আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতিটি অনু পরিমাণ সৎ কাজের বিনিময় প্রদান করবেন। তিনি কোনো মানুষের সঙ্গে বিনিময় প্রদানে অনু পরিমাণ অন্যায় ও জুলুম করবেন না। তিনি তাঁর জন্য জুলুম-অত্যাচারকে হারাম করে নিয়েছেন।মানুষের ধন-সম্পদ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পাওয়ার হকদার কে? এ বিষয়ে উপদেশ দিয়ে বলেন, তোমরা যখন তোমাদের ধন-সম্পদ থেকে ব্যয় করবে, তখন তোমরা পিতা-মাতা, নিকটাত্মীয়, ইয়াতিম ও মিসকিনদের সাহায্য করবে। আর তোমরা দুনিয়াতে যে কোনো ধরনের উত্তম কাজই করা না কেন, তিনি তা খুব ভালভাবেই অবগত আছেন।আল্লাহর দেয়া ধন-সম্পদ থেকে ব্যয়ের ব্যাপারে তিনি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন-আয়াতের অনুবাদ-আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২১৫ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নফল দান-সহযোগিতা করার জন্য পথ নির্দেশ করেছেন। এ দানের আয়াতটি জাকাতের ব্যাপারে নাজিল হয়নি। কেননা পিতা-মাতার জন্য জাকাতের অর্থ থেকে ব্যয় করার বৈধ নয়।সাহাবায়ে কেরামদের জিজ্ঞাসার ভিত্তিতে ধন-সম্পদ খরচ করার প্রাথমিক পর্যায়ের খাত বর্ণনা করা হয়েছে এ আয়াতে। উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ ধারাবাহিকভাবে আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার বেশি হকদার। ধন-সম্পদ খরচের নির্দেশটি নফল; ফরজ জাকাত প্রদান সম্পর্কিত নয়। কেননা এখানে পিতা-মাতাকেও দান করার কথা এসেছে। আর জাকাতের অর্থ পিতা-মাতাকে দেয়া জায়েজ নেই।হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, বিখ্যাত সাহাবি হজরত আমর ইবনে জমুহ রাদিয়াল্লাহু আনহু; যিনি ওহুদের যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। তিনি একজন বয়োবৃদ্ধ এবং সম্পদশালী ব্যক্তি ছিলেন। একবার তিনি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার অর্থ-সম্পদ থেকে আমি কি দান করব? এবং কাকে দান করব? তখন এ আয়াত নাজিল হয়।হাদিসে খরচের ব্যাপারে এসেছে, ‘তোমরা মায়ের সঙ্গে, পিতার সঙ্গে, বোনের সঙ্গে, ভাইয়ের সঙ্গে, অতঃপর নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে ধন-সম্পদ (মালামাল) আদান-প্রদান কর। এ হাদিস বর্ণনা করার পর হজরত মাইমুন বিন মাহরান রাদিয়াল্লাহু আনহু এ আয়াতটি পাঠ করেন।অতঃপর তিনি বলেন, ‘এগুলো হলো খরচ করার স্থান। ঢোল-তবলা, ছবি এবং দেয়ালে কাপড় পরানো, বাঁশি ও কাঠের পুতুল; এগুলো খরচের স্থান নয়।’ এ সব স্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পথে অর্থ সম্পদ ব্যয়ের ব্যাপারে নিষেধ রয়েছে।অতঃপর আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যে সব সৎকর্ম সম্পাদন কর; আল্লাহ তাআলা তা অবগত আছেন।’ উল্লেখিত দান-অনুদানও সৎকাজের অন্তর্ভূক্ত।পড়ুন- সুরা বাকারার ২১৪ নং আয়াতপরিষেশে...আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নফল দান-অনুদান দেয়ার তাওফিক দান করুন। হোক তা পিতা-মাতা, ভাই-বোন, নিকটাত্মীয় ও ইয়াতিম-মিসকিনদের মধ্যে।আল্লাহ তাআলা সবাইকে সাধ্যমত নিজের পরিবার-পরিজনসহ অন্যান্যের মধ্যে দান-সহযোগিতা করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলা নিকট থেকে উত্তম বিনিময় লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর
Advertisement