রাজধানীর একটি ব্যস্ততম রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন ইমরান সিদ্দিকী নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি। পথে এক সিএনজি তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনার কারণ জানতে চাওয়ায় সিএনজির চালক গাড়ি না থামিয়ে তার ওপর দিয়ে উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। জীবন বাঁচাতে তখন মোটরসাইকেলের চালক সিএনজির গ্রিল ধরে ঝুলে পড়েন। প্রাণে বাঁচার তাগিদে প্রবাসী ইমরান বলেন, ‘ভাই আমি মারা যাবো, প্লিজ গাড়িটা থামান, আমি নেমে যাই।’ তখন চালক বলে- ‘তোরে আইজ মাইরাই ফালামু’। এ বলে চালক গাড়ি ডানে-বামে ঘুরিয়ে তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে এক পর্যায়ে তিনি লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যান।কোনো সিনেমার দৃশ্য নয় এটি। বুধবার রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারের স্টার কাবাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। একটি দৈনিক পত্রিকার ফটো সাংবাদিকের ক্যামেরায় উঠে আসে এই দুর্ঘটনার চিত্র।দুর্ঘটনার শিকার ওই মোটরসাইকেল চালক ইমরান সিদ্দিকী (৩৫) জানান, তিনি আমেরিকা প্রবাসী। সম্প্রতি তিনি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন।প্রয়োজনীয় কাজ শেষ নগরভবন থেকে ফেরার পথে কারওয়ান বাজারে স্টার কাবাব হোটেলে খাবার খেতে গাড়ি পার্কিং করতে যান। এসময় ওই সিএনজিটি পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। তিনি নিজে আহত হলেও আটকানো যায়নি সিএনজি চালককে।এ প্রতিবেদকের কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়ে ইমরান জানান, সিএনজি চালক আমার উপর চড়াও হওয়ায় আমি সিএনজির গ্রিলে ধরে ফেলি। কিন্তু চালক সিএনজি না থামিয়ে চালাতে থাকে । এতে করে আমি ঝুলে যাই। পাশের প্রাইভেট কার ও সিএনজির ফাঁকে আটকে যাওয়ার দশা হয় আমার। বাঁচার চেষ্টা থেকে সিএনজি চালককে বলি, ‘ভাই আমি মারা যাবো, প্লিজ গাড়িটা থামান, আমি নেমে যাই।’তখন চালক বলে- ‘তোরে আইজ মাইরাই ফালামু।’ এ বলে চালক গাড়ি ডানে-বামে ঘুরিয়ে আমাকে অন্য গাড়ির সঙ্গে চাপা দিতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে এক পর্যায়ে আমি লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যাই।এ ঘটনার সময় সিএনজিকে ধাওয়া করে আটকানোর চেষ্টা করেছেন মফিজুল ইসলাম নামে আরেক ব্যক্তি।তিনি জানান, সিএনজির পিছু নিয়ে তেজগাঁও কলেজের সামনে পুলিশের সহায়তায় সিএনজিটিকে আটক করেন। কিন্তু পুলিশের হাত গলে ওই চালক উধাও হয়ে যান!ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মফিজুল ইসলাম বলেন, তেজগাঁও কলেজের সামনে সিএনজিটিকে আটক করে সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট ও এক ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিই। পরে আমি আহত সেই মোটরসাইকেল চালককে উদ্ধার করতে কারওয়ান বাজারে যাই। তাকে নিয়ে আবার তেজগাঁও কলেজের সামনে এলে দেখি সিএনজি আছে কিন্তু চালক পালিয়ে গেছে।পরে সেই সার্জেন্টকে চালকের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, ভিআইপি গাড়ি আসায় তা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এ সুযোগে চালক সবার অগোচরে পালিয়ে গেছে।উল্লেখ্য, গত বুধবারই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) আছাদুজ্জামান মিয়া ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের উদ্দেশ্যে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। ডিএমপি মিডিয়া থেকে পাঠানো বার্তায় উল্লেখ করা হয়, নগরবাসীর ট্রাফিক আইন অমান্যের প্রবণতার কথা।বার্তায় নগরবাসীকে ট্রাফিক আইন অনুসরণ করে যানবাহন চালানো এবং সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেন ডিএমপি কমিশনার।জেইউ/জেডএ/এমএস
Advertisement