খিদের যন্ত্রণায় ফলের দোকান থেকে একটি আপেল চুরি করে খাওয়ায় নাম সাইদুল (১০) এক শিশুর হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।শনিবার বেলা ১১টার দিকে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারের মার্কাজ মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। শিশু সাইদুল উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের জাকিরের মোড় এলাকার কৃষি শ্রমিক আবদুল মিয়ার ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজম আলী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।তিন বলেন, আপেলের দোকানের পাশে গ্রিলের সঙ্গে রশি দিয়ে শিশুটির হাত-পা বাঁধা ছিল। বেলা দেড়টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চাঁচকৈড় বাজারে হানিফের ফলের দোকান থেকে সাইদুল একটি আপেল নিয়ে দৌড় দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফলের দোকানদার হানিফ ও তার সহযোগী সিএনজি চালক পিন্টু এবং মাইক্রোবাসের চালক মজনু শিশুটিকে ধরে ফেলেন। একপর্যায়ে নাইলনের দড়ি দিয়ে গ্রিলের সঙ্গে সাইদুলের হাত-পা বেঁধে তারা মারধর করেন। সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শিশুটিকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আজ হাটের দিন হওয়ায় শত শত মানুষ ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করলেও শিশুটিকে উদ্ধার করতে কেউ এগিয়ে আসেননি। শিশু সাইদুল জানায়, সকালে সে কিছু না খেয়েই বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। খিদে যন্ত্রণায় সে আপেলটি চুরি করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু তারা ধরে মারধর করেছে। অনেক কান্নাকাটি, আকুতি জানানোর পরও তারা ছাড়েনি। সাইদুল আরও জানায়, আব্বা এখানে আসলে আপেলের দাম দিয়ে, বাড়ি যাইয়া ভাত খাব।আপেলের দোকানদার হানিফ বলেন, তিনি দোকান খোলা রেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছিলেন। আপেল নিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখে পিন্টু ও মজনু ড্রাইভার শিশু সাইদুলকে ধরে বেঁধে ফেলেন। রাগে ক্ষোভে সাইদুলকে চড় দেয়া হয়েছে। সাইদুলের বাবা এলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।সাইদুলকে নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে হানিফের সহযোগী পিন্টু ও মজনু বলেন, শিশুটির বাবা-মা এলে বিচার করে তাদের জিম্মায় সাইদুলকে ছেড়ে দেয়া হবে। তবে শিশু নির্যাতন অপরাধ, এমন আইন তাদের জানা নেই।গুরুদাসপুর থানা পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার মাহাতো বলেন, শিশুটি এখন থানা হেফাজতে আছে। তার বাবা আসলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।এএম/আরআইপি
Advertisement