নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবিতে ৮ জনের লাশ উদ্ধার করেছে ডুববিরা।নিহতরা হলেন, রুবেল (৩০) ,জাকির হোসেন (২৮), রুবেল (১৪), কাজল মিয়া (২৮), সাগর (১১), রাজিব (২২), করমজান বিবিকে (৫৫) উদ্ধার করে। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে সমির (৪০) নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়। তাদের সবাই ঢাকার লালবাগের শহিদ নগর এলাকার বাসিন্দা।বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর মতলবের বেলতলী থেকে সোলায়মান শাহ (লেংটা) এর মেলা থেকে একটি ট্রলারে করে ৭০-৮০ জন যাত্রী ঢাকার সদরঘাটে যাওয়ার সময় বুড়িগঙ্গা নদীতে ট্রলারটি ডুবে যায়। যাত্রীদের অনেকেই সাঁতরিয়ে তীরে উঠতে পারলেও অন্তত বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সাভির্স এর ডুবুরিদের দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় ৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।এদিকে বুড়িগঙ্গায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধারকৃত লাশগুলো ফতুল্লার আলীগঞ্জ খেলার মাঠ থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিহতের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে কেরানীগঞ্জ প্রশাসন।কেরানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নিহতের পরিবারের কাছে টাকাগুলো হস্তান্তর করে।ট্রলার ডুবিতে নিহত সমিরের ছেলে তমাল জানান, বেলতলী লেংটার মেলা থেকে ঢাকা লালবাগ যাওয়ার পথে আলীগঞ্জ এলাকায় আসা মাত্র আমাদের ট্রলারের তেল ফুরিয়ে যায়। এসময় ঢাকা থেকে ফতুল্লাগামী একটি বালুবাহী বাল্কহেড আমাদের ট্রলারকে ধাক্কা দেয়। এতে মুহূর্তেই আমাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। আমাদের ট্রলারে ওই সময় ৭০-৮০জন লোক ছিল। এদের মধ্যে থেকে আমার বাবাসহ ১২-১৪ জন নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ট্রলার নিয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় আমার বাবাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর নদী থেকে উদ্ধার করা লাশের খবর বলতে পারবো না। তবে শুনেছি ৭/৮ জন মারা গেছে।অপর দিকে নিহত রুবেলের বড় ভাই রবিন জানান, আমাদের ট্রলার ডুবির ৩ ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া ট্রলারসহ রুবেলকে উদ্ধার করে ফায়ার সাভির্সের ডুবরিরা। এছাড়া রাসেল, হাবিব, জন্টু, আবুল কালামের মা অসি বেগম ও পঙ্গু নারী ঐশি নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান জানান, ট্রলার ডুবির ঘটনা কেরানীগঞ্জ এলাকায় পড়েছে। তারপরও বুড়িগঙ্গা নদীতে ট্রলার ডুবে যাওয়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক এবিএম মমতাজউদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ১ জন মারা গেছে। এখনো ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনদের দাবি। ফায়ার সার্ভিসের ৭ সদস্যের একটি ডুবুরি দল কাজ করছে।কেরানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, ট্রলার ডুবির ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো কয়েকজন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।এমএএস/আরআই
Advertisement