খেলাধুলা

২৯৯ রান পেছনে থেকে থেমে গেল বাংলাদেশ

ভারতের করা প্রথম ইনিংসে ৬৮৭ রানের পাহাড়সম রানের বিপরীতে ফলোঅন এড়াতেও বাংলাদেশের দরকার ছিল ৪৮৮ রানের। সাকিব-মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করলেন মুশফিক। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। তবে তার এই অসাধারণ সেঞ্চুরির পরও ফলোঅন এড়াতে পারলো না বাংলাদেশ। ফলোঅন থেকে ১০০ আর ২৯৯ থেকে পিছিয়ে থেকে নিজেদের প্রথম ইনিংস শেষ হলো বাংলাদেশের। এমনিতেই টেস্টে নিয়ম হচ্ছে, ২০০ রানের ব্যবধান থাকলেই ফলো অন করানো যায়। ভারতের ৬৮৭ রানের জবাবে ৩৮৮ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের সাহসী সেঞ্চুরিতে জবাবটা ভালোই দিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তাতেও লাভ হলো না। ভারতের প্রথম ইনিংস আর বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ব্যবধান ২৯৯। তবে, বাংলাদেশকে অলআউট করে দেয়ার পরও ফলোঅন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে ভারত।  এদিকে ফলোঅন এড়াতে ১৬৬ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের চতুর্থ দিনের শুরুটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ন। আগের দিন দুর্দান্ত খেলা মুশফিক-মিরাজের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল সবাই। কিন্তু কোহলির নিজে রীতিমত দুর্দান্ত এক সিদ্ধান্ত। দিনের শুরুতেই বোলিংয়ে আনলেন এ ম্যাচে এখনো উইকেটের দেখা না পাওয়া ভুবনেশ্বকে। তাই অধিনায়কের সিদ্ধান্তের মূল্যায়ন করলেন এই বোলার। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে দিনের প্রথম ওভারেই মিরাজকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দিলেন সাজঘরে।এরপর মুশফিককে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন তাইজুল। তবে রানের খাতা দুই অঙ্ক নিয়েই খেয় হারিয়ে ফেলেন তাইজুল। উমেশ যাদবের বাউন্সারে বসে পড়লেও হাতে লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহার হাতে। ফলে ৩৮ বলে ১০ রান করেই সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন অসাধারণ ব্যাট করা মুশফিক। এরপর ৮ রান করে তাসকিনের বিদায়ের পর দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় থাকা মুশফিকের ইনিংস শেষ হয় ১২৭ রানে। অশ্বিনের বলে ঋদ্ধিমান সাহাকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক। এর আগে রোববার ১ উইকেটে ৪১ রান নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। তবে দলের রান ৩ যোগ করতেই তামিম ইকবালকে হারায় তারা। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির মাশুল দিয়ে রানআউটে কাটা পড়েন দেশসেরা এ ওপেনার। এরপর দ্রুত ফিরে যান টেস্ট স্পেশালিস্ট মুমিনুল হকও। ব্যক্তিগত ১২ রানে উমেশ যাদবের ভেতরে আসা বলটি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গিয়ে পায়ে লাগলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই ব্যাটসম্যান।মুমিনুলের বিদায়ের পর সাকিবের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়ে এলবিডব্লিউর শিকার হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ইশান্ত শর্মার ভেতরে আসা বলে পায়ে লাগলে আউট হন তিনি। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি। তবে তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। এরপর সাকিবকে সঙ্গ দিতে উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহীম। দেশসেরা এ দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংয়ে ওয়েলিংটন টেস্টের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব। ১০৩ বলে ১৪টি চারের সাহায্যে নিজের এ ইনিংস সাজান তিনি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে আরও একটি চার হাঁকাতে গিয়ে মিডঅনে যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। তবে এর আগে মুশফিকের সঙ্গে গড়েন ১০৭ রানের দারুণ এক জুটি।সাকিবের বিদায়ের পর দ্রুত ফিরে যান সাব্বিরও। ব্যক্তিগত ১৬ রানে জাদেজার বলে সুইপ করতে গিয়ে মিস করলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। এরপর মিরাজকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। ১০৩ বলে ৫১ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন উঠতি এই তারকা। এ ইনিংস গড়তে ১০টি চারের মার মারেন তিনি। তবে এক প্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। ২০৬ বলে ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১২টি চারের সাহায্যে নিজের এ ইনিংস সাজান তিনি।  এমআর/এমএস

Advertisement