিৎসকদের এই আচরণ নিয়ে গণমাধ্যমে সমালোচনার মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিষয়টির হস্তক্ষেপ করেন।একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, রোগীদের ভোগান্তিতে রেখে, জিম্মি করে, অহেতুক যারা হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যেই মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই নির্দেশনা অনুযায়ী দোষী ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ইন্টার্নশিপ বাতিল করা হতে পারে।উল্লেখ্য, আলাউদ্দিন সরকারকে (৬০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেড না পেয়ে ঠাঁই হয় মেডিসিন বিভাগের ৪৭৫ নম্বর কক্ষের মেঝেতে। বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ খুঁজতে গিয়ে পরদিন তার ছেলে আব্দুর রউফ ইন্টার্ন চিকিৎসককে আপা বলে সম্বোধন করার কারণে ইন্টার্ন চিকিৎসরা আব্দুর রউফকে কয়েক দফা মারপিট করে। তাকে ১০০ বার কান ধরে উঠবস করতে বাধ্য করে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়া পরিবারের দুই নারী স্বজনকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এই ঘটনার ভিডিও দৃশ্য স্যোসাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।বিভিন্ন মহল থেকে ঘৃণা ও প্রতিবাদের মুখে পড়ে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য ইন্টার্ন ডাক্তারা উল্টো বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতিতে যায়। অবশেষে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসা সেই আলাউদ্দিন সরকার মঙ্গলবার ভোরে মারা যান। আলাউদ্দিন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার  কোনাগাতি গ্রামের বাসিন্দা। মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই শাহ আলম জানান, ভোরে আলাউদ্দিন মারা যাওয়ার পর তার স্বজনরা লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়েছেন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মাসুদ আহসান জানান, আলাউদ্দিনকে সুস্থ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা তার চিকিৎসার জন্য একটি বোর্ডও গঠন করেছিলাম। আমি নিজে তদারকি করেছি। লিমন বাসার/এমএএস/আরআইপি

Advertisement