রাজনৈতিক অনুদারতা অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। রোববার মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, সরকারের দক্ষতা ও সক্ষমতার অভাবে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির অর্জন সম্ভাব হচ্ছে না। নীতি ও প্রশাসনিক সংস্কার করা না হলে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকীতে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে না।‘২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজাট প্রস্তাব’ শীর্ষক ওই সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।দেবপ্রিয় বলেন, একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা অন্যদিকে অনুদার রাজনৈতিক সংস্কৃতি ব্যক্তি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করছে। বাজেট বাস্তবায়নে সক্ষমতার অভাবসহ আরো বেশ কিছু কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ এর আশপাশে আটকে রয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক অনুদারতা প্রবৃদ্ধিকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বাধাগ্রস্ত করবে। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। রাজস্ব আদায়ে এনবিআরকে আধুনিকায় করতে হবে। এছাড়াও ভিন্ন কর নীতির সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেণ তিনি।বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের বাজেটের বড় দুর্বলতা হলো এর ভুল অনুমিতি। এক দশকের বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বুঝতে শিখেছি অনুমিতি বা প্রাক্কলনের চাইতে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা দরকার। এজন্য এবারের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা কোনো ধরনের প্রক্কলিত অংক দেয়নি। আমরা সরকারের যে সব জায়গাতে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই দুর্বলতাগুলো শুধরে নিতে পারলে বাজেট বাস্তবায়ন আরো গতিশীল হবে।বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনীতির বড় বড় সূচক স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, মূল্যস্ফিতি নিম্নমুখী, বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হার নিম্নমুখী, টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল, বৈদেশিক আয়-ব্যয়ের স্থিতিতে উদ্বৃত্ত রয়েছে, বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম থাকায় ভর্তুকির উপর চাপ কম রয়েছে। তবে এসব সূচক ভাল থাকলেও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সংস্কার না হলে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভাব হবে না। একই সঙ্গে নীতি ও কাঠামোগত সমস্যা থাকায় ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগে তেজিভাব দেখা যাচ্ছে না।আইএমএফের বিভিন্ন শর্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দাতা সংস্থা যে সব শর্ত দেয় সেগুলো আমরা অাভ্যন্তরিণভাবেই পূরণ করতে পারি। কিন্তু সরকারের সক্ষমতা কমার কারণে এই ধরনের দাতাসংস্থাকে ডেকে আনেন। এসব শর্ত ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী ইশতেহারেই রয়েছে। সদিচ্ছা থাকলে তারা নিজেরাই এগুলো পূরণ করতে পারেন।এসআই/এএইচ/একে/আরআই
Advertisement