একদিকে যানজট, অন্যদিকে রাজধানীর কোথাও না কোথাও বছরজুড়েই চলে খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব। নগরজুড়ে রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার নির্মাণের ধকল, কোথাও বিদ্যুতের লাইন টানতে, কোথাও ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্করণে হচ্ছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। আর এসব খোঁড়াখুঁড়িতে রাজধানীর মিরপুরবাসীর ভোগান্তির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।মেট্রোরেলের মূল কাজ শুরুর আগে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক সঞ্চালন তার, গ্যাস, বিদ্যুৎ, অপটিকাল ফাইবার প্রতিস্থাপনের জন্য মিরপুর শেওড়াপাড়ায় পুরো সড়কের একপাশ খুঁড়ে ফেলা হয়েছে। এতে করে অতিরিক্ত যানজট, ধুলাবালির ভোগান্তিতে পড়েছেন এই এলাকা দিয়ে চলাচলকারীরা।অপরিকল্পিত নগরায়ন, ঘনঘন রাস্তা খনন, ড্রেনের ময়লা রাস্তার পাশে উঠিয়ে রাখা, নির্মাণ-সামগ্রী পারাপারে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়া, ফ্লাইওভার নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে নগরবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা।ভূক্তভোগীদের জানান- ব্যস্ত এই রাস্তায় বহু গাড়িকে ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে। রাস্তা খোঁড়াখোঁড়ির কারণে প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় এবং ফেরার পথে দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অফিসগামী ও অফিসফেরৎ যাত্রীদের।মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে প্রতিদিন মতিঝিলে অফিস করেন সারওয়ার আলম। বেসরকারি এ চাকরিজীবী শেওড়াপাড়ার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির বিষয়ে বলেন, প্রতিদিন সকালে যখন অফিসের উদ্দেশে বের হই তখন ব্যস্ত এই রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। রাস্তার অর্ধেক বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। অফিস থেকে ফেরার পথেও একই অবস্থা। আমরা উন্নয়ন চাই সেজন্য ভোগান্তি সহ্য করতেও প্রস্তুত আছি কিন্তু এটা দীর্ঘমেয়াদি হলে আমাদের ভোগান্তির সীমা থাকে না। আমরা উন্নয়ন চাই কিন্তু লাগাতার দুর্ভোগ নয়। এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী আরেক মোটরসাইকেল আরোহী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ব্যস্ত এই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির জন্য যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বিড়ম্বনা সহ্য করতে হচ্ছে আমাদের। শেওড়াপাড়া বাস স্টপেজ সংলগ্ন এসব ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজে দ্বায়িত্বে থাকা ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী এ বিষয়ে বলেন, জনগণের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে মূলত কাটিং রাতে করা হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি কিছুটা হচ্ছে এটা ঠিক কিন্তু আমরাও চেষ্টা করছি যেন দ্রুত কাজ সম্পন্ন হয়। মেট্রোরেল অর্থাৎ উন্নয়নের জন্য জনগণকে কিছুটা কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে।তিনি বলেন, ইউটিলিটির সার্ভিস প্রতিস্থাপনের জন্য ওয়াসা, তীতাস, ডেসকো কাজ করছে আর এসব কাজ হচ্ছে মেট্রোরেল প্রকল্পের আওতায়। প্রায় দুই মাস ধরে ভূগর্ভস্থ ক্যাবল স্থানান্তরের কাজ চলছে। ৪টি ডিপার্টমেন্ট এসব কাজ করছে। খুব শিগগিরই এই কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। সেইসঙ্গে জনগণের ভোগান্তিও দূর হবে।সেখানে দায়িত্বরত আরেক কর্মী আওয়াল শেখ জানান, জনগণের খুব ভোগান্তি হচ্ছে সে কারণে আমাদের প্রতি নির্দেশনা আছে যেন আমরা দ্রুত কাজ শেষ করি, সে লক্ষ্যে রাতেও কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। তবে যেখানে খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে সেই অংশের কাজ শেষ হতে এখনও এক মাসের মতো সময় লাগবে।এএস/জেডএ/এমএস
Advertisement