বিনোদন

ছবিতে হুমায়ূন আহমেদকে উপস্থাপন নিয়ে আপত্তি : শাওন

মুক্তির আগে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘ডুব’ ছবিটি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত এ ছবিতে অভিনয় করেছেন বলিউডের ইরফান খান, তিশা, পার্নো মিত্র ও রোকেয়া প্রাচী। কথিত আছে, ছবিটি হুমায়ূন আহমেদের জীবনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে! আগামী বৈশাখ মাসে ‘ডুব’ মুক্তির লক্ষে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সেন্সর প্রিভিউ কমিটিতে জমা দেয়া হয়। এরপর হুমায়ূনপত্নী মেহের আফরোজ শাওন তার আশঙ্কার কথা জানিয়ে সেন্সর বোর্ডে চিঠি দেন। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে ‘ডুব’ সাময়িক স্থগিত করা হয়। তখন ছবির মুক্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এরপর ‘ডুব’ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম মুখরোচক সব খবর পরিবেশন করতে শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে কিছুটা বিরক্ত শাওন। কারণ বিভ্রান্তিকর কিছু খবর তাকে নাড়া দিয়েছে। সে কারণে তিনি রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডির বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।শাওন বলেন, ‘ডুব’ ছবিতে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের কিছু স্পর্শকাতর বিষয় তুলে ধরা হয়েছে বলে আমি জেনেছি। আমি প্রথমে বিষয়টি জানতে পারি বাংলাদেশ-ভারতের প্রথমসারির কিছু গণমাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদের জীবনী নিয়ে ডুব ছবিটি নির্মিত হয়েছে এমন খবর পড়ে। তারপর আমি বিস্মিত হই!শাওন আরও বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এদেশের একজন নামকরা নির্মাতা। তিনি চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন ভালো কথা। কিন্তু যাকে নিয়ে ছবি বানানো হলো, তার পরিবারের অনুমতি না নিয়ে বানালেন এটা হবে কেন? আমার মূল আপত্তি হচ্ছে, ছবিতে হুমায়ূন আহমেদের উপস্থাপন নিয়ে। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবির এই নির্মাতা আরও বলেন, ‘ডুব’ নির্মাণের শুরু থেকেই ফারুকী ছবির গল্প নিয়ে কোথাও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। এখানে আমার সন্দেহটা আরও ঘনীভূত হয়। তিনি বলেন, ছবিটি সেন্সর প্রিভিউ কমিটিতে জমা পড়লে আমি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডকে একটি লিখিত চিঠি দেই, এটি হুমায়ূন আহমেদের জীবনী নিয়ে নির্মিত কি না কনফার্ম হওয়ার জন্য। চিঠিতে কোথাও অভিযোগের কিছু বলিনি। ছবিটি নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে উল্লেখ করে শাওন জানিয়েছেন, আমি নিজেও একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। কোনো নির্মাতা বা নির্মাণের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। আমি কোনো চলচ্চিত্র নিষিদ্ধের কথাও বলিনি। কিন্তু হুমায়ূনের স্ত্রী হিসেবে এবং ভক্ত-পাঠক হিসেবে হুমায়ূনকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা কোনো চলচ্চিত্রের পক্ষে আমার অবস্থান থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। আশঙ্কার কথা জানিয়ে শাওন বলেন, চলচ্চিত্র একটি শক্তিশালী মাধ্যম। দর্শকের মধ্যে অনেক হুমায়ূন ভক্ত আছেন। নতুন প্রজন্মের এমন অনেক দর্শক আছেন যারা হুমায়ূন আহমেদের পড়া শুরু করেছেন মাত্র। তারা ছবিটি দেখে ভুল তথ্য পাবেন। আমার দুটি সন্তান আছে। তাদেরও ভবিষ্যৎ আছে। বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের মধ্যে তারা কেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে? এসব বিবেচনায় হুমায়ূন আহমেদের জীবনী নিয়ে নির্মিত সিনেমায় আমার আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ আছে।   যোগ করে শাওন বলেন, হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের একজন কিংবদন্তি লেখক। তিনি আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার মানে কি তাকে নিয়ে মনগড়া একটি কাহিনিচিত্র বানিয়ে ফেলা যাবে! ছবির চরিত্র যদি হয় বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় লেখক, যিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন- সংসার জীবনে তার দুটি অধ্যায় আছে এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যার জীবনাবসান হয়েছে। সেটি কার জীবন? এটা বুঝতে কোনো দর্শকের গবেষণা করার প্রয়োজন পড়ে না।এলএ/এনই/আরআইপি

Advertisement