ধর্ম

হজরত মুসা আলাইহিস সালামের প্রার্থনা

হযরত মুসা আলাইহিস সালাম যখন তুর পাহাড়ে আল্লাহ তাআলার কালামের গৌরব অর্জন করলেন এবং নবুওয়ত ও রেসালাতের দায়িত্ব লাভ করলেন, তখন তিনি নিজ সত্তা ও শক্তির ওপর ভরসা ত্যাগ করে স্বয়ং আল্লাহ তাআলারই দারস্থ হলেন।দুনিয়ায় দ্বীন প্রচারের কাজে সাহায্য লাভ করতে মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে পাঁচটি বিষয়ে প্রার্থনা করলেন। এ আবেদনগুলোর মতোই আমরা আল্লাহ তাআলা নিকট প্রার্থনা করতে পারি। যা তুলে ধরা হলো-প্রথম দোয়াহে পরওয়ারদেগার, আমার বক্ষ উম্মোচন করে দিন এবং এতে এমন প্রশস্ততা দান করুন যেন নবুওয়তের জ্ঞান বহন করার উপযোগী হয়ে যায়। ঈমানের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌছানোর ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে যে কটু কথা (শক্ত ও মন্দ কথা) শুনতে হয়; তা সহ্য করাও এর অন্তর্ভুক্ত।দ্বিতীয় দোয়া‘আমার কাজ সহজ করে দিন।’ আল্লাহ তাআলা যদি ইচ্ছা করেন, তবে কারও জন্যে কঠিন কাজগুলোও সহজ করে দেন এবং তিনি ইচ্ছা করলে সহজ কাজগুলোও কঠিন হয়ে যায়।একারণেই হাদিসে মুসলমানদেরকে এই দোয়া শিক্ষা দেয়া হয়েছে। তারা নিজেদের কাজের জন্য আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করবে, ‘হে আল্লাহ! প্রত্যেক কঠিন কাজ সহজ করার ব্যাপারে আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন। কেননা, প্রত্যেক কঠিন কাজ সহজ করে দেয়া আপনার পক্ষে সহজ।’তৃতীয় দোয়া‘আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে লোকেরা আমার কথা বোঝতে পারে।’ ফেরাউনের অগ্নি পরীক্ষায় আগুণের স্ফুলিঙ্গ মুখে দেয়ার ফলে শিশুকালে হজরত মুসা আলাইহিস সালামে জিহ্বা পুড়ে যায়। এতে তাঁর কথা স্পষ্ট হতো না। তাই তিনি এ দোয়া করেছিলেন।চতুর্থ দোয়া‘আমার পরিবারবর্গ থেকেই আমার জন্যে একজন উজির করুন।’ এই চতুর্থ দোয়া দ্বীন প্রচারে রেসালাতের করণীয় কাজ আনজম দোয়ার জন্যে উপায়াদি সংগ্রহ করার সাথে সম্পর্ক রাখে।পঞ্চম দোয়াহযরত মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর প্রথম দোয়ায় প্রথমে অনির্দিষ্টভাবে বলেছেন যে, আমার পরিবারবর্গ থেকেই আমার জন্যে একজন উজির করুন। অতঃপর নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে, আমি যাকে উজির করতে চাই, তিনি আমার ভাই হারূন। যাতে করে আমি রেসালাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতে তাঁর কাছ থেকে সাহায্য ও শক্তি অর্জন করতে পারি।হযরত হারূন আলাইহিস সালাম হযরত মুসা আলাইহিস সালাম থেকে তিন অথবা চার বছরের বয়োজ্যেষ্ঠ ছিলেন এবং তিন বছর পূর্বেই ইন্তেকাল করেন।মুসা আলাইহিস সালাম যখন এই দোয়া করেন, তখন তিনি মিসরে অবস্থান করছিলেন। আল্লাহ তাআলা মুসা আলাইহিস সালামের প্রার্থনার প্রেক্ষিতে তাঁকেও পয়গম্বর করে দেন। ফেরেশতার মাধ্যমে তিনি মিসেরই এ সংবাদ প্রাপ্ত হন।হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে যখন মিসরে এসে ফেরাউনকে কালেমার দাওয়াত দেয়ার জন্যে প্রেরণ করা হয়, তখন হজরত হারূন আলাইহিস সালামকে মিসরের বাইরে এসে তাঁকে অভ্যর্থনা করার জন্যে আদেশ দেয়া হয়েছিল।পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য কুরআনুল কারিমে পূর্ববর্তী নবি-রাসুলদের জীবনী ও ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তা থেকে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে রসদ লাভই হলো মূল উদ্দেশ্য।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পূর্ববর্তী সব নবি-রাসুলদের দোয়া থেকে শিক্ষা ও তাৎপর্য লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি

Advertisement