কক্সবাজার সদর উপজেলার প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিএমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শতক জমি জবরদখল করেছে একটি প্রভাবশালী মহল। ইতোমধ্যে চক্রটি রাতের আঁধারে বিদ্যালয়ের ওই জমিতে আধা পাকা ভবন তৈরি করেছে। সকালে দেখে এর প্রতিবাদ ও জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছে শিক্ষকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে। এরই মধ্যে বহিরাগত লোক ভাড়া করে পাকা ভবন নির্মাণে মহড়া দিচ্ছে দখলদাররা। জেলা প্রশাসক বরাবরে দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত পিএমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সুনাম কুড়িয়েছে।ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীদের শ্রেণি সংকট নিরসনে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী নাছের মো. ফারহাদ চৌধুরী, আবু সাদাত মো. সায়েম চৌধুরী ও মুজিবুল হক চৌধুরী বিদ্যালয়ের জন্য ২ শতক জমি দান করেন। এ জমিটি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে পার্শ্ব জমির মালিক স্থানীয় চৌধুরীর পাড়ার মৃত মাহবুব আলীর ছেলে আমানুল হক। তিনি ওই জমিতে তার অংশ রয়েছে বলে দাবি করেন। তবে, দাবির অনুকূলে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। তাই রাতের আঁধারে কৌশলে ওই জমির ওপর সেমিপাকা দোকান ঘর নির্মাণ করেন আমানুল হক। সকালে শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের জমিতে দোকান ঘর দেখে হতবাক হন। দোকান উচ্ছেদ ও জমি উদ্বারে প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন শিক্ষকরা। গত ১০ জানুযারি জেলা প্রশাসক বরাবরে দেয়া আবেদনটি তদন্ত করতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদিকে, অভিযোগ দেয়ার কারণে দখলদার আমানুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বরাবরে মামলা করেছেন। এডিএম অভিযোগ তদন্ত করতে সদর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দিয়েছেন। এসিল্যান্ড জায়গা পরিমাপ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে সদরের সার্ভেয়ার কামরুজ্জামান সোহাগকে দায়িত্ব দেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি সার্ভেয়ার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকদের নিয়ে বিরোধীয় জমি পরিমাপ করে আমানুল হকের অবৈধ দখলের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদন দিয়েছেন। এদিকে, জায়গা পরিমাপের পর অবৈধ দখল টিকিয়ে রাখতে নানা কৌশল চালাচ্ছে দখলদার চক্র। বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ভেঙে আরও দখলদারিত্ব চালানোর হুমকি দিচ্ছে।অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমানুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর কোন কথা না বলে লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সার্বজনীন। এর উন্নয়নে সবার সহযোগিতা কাম্য। বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ তদন্তাধীন। সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।সায়ীদ আলমগীর/এএম/আরআইপি
Advertisement