যৌতুকের জন্য মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্রিকেটার আরাফাত সানির মা নার্গিস আক্তার। একদিকে ছেলে কারাগারে অপরদিকে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে সব মিলে মোটেও ভালো নেই সানির পরিবার। এ বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন আরাফাত সানির মা।গত বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ৪ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগে ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও তার মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলা করেন তার স্ত্রী দাবিদার নাসরিন সুলতানা।আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নেয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।ক্রিকেটার সানির মা নার্গিস আক্তার মোবাইল ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলে আরাফাত সানি ১৬ দিন ধরে আটক রয়েছে। এরপর তৃতীয় মামলায় ছেলে ও আমাকে আসামি করেছে নাসরিন। মামলার পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি ও আমার পরিবার মোটেও ভালো নেই। একদিকে আমার ছেলে কারাগারে অপরদিকে আমাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আল্লাহ যেন এই বিপদ থেকে উদ্ধার করে এ জন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই।’গত ২২ জানুয়ারি রাজধানীর আমিনবাজার এলাকা থেকে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা প্রথম মামলায় আরাফাত সানিকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। একদিনের রিমান্ড শেষে ২৪ জানুয়ারি জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালত (সিএমএম)। বর্তমানে তিনি কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী সেলে রয়েছেন।যৌতুকের জন্য মারধরের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে ৫ লাখ এক টাকা দেন মোহরে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা দুজনে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার শুরু করেন। সংসার চলাকালীন অবস্থায় ৬ মাস পর ক্রিকেটার আরাফাত সানি তার মায়ের পরামর্শে নাসরিনের কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য সানি তার স্ত্রীকে মারধর করেন এবং গালিগালাজ করে ভাড়া বাসায় ফেলে যান।২০১৬ সালের ১২ জুন বাদী নাসরিন সুনলাতা ভাড়া বাসাসহ যাবতীয় ভরণ-পোষণ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে সংসার করতে স্বামীর সানির সঙ্গে দেখা করেন। এসময় আরাফাত সানি যৌতুকের ২০ লাখ টাকা দাবি করে নাসরিনকে বলেন, যৌতুকের টাকা না দিলে আমার মা তোমার সঙ্গে সংসার করতে দেবেন না এবং এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার পরিণতি অনেক খারাপ হবে। কারণ তোমার কিছু অশ্লীল ছবি আমার মোবাইলে রয়েছে।এরপর বাদীকে গাড় ধাক্কা দিয়ে সানির মা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন যে, তোর সঙ্গে আমার ছেলে সংসার করবে না তাই সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যবস্থা কর। তখন বাদী তার বাসায় চলে যান।এছাড়া বাসায় অবস্থানকালে আরাফাত সানি দুজনের কিছু আপত্তিকর ছবি ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠান। ছবি পাঠিয়ে আরাফাত সানি হুমকি দেন যে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তার পরিণতি আরও খারাপ হবে। পরে ২৫ নভেম্বর আবার তার ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে হুমকি দেন আরাফাত সানি। এ ঘটনায় নাসরিন সুনতানা বাদী হয়ে গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে প্রথম মামলাটি করেন।আরাফাত সানিকে গ্রেফতারের পরের দিন ২৩ জানুয়ারি যৌতুক আইনে দ্বিতীয় মামলাটি করেন নাসরিন সুলতানা।জেএ/জেডএ/আরআইপি
Advertisement