মতামত

বিমান : আমাদের জাতিসত্তার প্রতীক

যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে একেবারে শূন্য উড়োজাহাজ দিয়ে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি এয়ার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল নামে যাত্রা শুরু করে আজকের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড। বিগত পঁয়তাল্লিশ বছরে সংস্থাটি ক্রয় ও লিজের মাধ্যমে নিজ বহরে যোগ করেছে বারোটি সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ, পৌঁছে দিচ্ছে সাতটি অভ্যন্তরীণ এবং পনেরটি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে। শূন্য উড়োজাহাজ এ কারণেই বলা হয়েছে যে, শুরুতে বাংলাদেশ বিমানের কোন নিজস্ব উড়োজাহাজ ছিল না। পূর্ব পাকিস্তান যখন পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের মর্যাদা লাভ করে, তখন পি আই এর অধীনে পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল বোয়িং ৭০৭, বোয়িং ৭২০, বোয়িং ৭৩৭ এবং ফকার ফ্রেন্ডশিপ-২৭ । এ সকল উড়োজাহাজ দিয়ে শুধুমাত্র পশ্চিম পাকিস্তানই ফ্লাইট পরিচালিত হতো। যে কয়টি ছোটখাটো উড়োজাহাজ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালিত হতো যুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী তার মধ্যে দু`টি পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায় আর একটি ধ্বংস করে বাংলাদেশের বিমান বহর শূন্য করে দেয়। আশার কথা এই যে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী এয়ারফোর্সকে একটি ডাকোটা উড়োজাহাজ দিয়েছিলেন ভারতের যোধপুর রাজ্যের মহারাজা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ বিমান অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাহিনীর কাছ থেকে লাভ করে সেই একমাত্র উড়োজাহাজটি, যা দিয়ে ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে শুরু হয় বিমানের প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ।অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সেবার মান, ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার ও ক্রান্তিকাল মোকাবেলার জন্য সকল কর্মকাণ্ড ঢেলে সাজানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিমানের সেবার মানোন্নয়নে তিনটি বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অনটাইম পারফরমেন্স, অবতরণের পর অতি স্বল্প সময়ে যাত্রীদের ব্যাগেজ ডেলিভারি এবং গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মানোন্নয়ন। এ জন্য ১০০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনার ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে জানিয়ে রাখতে চাই যে, ফ্লাইট বিলম্ব এয়ারলাইন্স ইন্ডাস্ট্রির একটি সাধারণ বিষয়। যাত্রীর নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি কারণে নিরুপায় হয়ে ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্ব করতে হয়। সর্বোপরি, উড়োজাহাজ একটি অতি সংবেদনশীল যান। সারাবিশ্বেই প্রতিদিনই শত শত ফ্লাইট বাতিল এবং বিলম্ব হচ্ছে। আজ যখন এই প্রতিবেদনটি লিখছি (৬ ফেব্রুয়ারি) তখন সারাবিশ্বে মোট ৪৬৭ টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। আর মোট ফ্লাইট বিলম্ব হয়েছে ৫ হাজার ৪৬২ ঘন্টা। যে কেউ চাইলে flight aware নামক প্রতিষ্ঠানের সাইটে গিয়ে ফ্লাইট বিলম্ব আর বাতিলের তথ্য জেনে নিতে পারেন।বিমান বহর সম্প্রসারণের একটি বড় প্রকল্প শুরু হয় ২০০৮ সালে । তখন দুই বিলিয়ন ইউ এস ডলারের চুক্তির বিনিময়ে বোয়িং-এর সাথে বিমান দশটি আধুনিক উড়োজাহাজ ক্রয়ের চুক্তি করে। সে প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যেই বিমান ছয়টি উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত করেছে। বর্তমানে বহরে রয়েছে বোয়িংয়ের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির চারটি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর ও দুটি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট। এছাড়া বহরে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি লিজে সংগ্রহ করা দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ এবং দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের জন্য দুটি ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট। ২০১৮-২০১৯ সালে বিমান বহরে যুক্ত হবে নতুন প্রজন্মের সর্বাধুনিক ব্র্যান্ড নিউ চারটি বোয়িং ড্রিম লাইনার উড়োজাহাজ, যা সংগ্রহের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। গত বছর যুক্তরাজ্যের পরামর্শে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার মান বাড়াতে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান রেডলাইনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি। ব্রিটিশ এই কোম্পানিকে দুই বছরে ৭৩ কোটি ২৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। কার্গো খাতের আয় বাড়াতে নানামুখি উদ্যোগ নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কার্গো নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিকল্প পথে লন্ডনে যাচ্ছে বিমানের গ্রাহকের মালামাল। বর্তমানে কার্গো সেবার পরিধি বাড়াতে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ও এমিরেট্স এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যৌথভাবে চুক্তি করে কাজ করছে বিমান। বিমানের গ্রাহকদের মালামাল ১৩টি রুটে পৌঁছে দিচ্ছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ। ইউরোপের ১৫টি রুটে পৌঁছে দিচ্ছে এমিরেট্স এয়ারলাইন্স।এ সকল প্রকল্পের ফলাফল ইতোমধ্যেই পেতে শুরু করেছে বিমান। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ২৭৬ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে। এর আগের অর্থবছরে ৩২৪ কোটি টাকা মুনাফা লাভ করেছে। অর্থাৎ গত দুই বছরে সকল ঋণ পরিশোধ করেই বিমান মুনাফা করেছে মোট ৬০০ কোটি টাকা। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বিমান রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৩১০ কোটি টাকা রাজস্ব কর দিয়েছে। গত দুই বছরে বিমানের মোট যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে ৮ লাখ। যাত্রী সেবা নিশ্চিত করেই বিমান এই মুনাফা অর্জন করেছে। বিমানের আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিমান শুধু কার্গোর মাধ্যমে ৪০ হাজার ৯১১ টন মালামাল পরিবহন করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিমানের শুধু কার্গো থেকেই আয় হয়েছে ৩১৫ কোটি টাকা। তবে ২০১৬ সালের ৮ মার্চ যুক্তরাজ্য সরকার কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারণে কার্গো পরিবহন তুলনামূলক কিছুটা কম হয়েছে। ফলে আয়ও কমেছে।বিমানের লাভ-লোকসান নিয়ে গণমাধ্যমে আমরা অসংখ্য নেতিবাচক সংবাদ পেয়ে থাকি যা বিমানের সাথে যাত্রীদের একটি বিশাল দূরত্ব তৈরি করে দেয়। সেই সাথে সৎ, নিষ্ঠাবান এবং নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিরুৎসাহিত হয়ে কাজের গতি হারিয়ে ফেলে। আমাদের বুঝতে হবে বিমান শুধু একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নয়, এটি পৃথিবীর বুকে আমাদের স্বাধীন দেশের পতাকা বহন করে, জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে গ্রাহকের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি নিজ দেশ এবং প্রতিষ্ঠানের সুনাম, ভাবমূর্তি রক্ষা ও জাতিসত্ত্বার পরিচয় বহন করাও বিমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়। যাত্রী পরিবহন ব্যতীত বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে দুর্যোগপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা, বিদেশে মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশিদের লাশ বিনা খরচে বহন করার মতো কল্যাণেও নিয়োজিত রয়েছে বিমান।.তাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর অংশীদারিত্বে শুধু বিমানের কর্মীরাই নয়, এই সংস্থার অংশীদার বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষ, সকল নাগরিক।তাছাড়া বিমান যে একাই লোকসান গুনেছে তাও নয়। IATA এর ২০১০ সালের একটি অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয় তখন পৃথিবীর ২৩৩টি প্রধান এয়ারলাইন্সের মধ্যে ৯০টি এয়ালাইন্সই ভীষণভাবে লোকসানের মুখোমুখি হয়। আর যারা তখন লাভের মুখ দেখেছিল তাদেরও মুনাফার মার্জিন খুব বেশি ছিল না। এ সকল এয়ারলাইন্সগুলো ধীরে ধীরে মুনাফার দিকে এগুচ্ছে। তারপরও এয়ার ইন্ডিয়া এবং কেনিয়া এয়ারলাইন্স গত কয়েক বছর ধরে লোকসানের হিসেব গুণে আসছে। আমেরিকান এয়ারলাইন্স, লুফথানসা, এয়ার কানাডা গত বছর চরম চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এবং তাদের মুনাফা কমেছে। এয়ার কানাডার শেয়ারের মূল্য গতবছর ব্যাপকভাবে পড়ে যায়। থাই এয়ারলাইন্স গত ২০১৩ সালে ভীষণভাবে ক্ষতির মুখোমুখি হয়। যার কারণে তাদের ফ্লাইটের সংখ্যা কমাতে এবং কর্মী ছাঁটাই করতেও বাধ্য হয়েছিল। ইতিহাদ এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এ যাবতকাল পর্যন্ত অপারেটিং লস দিয়ে আসছে। তদুপরিও সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ১৭ মিলিয়ন ইউএস ডলার ভর্তুকি (সাবসিডি) দিয়ে ২০১৫ সালে ইতিহাদ এয়ালাইন্স সম্প্রসারণ করেছে। কারণ তারা মনে করে, তাদের পরিবহন সংস্থাটি সরকারের একটি মৌলিক অঙ্গ। এ যাবতকালে যে সমস্ত এয়ারলাইন্স ধারাবাহিকভাবে মুনাফা অর্জনে সফলতা লাভ করেছে তাদের মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারলাইন্স অন্যতম। