চলতি মাসের শুরুতেই দুবাইতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো আইসিসির কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং। দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট, দুই বছর ধরে টেস্ট লিগ, ১৩ দলের ওয়ানডে লিগ ছাড়াও আইসিসিতে অর্থনৈতিক সমতা আনার লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আইসিসির বৈঠক থেকে ঢাকায় ফেরার পরই নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ের সঙ্গে ছাড়ার বিসিবি ইঙ্গিত দেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন।বিসিবি প্রেসিডেন্টের ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার পর শুরু হয়েছে গুঞ্জন। কেন তিনি বিসিবি ছাড়তে চান? তিনি বিসিবি ছাড়লে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে? এমনই যখন নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল, তখনই ভারতের হায়দরাবাদে শুরু হলো বহুকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট। হায়দরাবাদে এই টেস্ট ম্যাচটি দেখতে এসে আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পাপন। সেখানেই তার কাছে জানতে চাওয়া হলো, আপনি নাকি আর বোর্ডে থাকতে চাচ্ছেন না। বোর্ডে অনেক ব্যস্ততা। প্রচুর সময় দিতে হয়, এসব কারণেই কি বিসিবি ছেড়ে দেবেন?পাপন বললেন, ‘আসলে বোর্ড নিয়ে কোনো কিছু নয়। বোর্ডের সাথেও কোনো সমস্যা হয়নি। আসলে তিনটা একসাথে চালানো কঠিন (চাকরি, ক্রিকেট বোর্ড এবং জাতীয় সংসদের সদস্য, অর্থ্যাৎ রাজনীতি)। এর মধ্যে একটা ছাড়া দরকার। কারণ খুব চাপ যাচ্ছে আমার ওপর দিয়ে। বিশেষ করে ট্রাভেলিংটা। বিভিন্ন দেশে সফর। এটা আমার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠছে না।’তাহলে এটা একটা ছাড়ার জন্য কি ক্রিকেটকেই বেছে নিচ্ছেন? পাপন বললেন, ‘না না, ব্যাপারটা হচ্ছে, কোনটা ছাড়বো এখনও পর্যন্ত জানি না। মনে হচ্ছে একটা ছাড়তে হবে। আমার কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ট্রাভেলিংটা। একের পর এক এত ট্রাভেলিং! বিশেষ করে, চাকরিতে প্রচুর ট্রাভেলিং। ক্রিকেটে তো আছেই। আইসিসিতে বিরাট একটা ট্রাভেলিং সমস্যা। কিছুদিন পর পরই ট্রাভেল করতে হয় বিভিন্ন কমিটির মিটিংয়ের জন্য। এবার যে আইসিসির সংবিধান পরিবর্তন হলো, সেটা বলেন, ফিনান্সিয়াল স্ট্রাকচারাল চেঞ্জ বলেন এ কমিটিগুলোর মিটিংয়ে তো আমাকে নিয়মিত উপস্থিত থাকতে হচ্ছে। একবার সিঙ্গাপুর যাচ্ছি, একবার অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি।’ একই সঙ্গে বাংলাদেশের খেলাও বেড়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। যে কারণে অন্য দিকে নজর দেয়ারই সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। ক্রিকেটের ব্যস্ততার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবার দেখওন, এখন তো আমাদের নিয়মিত খেলাও শুরু হয়ে গেছে। এখান থেকে (হায়দরাবাদ) শেষ করে আমাকে ১৪ তারিখ যেতে হবে শ্রীলঙ্কায়। ওখান থেকে এসেই ২০ তারিখ যেতে হবে লন্ডনে। ওখান থেকে ২৭-২৮ তারিখের দিকে এসেই আবার শ্রীলঙ্কায় দৌড় দিতে হবে। এরপর আবার ৭ তারিখ থেকে তো সিরিজ শুরু। এই ট্রাভেলিংটা আমার জন্য একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়ে একটু চিন্তার বিষয় আছে।’ভেতরের কারণ যাই থাকুক, মিডিয়ার সামনে বলা নাজমুল হাসান পাপনের এই কারণগুলো নেহায়েত কম নয়। কারণ তিনি দেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী। সঙ্গে রাজনীতিবিদ। নিজ এলাকা থেকে জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সদস্য। এ দুটো টিকিয়ে রাখতে হলে ক্রিকেটই ছেড়ে দিতে হবে বিসিবির বর্তমান সভাপতিকে।আইএইচএস/এনইউ/আরআইপি
Advertisement