‘ভাইজান, বাসাবাড়ির বাগানে ফোটা আর বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা গোলাপের মধ্যে আকাশপাতাল ফারাক। বাগানে একটি গোলাপ ফোটাতে মালিকে কত পরিশ্রম ও যত্নআত্তি করতে হয়। পাক্কা ২১ দিন পর গাছে একটা গোলাপ ফোটে। কিন্তু কৃত্রিমভাবে ফোটানো একটি গোলাপ মাত্র পাঁচদিনে ফোটানো হয়। সারসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে দ্রুত ফোটানো এসব গোলাপ অনেকটা ‘টেস্টটিউব বেবি’র মতো। আগামী বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালনে এই টেস্টটিউব গোলাপই ভরসা। তয় ভালোবাসা আসল না-কি কৃত্রিম তা কইতে পারুম না।’শাহবাগে ফুলের আড়তের সামনে দাঁড়িয়ে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সাভারের ফুল ব্যবসায়ী টিংকু অতীতে বাগানে ফোটা গোলাপ আর বর্তমানে চাষ করা গোলাপের মধ্যকার পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে এসব কথা বলেন।রাত তখন সাড়ে ১০টা। ট্রাকভর্তি গোলাপ নামছে শাহবাগের পাইকারি আড়তে। অন্যান্য দিন এ সময়টা রাস্তায় নীরবতা নেমে এলেও আজ মনে হবে যেন মাত্র সন্ধ্যা নেমেছে। গোলাপ ও রজনীগন্ধাসহ আগে থেকে অর্ডার করা ট্রাকভর্তি মালামাল নামাতে ব্যস্ত পাইকারি ব্যবসায়ীরা। মালামাল নামিয়ে পলিথিনে ঢুকিয়ে রাস্তার পাশে ফুটপাতেই সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। মধ্যরাতে ফুল কেনাবেচার ধুম পড়ে যাবে বলে তিনি জানান।আলম নামের এক গোলাপ ফুলের বাগান মালিক জানান, কষ্ট করে সারা বছর গোলাপ ফোটালেও তাদের মুনাফা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। সবচেয়ে বেশি মুনাফা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।তিনি জানান, বাগানে প্রচুর গোলাপ ফুল ফুটছে। ফলে তারা ব্যবসায়ীদের কাছে কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। অনেক সময় প্রতি একশ’ গোলাপ মাত্র ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে মধ্যে বিক্রি করতে বাধ্য হন। তবে আজ তারা প্রতি ১শ’ পিস গোলাপ ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন। তবে আজ দাম বেশি দিয়ে কিনলেও পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা একেক পিস গোলাপ আজ রাতে ২০ টাকায় বিক্রি করবেন। আগামীকাল ভালো গোলাপের একেকটি ৭০ টাকা থেকে ১শ’ টাকায়ও বিক্রি হতে পারে।রাজু মিয়া নামের একজন পাইকারি ফুল ব্যবসায়ী জানান, সারা বছর নামকাওয়াস্তে লাভে ব্যবসা চালান। পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আয় রোজগার খুব ভালো হয় বলে তিনি স্বীকার করেন।এমইউ/বিএ
Advertisement