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জ্বালানি তেলের স্বল্পমূল্য ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ-এর উচ্চ মুনাফার একটি বড় কারণ, যা আমাদের বেলায় ঠিক উল্টো। বিশ্ব বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে এভিয়েশন জেট ফুয়েলের দাম বেশি হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এর মুনাফার উপর।যখন লাভ-লোকসানের খবরগুলো সংবাদপত্রগুলোতে চাউর হয়ে ইমেজ সঙ্কটে পরিণত হয়, তখন বিমানের কোন কোন কর্মীর দক্ষতা ও সততার নজির অনেকের জন্য অনুসরণীয় হয়ে ওঠে। গত ২২ ডিসেম্বর (২০১৬) ওমানের মাসকাট থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। ফ্লাইটটি উড্ডয়নের পরপরই মাসকাট বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে ক্যাপ্টেনকে জানানো হয়, রানওয়েতে চাকার কিছু অংশ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় উড়োজাহাজের ক্যাপ্টেন নিরাপত্তার স্বার্থে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের পরিবর্তে ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন এবং ফ্লাইট নৈপুণ্য দেখিয়ে নিরাপদে ফ্লাইটটি অবতরণ করান। উড়োজাহাজে থাকা ১৪৯ জন যাত্রী এবং সাতজন ক্রু নিরাপদে উড়োজাহাজ থেকে বের হয়ে আসেন। পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আবদুল কাইয়ুমকে প্রশংসাপত্র দিয়েছে পাইলটদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইএফএএলপিএ। ১৯৯৬ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি এফ২৮ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট সিলেটে ঝড়ের কবলে দুর্ঘটনায় পতিত হয়, যে দুর্ঘটনায় বিমানের কেবিন ক্রু একজন শিশুসহ মোট ৮৫ যাত্রীকে জরুরি অবতরণে বহির্গমনে সক্ষম হয়েছিলেন। গত কিছুদিন আগে বাংলাদেশ বিমানের এক কেবিন ক্রুর সততায় গর্বিত হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। লন্ডন ফ্লাইটে এক যাত্রীর ফেলে যাওয়া ৩ হাজার ২৮৫ পাউন্ড প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।সংস্থার উন্নয়নের সকল উদেশ্যগুলো তখনই বাস্তবায়নের মুখ দেখে যখন সেই সংস্থার জনবল দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করা যায়। শুধু যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই একজন কর্মীকে তার কাজের উপযোগী করে তোলা যায় এবং কর্মক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফল লাভ করা যায়। সে কারণে সংস্থার কর্মকর্তাদের অফিস পরিচালনা এবং অন্যান্য কাজে সুদক্ষ করে তোলার জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টার, বিএটিসি। কর্মীদের নৈতিক মূল্যবোধ ভীত গঠন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, প্রাতিষ্ঠানিক আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার, এভিয়েশন সিকিউরিটি, নারী নির্যাতন ও ক্ষোভ ব্যবস্থাপনা এবং কর্মী কাউন্সেলিং এর উপর নতুন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে । একজন প্রশিক্ষিত কর্মীই পারে গ্রাহককে সর্বোচ্চ গ্রাহক সেবা প্রদান করতে, একজন প্রশিক্ষিত দক্ষ কর্মী সংস্থার সবচেয়ে বড় সম্পদ।সার্বিক মূল্যায়নে এ কথা বলা যায় যে, কোন দেশের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স সংস্থার মাধ্যমে একটি দেশ সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়। তাই শুধু মুনাফা অর্জন করাই আমাদের জাতীয় পরিবহন সংস্থার একমাত্র লক্ষ্য নয়। বিমান প্রতিবছর হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্য এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশে পরিবহন করে, যাদের প্রতিটি ঘামের ফোঁটায় আমাদের বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে। সেই শ্রমিকরা যখন বহু বছর পর বাংলাদেশ বিমানকে বিদেশের মাটিতে দেখে তখন বিমানকেই মনে করে এক খণ্ড বাংলাদেশ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে আত্মগৌরবে। মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়ে আজ আমরা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে পরিচিতি পাচ্ছি। সে সম্মান সাময়িক লাভ-লসের অনেক ঊর্ধ্বে। আমাদের দেশের সেই পতাকা বহনকারী বিমান সংস্থাও তেমনি আমাদের সকলের জাতীয় অহংকার। স্বাধীনতার ঠিক আঠারো দিন পর বঙ্গবন্ধুর হাত দিয়ে যে সংস্থাটির অভ্যুদয় হয়েছিল সে সংস্থাটি বিভিন্ন সময় অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আজ এই অবস্থানে এসেছে। তাই বিমানের উন্নয়ন এবং ভাবমূর্তি রক্ষার দায়ভার বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের।লেখক : কলামিস্ট।sharminakhand007@yahoo.comএইচআর/এআরএস/জেআইএম

Advertisement