দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে প্লাবিত হয়ে পড়েছে গ্রামের পর গ্রাম। জেলার ৩০টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩ দিন ধরে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ২শ` গ্রাম, চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়েছে। নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, উলিপুর, চিলমারী, রাজিবপুর, রৌমারী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৩০টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এ সব এলাকার ২৫ হাজার হেক্টর জমির আমন ও শাকসবজি তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সঙ্কট।বন্যায় বসতভিটা, চারণভূমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশু নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। বানভাসী মানুষগুলো নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেও পায়নি সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা। অনেক পরিবারে দেখা দিয়েছে খাদ্য সঙ্কট। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।সদর উপজেলার খেয়ার আলগার চরের ছকিনা জানান, তাদের ঘরে যা খাবার ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে খাওয়ার আর কিছু নেই।রলাকাটার চরের আব্দুল গনি মিয়া জানান, ৩ দিন ধরে এ এলাকার সব ঘরবাড়ি তলিয়ে আছে। কোনো রকমে উঁচু বাঁশের মাচায় খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করলেও শিশু ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।চরের বন্যাকবলিত অনেকে জানান, এ অবস্থায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিলেও কোনো ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কেউ আসেনি।সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে ২০ হাজার মানুষই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, জেলা প্রশাসন থেকে ১০৮ টন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ সব চাউল ও নগদ টাকা বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।

Advertisement