নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে সালমা আক্তার সুমী নামে এক গৃহবধূকে দীর্ঘ এক মাস ঘরে আটক রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে স্বামী-সতিন, দেবরসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। ছয় মাসে প্রেম করে বিয়ে করা এই গৃহবধূর মাথার চুল কেটে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে।রোববার দুপুরে উপজেলার তারাব এলাকা থেকে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি অভিযুক্ত দেবরকে আটক করে পুলিশ। নির্যাতিত গৃহবধূ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর আগে তারাব এলাকার আরব আলীর ছেলে কোরবান আলীর সঙ্গে তারাব বাজার এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের মেয়ে মায়ার বিয়ে হয়।এরপর প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ছয় মাস আগে কোরবান আলী তারাব দক্ষিণপাড়া এলাকার জলহত মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তার সুমীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে সতিন মায়া, স্বামী কোরবান আলী, দেবর শিপু, ফুফা, শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন সালমা সুমীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকায় বিচার-সালিশ হওয়ার পর কিছুদিন নির্যাতন বন্ধ থাকে। গত মাস থেকে ঘরে আটকে রেখে ফের নির্যাতন চালানো হয় এই গৃহবধূর ওপর।স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকালে গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীর হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে প্রকাশ্যে গলায় জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে কেঁচি দিয়ে ওই গৃহবধূর চুল কেটে ফেলা হয়। সেই সঙ্গে লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেয় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীর মা তাসলিমা বেগম থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নির্যাতিত গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত দেবর শিপুকে আটক করা হয়। ঘটনার পর স্বামী-সতিনসহ অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। নির্যাতিত গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতিত সালমা আক্তার সুমীসহ পরিবারের লোকজন নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মীর আব্দুল আলীম/এএম/পিআর
Advertisement