খেলাধুলা

কথা রাখলেন মিরাজ

প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেটা রাখতে পারাটা বিরাট একটি কাজ। আর যদি হয় সেটা খেলাধুলা কিংবা ক্রিকেটের মতো একটি খেলায়, তাহলে প্রতিশ্রুতি দেয়াটাই যেন বোকামি। কারণ কেউ বলতে পারে না, প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখতে পারবে কি না। তবে হায়দরাবাদ টেস্টের দ্বিতীয় দিন প্রেস কনফারেন্স রূমে বসে যে প্রতিশ্রুতি মেহেদী হাসান মিরাজ দিয়েছিলেন, পরের দিন ব্যাট হাতে মাঠে নেমে সেটা অক্ষরে অক্ষরে রক্ষা করতে পেরেছেন তিনি। ব্যাট হাতে দারুণ সহযোগিতা করেছেন মুশফিকুর রহীমকে। গড়েছেন ৮৭ রানের জুটি। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিটাও এসে গেলো ভারতের বিপক্ষে এসে। তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত থাকলেন ৫১ রানে।ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ১৯ ছুঁই ছুঁই করা মেহেদী হাসান মিরাজের। এখন ১৯ পার হয়ে গেছে। বয়সে একেবারে তরুণ হলেও মেহেদী হাসান মিরাজ একজন পরিণত ক্রিকেটার। বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট খেলে খেলে নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য অনেকটাই পরিণত করে ফেলেছেন তিনি। সে কারণে বয়সের দিকে না তাকিয়ে ইংল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষেই অভিষেকের ক্যাপ তার মাথায় পরিয়ে দিলো বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। অভিষেকেই বাজিমাত করলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘূর্ণির জাল ফাঁদলেন। চট্টগ্রাম টেস্টে না পারলেও ঢাকায় এসে সেই মায়াবী জালে জড়িয়ে হারিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডকে। যা এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য।অনুর্ধ্ব-১৯ দলে অলরাউন্ডার। ব্যাট এবং বল হাতে ছিলেন সমান পারদর্শী; কিন্তু জাতীয় দলে এসে হয়ে গেলেন পুরোপুরি অফ স্পিনার। ব্যাট হাতে রান করাই যেন ভুলে গেলেন মিরাজ। আট নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে ব্যাট করেন তিনি। এ জায়গায় তিনি যদি কিছু রান করে দিতে পারেন, তাহলে আগে পরে মাঝারি মানের হলেও একটা, দুটা জুটি গড়ে ওঠে; কিন্তু যুব দলে থাকতে যে ব্যাটিংটা তিনি পারতেন, সেটা যেন একেবারে ভুলেই গিয়েছিলেন। চারদিকে রব উঠেছিল, কোথায় গেলো মিরাজের সেই ব্যাটিং? ব্যাট ধরা কী পুরোপুরিই ভুলে গেলেন তিনি? আগের চার টেস্টে খেলে সর্বসাকুল্যে রান করেছেন মাত্র ২০। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রান মাত্র ১০। এমন যখন পরিস্থিতি, তখন ব্যাট হাতে ভারতের বিপক্ষে কতটুকুই বা কী করতে পারবেন তিনি? ভক্তদের মনে ছিল এমনই প্রশ্ন।দ্বিতীয় দিন ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারতের আজিঙ্কা রাহানের দুর্দান্ত একটি ক্যাচ ধরেছিলেন তিনি। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ নিজেই জানিয়েছিলেন, ‘জুটি ভাঙার জন্য মনে মনে একটা পরিকল্পনা আঁটছিলাম। যে কোনো হাফ চান্স আসলেই আমি সেটাতে শতভাগে রূপান্তরিত করবো। এরপরই ক্যাচটা ধরলাম।’এরপরই আরেক প্রশ্নের জবাবে মিরাজ জানালেন, ‘ব্যাট হাতেও সুযোগ পেলে কিছু করতে চাই। আমি যে জায়গায় ব্যাট করি, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু রান করতে পারলে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। দলেরও উপকার হবে।’আগের দিন দেয়া সেই প্রতিশ্রুতিই পূরণ করে দেখালেন মিরাজ। ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে তিনি জানালেন ব্যাট হাতেও সমান পারদর্শী। ১০২ বলে পৌঁছালেন তিনি অর্ধশতকের ঘরে। ১০টি বাউন্ডারিতে সাজান নিজের ইনিংস। আইএইচএস/এনইউ/আরআইপি

Advertisement