শেরপুরে কৃষকদের মধ্যে জৈবিক বালাই দমন ব্যবস্থাপনা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। কৃষকরা এখন ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে বোরো ফসল রক্ষায় রাতে ‘লাইট ট্র্যাপ’ বা আলোর ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাজরা পোকা এবং বাদামী গাছ ফড়িং পোকাসহ বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে বোরো ফসল রক্ষার জন্য ‘আলোর ফাঁদ’ প্রযুক্তি বেশ কার্যকর। সন্ধ্যার পর থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ধানক্ষেতের যেকোন এক প্রান্তে এই আলোর ফাঁদ বসানো হয়। বৈদ্যুতিক বাতি কিংবা হারিকেন ঝুলিয়ে নিচে একটি গামলায় সাবান-পানি রেখে এ আলোর ফাঁদ তৈরী করা হয়। আলো দেখে পোকার দল সেখানে জড়ো হয় এবং গামলার সাবান-পানিতে পড়ে মারা যায়। ওই মৃত পোকাগুলো দেখে বোঝা যায়, সেই ফসলের ক্ষেতে ও আশপাশে কি ধরনের ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি এবং আক্রমণ রয়েছে। সে অনুযায়ী বালাই দমন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। এতে ক্ষেতের ফসল রক্ষা পায় এবং উৎপাদন ভালো হয়।৩০ মার্চ সোমবার রাতে শেরপুরের নকলা উপজেলার কুর্শা গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলীর বোরো ধানক্ষেতের পাশে এ ধরণের একটি আলোর ফাঁদ পরির্দশনে গিয়ে দেখা যায়, আলো দেখে ফাঁদের চারপাশে নানা জাতের পোকামাকড় ঘুরঘুর করছে। অনেকগুলো পোকামাকড় ফাঁদের সাবান মেশানো গামলার পানিতে পড়েছে। কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, এভাবে প্রতিদিন আলোর ফাঁদ পেতে ধান ক্ষেতে ও এর আশাপাশে কি ধরণের পোকা রয়েছে এবং এসব পোকার মধ্যে কোনো প্রকার ক্ষতিকর পোকামাকড় রয়েছে কি না তা জানতে পারি। তিনি জানান, এবার এখনো পর্যন্ত বোরোর ফসলের জন্য ক্ষতিকারক মাজরা পোকা, নলিমাছি কিংবা বাদামী গাছ ফড়িংয়ের উপস্থিতি দেখা যায়নি। কৃষি বিভাগের আইসিএম (ইন্টিগ্রেটেড ক্রপ ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে তিনি এবং তার মতো এলাকার অনেক কৃষকই এ ধরনের নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন বলে উল্লেখ করেন। শেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক ড. আব্দুস সালাম ও নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন বলেন, ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে মূল্যবান ফসল রক্ষায় জৈবিক বালাই দমন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কৃষকদের নানাভাবে উদ্ধুদ্ধকরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের সংগঠিত করে আইসিএম ও আইপিএম ক্লাব স্থাপন করা হচ্ছে।এমজেড/পিআর
Advertisement